Abhishek Banerjee

অভিষেকের দিল্লি-বার্তা, পাল্টা কটাক্ষ শুভেন্দু, অধীরের

কেন্দ্রের কাছে বকেয়া আদায়ের দাবিতে এর আগে মুখ্যমন্ত্রী ধর্না দিয়েছেন। তৃণমূলের প্রতিনিধিদল কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়নমন্ত্রী গিরিরাজ সিংহের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েও পারেনি।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০২৩ ০৬:৩১
Share:

তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু আধিকারী। ফাইল চিত্র।

রাজ্যের ‘প্রাপ্য’ দাবি করে এ বারে কেন্দ্রকে চ্যালেঞ্জ ছুড়লেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্য, ‘‘দায়িত্ব নিয়ে বলছি, আবাস যোজনার যে তালিকা রাজ্যের তরফে কেন্দ্রকে পাঠানো হয়েছে, তাতে একটা দুর্নীতি যদি কেউ পায়, তা হলে তোমাদের টাকা দিতে হবে না, আমিও চাইব না।” যা শোনার পরে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর পাল্টা চ্যালেঞ্জ, ‘‘চুরি আটকেছি। আবার আটকাব। এ বার শৌচালয় আর ধান কেনায় অগ্রিম দেওয়া নিয়ে বেনিয়ম আটকাব।’’ অভিষেককে বিঁধে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরীও বলেন, ‘‘দিল্লিতে বকেয়া আদায়ের জন্য যে আন্দোলন করবেন বলে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, তা কুম্ভীরাশ্রু ছাড়া কী?’’

Advertisement

কেন্দ্রের কাছে বকেয়া আদায়ের দাবিতে এর আগে মুখ্যমন্ত্রী ধর্না দিয়েছেন। তৃণমূলের প্রতিনিধিদল কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়নমন্ত্রী গিরিরাজ সিংহের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েও পারেনি। শনিবার আলিপুরদুয়ারের সভায় অভিষেক স্পষ্ট করে দিলেন, পঞ্চায়েত ভোটের আগে আবাস যোজনা এবং একশো দিনের কাজের বকেয়া নিয়ে ‘কেন্দ্রের বঞ্চনা’ই হচ্ছে তাঁদের পাখির চোখ।

এ দিন বকেয়া টাকা আদায়ের জন্য দলের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন অভিষেক। বাংলা নববর্ষের পরদিন, অর্থাৎ ১৬ এপ্রিল থেকে দলের নেতাদের বুথে-বুথে গিয়ে একশো দিনের প্রকল্পে কাজ করে টাকা না পাওয়া এবং কাজে বঞ্চিতদের নামের তালিকা তৈরি করতে নির্দেশ দেন তিনি। তার পরে, এক মাসের মধ্যে তাঁদের দিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়নমন্ত্রীর প্রতি চিঠি লেখাতে ও সই সংগ্রহ করতে বলেন। তাঁর কথায়, “সই সংগ্রহের পরে পঞ্চাশ হাজার লোক নিয়ে, এক কোটি চিঠি নিয়ে আমরা দিল্লি যাব।” তাঁর সংযোজন, “ধরে নিলাম, তর্কের খাতিরে, কোথাও দুর্নীতি হয়েছে। কুড়ি লক্ষ লোকের মধ্যে যদি দু’হাজার লোক দুর্নীতি করেন, তাদের চিহ্নিত করে আপনি জেলে ঢোকান। ওই দু’হাজারকে শাস্তি দিয়ে বাকিদের টাকা আপনাকে ছাড়তে হবে।” তখনই আবাসের তালিকা নিয়ে কেন্দ্রকে চ্যালেঞ্জ করেন তিনি। এই প্রসঙ্গেই তিনি বলেন, ‘‘দুর্নীতিগ্রস্তদের বিজেপির মতো বুকে করে আগলে রাখি না।’’ তাঁর কথায়, ‘‘দুর্নীতিগ্রস্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক। হোক না একটা সিবিআই তদন্ত।’’

Advertisement

অভিষেককে কটাক্ষ করে পূর্ব মেদিনীপুরের ময়নার বাকচায় এক জনসভা থেকে শুভেন্দুর পাল্টা বক্তব্য, ‘‘উনি যদি চুরি না করে থাকেন, তা হলে উনি হাই কোর্টে, সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে তদন্তে বাধা দিচ্ছেন কেন? গটগট করে হেঁটে হেঁটে যাওয়া উচিত, বেরোনো উচিত।’’ তৃণমূলের সরকারকে ‘চোর’ বলে কটাক্ষ করে শুভেন্দুর সংযোজন, ‘‘বড় ইঁদুরকে খপাস করে ধরব। ওঁর অবস্থা মধু কোড়া, মণীশ সিসোদিয়ার মতো হবে।’’ অভিষেকের দিল্লি যাওয়ার প্রসঙ্গে শুভেন্দু খোঁচা দিয়ে বলেন, ‘‘দিল্লি চালায় কাশ্মীরকে ঠান্ডা করা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের পুলিশ। দিল্লি পুলিশের লাঠি ছ’ফুট লম্বা।’’

বিজেপির নেতাদের এলাকায় দেখলে ঘিরে ধরে, করজোড়ে আবাস এবং একশো দিনের টাকা মিলছে না কেন, তা মানুষকে জানতে বলেন অভিষেক। শুভেন্দু বলেন, ‘‘যদি বাপের বেটা হয়, ঘিরে দেখাক না। চ্যালেঞ্জ করলাম। আমার বাড়ি পর্যন্ত পাঠিয়েছিল। যত করবে, তত বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। এই নোংরা সংস্কৃতি পশ্চিমবাংলার রাজনীতিতে ছিল না। ভাইপো শুরু করেছে।’’

অভিষেকের বকেয়া আদায়ে দিল্লি যাওয়ার পরিকল্পনাকে বিঁধেছেন প্রদেশ সভাপতি অধীরও। তিনি বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে, মানুষ যখন তাঁদের আবাসের অধিকার, একশো দিনের কাজের অধিকার চাইছেন, তখন তাঁদের বিভ্রান্ত করতে মিথ্যাচারের নাটক করতে দিল্লিতে ধর্নায় বসবেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement