কলকাতায় রাজ্য দফতর খুলতে চলেছেন কেজরিওয়াল। — ফাইল চিত্র।
পঞ্জাব দখলের পরেই বাংলায় সংগঠন শক্তিশালী করার ভাবনা শুরু হয়েছিল অরবিন্দ কেজরীওয়ালের আম আদমি পার্টির। ভাবনা ছিল মধ্য কলকাতায় হবে রাজ্য দফতর। সেই স্বপ্ন সত্যি না হলেও দক্ষিণ কলকাতায় স্থায়ী রাজ্য দফতর খুলতে চলেছে আপ। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে রবিবারই সেই দফতরের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন বাংলার দায়িত্বপ্রাপ্ত আপের কেন্দ্রীয় নেতা সঞ্জয় বসু। আপ সূত্রে জানা গিয়েছে, রুবি মোড়ের কাছে হালতুর হসপিটাল রোডে হবে আপের রাজ্য দফতর।
আপ নেতা সঞ্জয় জানিয়েছেন, শনিবারই তিনি কলকাতায় আসবেন। রবিবার দলীয় দফতর উদ্বোধনের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘‘প্রথমে জেলায় জেলায় আমরা শক্তি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি জেলায় সংগঠন শক্তিশালী হয়েছে। এ বার একটা রাজ্য দফতর জরুরি হয়ে পড়েছিল। অনেক দিন ধরেই ভাল জায়গার খোঁজ চলছিল। শেষ পর্যন্ত রাজ্যে যাঁরা দায়িত্বে রয়েছেন তাঁরা সেটি চূড়ান্ত করেছেন।’’ আপ সূত্রে জানা গিয়েছে, এতদিন রাজ্য দফতর না থাকলেও বিভিন্ন জেলায় দলের দফতর রয়েছে। দুর্গাপুর, মেদিনীপুর, কোচবিহার শহরে স্থায়ী দফতরও হয়েছে। এ বার রাজধানী শহর কলকাতায় আপের দফতর।
শনিবার সকাল ১০টা নাগাদ এই খবর দিয়েছিল আনন্দবাজার অনলাইন। তার ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই সেই খবরের সত্যতা প্রকাশ্যে এল আপ-এর কলকাতায় দফতর খোলার পোস্টারে।
কলকাতায় দলের স্থায়ী ঠিকানা তৈরি হয়ে গেলেও এখনই বাংলার দিকে কেজরীওয়ালের নজর নেই বলেই জানিয়েছেন সঞ্জয়। তিনি বলেন, ‘‘এখন আমাদের পাখির চোখ গুজরাত বিধানসভা নির্বাচন। দলের সিদ্ধান্তই রয়েছে যে, একটি একটি করে রাজ্যের দিকে নজর দেওয়া। গুজরাতে আমরা জেতার মতো জায়গায় রয়েছি। তাই এখন অন্য দিকে নজর নয়।’’ একইসঙ্গে সঞ্জয় জানান, কলকাতায় দলীয় দফতর হয়ে গেলেও গুজরাতের ভোট মেটার আগে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী তথা আপ প্রধান অরবিন্দ কেজরীওয়াল কলকাতায় আসছেন না।
এখনই বাংলার দিকে নজর না থাকলে রাজ্য দফতর খোলার কারণ কী? সঞ্জয় বলেন, ‘‘বাংলায় বিভিন্ন ক্ষেত্রের বহু মানুষ আমাদের সঙ্গে কাজ করতে চাইছেন। কিন্তু কলকাতায় একটা স্থায়ী ঠিকানা না থাকলে সমস্যা হচ্ছিল। সেই কারণেই কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বাংলায় দফতর বানানোর ছাড়পত্র দেয়।’’ তবে কি পঞ্চায়েত নির্বাচনে আপকে ভোটের ময়দানে দেখা যাবে না? সঞ্জয় বলেন, ‘‘আমরা আগেই বলেছি যে, যেখানে সংগঠন থাকবে সেখানে লড়াই হবে। আবার শুধু সংগঠন থাকলেই হবে না। যেখানে যোগ্য প্রার্থী পাওয়া যাবে সেখানেই আমরা লড়ব।’’ আর লোকসভা নির্বাচনে? সঞ্জয়ের জবাব, ‘‘লোকসভা নির্বাচনের আগে অনেক সময় রয়েছে। তার আগে গুজরাতের নির্বাচন। সেখানে সাফল্য মেলার পরে লোকসভা নির্বাচনের পরিকল্পনা হবে।’’
এখনও উল্লেখযোগ্য সংগঠন তৈরি করতে না পারলেও বাংলা নিয়ে গত কয়েক মাস ধরেই তৎপর আপ নেতৃত্ব। পঞ্জাব জয়ের পরেই বিভিন্ন জেলার জন্য আলাদা আলাদা ফোন নম্বর তৈরি হয়। সেখানে আসা ‘মিস্ড কল’ দেখে যোগাযোগ করা হয় আপে যোগদানে আগ্রহীদের সঙ্গে। কলকাতা-সহ রাজ্যে বেশ কয়েকটি কর্মসূচি নিলেও সে ভাবে সাফল্য মেলেনি। তবে এ বার রাজ্য দফতর হয়ে গেলে সে কাজেও গতি আসবে বলেই দাবি করছেন আপ নেতা সঞ্জয়।