অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
দল পরিচালনায় পূর্বসূরিদের থেকে নিজেকে আলাদা করে নিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এই প্রসঙ্গে শেষ পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে দলীয় মুখপত্রের উৎসব সংখ্যায় তিনি লিখেছেন, ‘এত দিন কেবলমাত্র ভোটের সময় নেতাকর্মীরা মানুষের কাছে পৌঁছে যেত।’ সেই সূত্রেই তিনি এ বারের পঞ্চায়েত ভোটে দলের প্রার্থী বাছাইয়ের প্রক্রিয়ার কথা উল্লেখ করে লিখেছেন, ‘ভারতের রাজনীতির ইতিহাসে এই প্রথম কোনও রাজনৈতিক দল (তৃণমূল) সাধারণ মানুষের নির্বাচিত প্রার্থীকেই ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রার্থী করেছে।’
শনিবার মহালয়ার দিন দলের মুখপত্রের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন ভার্চুয়াল ব্যবস্থায়। আর নজরুল মঞ্চে মূল অনুষ্ঠান মঞ্চে মধ্যমণি ছিলেন অভিষেক। উৎসব সংখ্যার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন সেরে মমতা সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখলেও তাতে রাজনীতির ছোঁয়া ছিল না। মুখপত্রের ওই সংখ্যায় তাঁর প্রবন্ধেও রাজনীতি নেই।
তবে প্রবন্ধ এবং উদ্বোধন মঞ্চ, দু’ক্ষেত্রেই সরাসরি রাজনীতি টেনে এনেছেন অভিষেক। দল পরিচালনা, রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা, সাফল্য এবং ভবিষ্যৎ লক্ষ্য স্পষ্ট করে অভিষেক লিখেছেন, ‘চব্বিশেই দেশ দ্বেষ মুক্ত হবে’। সেখানেই তিনি ‘ইন্ডিয়া’র প্রসঙ্গ টেনে লিখেছেন, ‘কেন্দ্রীয় এজেন্সির ভয় দেখিয়ে আমাদের রোখা অসম্ভব।’ মমতার মতোই এ দিন নজরুল মঞ্চের দলীয় অনুষ্ঠানের মঞ্চে ‘চণ্ডীস্তোত্র’ পাঠ করেন মমতার উত্তরসূরি।
পায়ের ব্যথার কারণে বাড়ি থেকেই এ দিনের কর্মসূচিতে অংশ নেন মুখ্যমন্ত্রী। কলকাতা-সহ মালদহ, মুর্শিদাবাদের মতো একাধিক জেলার পুজোর উদ্বোধন করেন ভার্চুয়াল ব্যবস্থায়। সেখানেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘যখন বিশ্ববাংলা শুরু করেছিলাম তখন ভাবতে পারিনি। আজ তা বিশ্বের স্বীকৃতি পেয়েছে। বাংলার দুর্গাপুজোকে ইউনেস্কো বিশেষ স্বীকৃতি দিয়েছে।’’ রাজ্যবাসীকে শারদ-শুভেচ্ছা জানিয়ে সেই সূত্রে তিনি আরও বলেন, ‘‘এ বারে বাংলার দুর্গোৎসব দেখতে বহু বিদেশি আসছেন। তাঁদের সকলকে আন্তরিক আপ্যায়ন করতে হবে।’’
অভিষেক অবশ্য দু’জায়গাতেই ছিলেন আক্রমণাত্মক। আগামী সপ্তাহে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের রাজ্য সফরের দিকে ইঙ্গিত করে মুখপত্রের অনুষ্ঠানে বিজেপির নাম না করে তিনি বলেন, ‘‘যাঁরা এক সময় বলতেন, বাংলায় দুর্গাপুজো হয় না, তাঁরাই আজ দুর্গাপুজোর উদ্বোধনে আসছেন! এখানেই বাংলার উৎসবের সার্থকতা।’’ আর মুখপত্রের নিবদ্ধে তিনি লিখেছেন, ‘রাজনৈতিক ভাবে বারবার পর্যুদস্ত হয়ে এরা (কেন্দ্রীয় সরকার) এজেন্সির অপব্যবহারে লিপ্ত হচ্ছে।’’ এখানেও তিনি ১০০ দিনের কাজ ও আবাস প্রকল্প নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে বঞ্চনা ও দুর্নীতির অভিযোগও তুলেছেন।