সিজিও দফতরে এলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার সকালে। —নিজস্ব চিত্র।
ইডি দফতরে পৌঁছে গেলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদককে বুধবারই সমন পাঠিয়েছিল ইডি। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার সময় অভিষেককে আসতে বলা হয়েছিল সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে। যদিও বৃহস্পতিবার সকালে তার অনেক আগেই সিজিও চত্বরকে মুড়ে ফেলা হয় কড়া নিরাপত্তার চাদরে। ১০টা ৪০ মিনিট নাগাদ নিজের বাড়ি থেকে বার হন অভিষেক। ঠিক ১১টা বেজে ৫ মিনিটে পৌঁছে যান ইডি দফতরে।
অভিষেকের পরনে ছিল সাদা রঙের শার্ট। বাড়ি থেকে বেরোনোর সময় উপস্থিত জনতাকে লক্ষ্য করে হাতও নাড়েন তিনি। এর আগে অভিষেককে ৯ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল ইডি। সূত্রের খবর, অভিষেককে বৃহস্পতিবার জেরা করা হতে পারে তাঁরই জমা দেওয়া নথি সংক্রান্ত বিষয়ে। তবে কত ঘণ্টা তাঁকে সিজিও কমপ্লেক্সে কাটাতে হবে তা সময়েই বলবে।
গত ১০ অক্টোবর কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে ইডির কাছে তাদের চাওয়া সমস্ত নথি জমা দিয়েছিলেন অভিষেক। অভিষেকের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির হিসাব ছাড়াও বিদেশ সফরের বিস্তারিত তথ্য চাওয়া হয়েছিল ইডির তরফে। চাওয়া হয়েছিল তাঁর নামে থাকা সংস্থার কিছু নথিও। জল্পনা, তৃণমূল সাংসদের জমা দেওয়া সেই সব নথির বিষয়েই আরও বিশদ জানতে চাইবেন তদন্তকারীরা। নথি সংক্রান্ত প্রশ্নের বেশ কিছু না-পাওয়া উত্তর পেতেই অভিষেককে জেরা করা হবে বৃহস্পতিবার।
অভিষেকের জেরা পর্বে ‘ইন্টারোগেশন রুম’ বা জেরা-কক্ষে থাকার কথা তদন্তকারী অফিসারদের। আর তদন্তকারী অফিসারদের প্রশ্নের উত্তরে অভিষেক যা যা বলবেন, জেরা-কক্ষে থাকা ক্যামেরায় তার সবটাই রেকর্ড হবে।
প্রসঙ্গত, ঠিক দু’মাস আগেই ইডির তলব পেয়ে সিজিও দফতরে এসেছিলেন অভিষেক। গত ১৩ সেপ্টেম্বর নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় তলব করা হয়েছিল তাঁকে। সে দিন টানা ৯ ঘণ্টা অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল ইডি। তবে তার পর থেকে আরও দু’বার তলব করা হয়েছে তৃণমূল সাংসদকে। গত ৩ অক্টোবর এবং ৯ অক্টোবর অভিষেককে সিজিও দফতরে হাজিরা দেওয়ার জন্য চিঠি দেওয়া হয় ইডির তরফে। অভিষেক অবশ্য দু’দিনই সিজিওতে যাননি। যদিও বৃহস্পতিবার অভিষেক যে ইডির দফতরে যাবেন, তার স্পষ্ট ইঙ্গিত বুধবারই মিলেছিল তৃণমূলের তরফে।
৩ অক্টোবর দিল্লিতে তৃণমূলের ১০০ দিনের কাজের টাকা আদায় সংক্রান্ত ধর্না কর্মসূচি ছিল। অভিষেক চিঠি লিখে জানিয়ে দেন, তিনি ইডির দফতরে যাবেন না। পরে ৯ অক্টোবর তাঁকে আবার ইডি তলব করলে তিনি পাল্টা কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন। হাই কোর্ট সেই আবেদনের শুনানিতে জানিয়ে দিয়েছিল, অভিষেক আগে ইডির চাওয়া নথি জমা দেবেন। সেই নথিতে সন্তুষ্ট না হলে তবেই ইডি তাঁকে ডেকে পাঠাতে পারে।
গত ১০ অক্টোবর আদালতের নির্দেশে নিজের সম্পত্তির খতিয়ান ইডিকে দেন অভিষেক। তার পর পুজো পর্ব মিটতেই আবার ইডির তলব আসে অভিষেকের কাছে। তৃণমূলের তরফেও জানিয়ে দেওয়া হয় অভিষেক সিজিওতে যাবেন।
গত ছ’মাসে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এই নিয়ে ষষ্ঠ বার তলব করা হয়েছে অভিষেককে। এর মধ্যে এক বার সিবিআই এবং পাঁচ বার ইডি। ২০ মে-র পর ১৩ জুন ডাকা হয়েছিল অভিষেককে। কিন্তু ‘নবজোয়ার যাত্রা’ এবং পঞ্চায়েত ভোটের ব্যস্ততার কারণ দেখিয়ে সে দিন তিনি যাননি। আবার এ-ও ঠিক যে, তার আগে কর্মসূচি থামিয়ে বাঁকুড়া থেকে কলকাতায় ফিরে ২০ মে হাজিরা দিয়েছিলেন তিনি।