Snehasis Chakraborty

বরখাস্তে স্থগিতাদেশ, দুর্নীতির তদন্তে প্রশ্ন

নিগমের খবর, টিকিট বিক্রির বরাত পাওয়া সংস্থার বিরুদ্ধে ৭ কোটি টাকার বেশি দুর্নীতির ‘প্রমাণ’ পেয়ে দুর্গাপুরের কোকওভেন থানায় ২৩ নভেম্বর অভিযোগ দায়ের করে এসবিএসটিসি।

Advertisement

ফিরোজ ইসলাম 

কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৫:২৬
Share:

রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী। —ফাইল চিত্র।

দুর্নীতির অভিযোগে টিকিট বিক্রির বরাতপ্রাপ্ত সংস্থাকে বরখাস্ত করেছিল দক্ষিণবঙ্গ পরিবহণ নিগম (এসবিএসটিসি)। সেই বরখাস্তের নির্দেশের বিরুদ্ধে তড়িঘড়ি কলকাতা হাই কোর্টে গিয়ে স্থগিতাদেশ পেয়েছে সংস্থাটি। তার ফলে আগের অবস্থাতেই পুনর্বহাল করতে হয়েছে তাদের। এই ঘটনায় যারপরনাই বিড়ম্বনায় পড়েছেন নিগম কর্তৃপক্ষ। কারণ, একে দুর্নীতির অভিযোগ। উপরন্তু, কোর্টে মামলাতেও স্থগিতাদেশ ঠেকাতে পারেননি নিগমের কৌঁসুলিরা। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এই টিকিট দুর্নীতিতে নিগমের একাংশ জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে। এ বার প্রশ্ন উঠছে, আদালতেও কি ওই সংস্থার বিরুদ্ধে নিগম পর্যাপ্ত সক্রিয় হয়েছিল? এই ঘটনায় রীতিমতো হতাশা এবং ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন খোদ পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তীও।

Advertisement

এ দিন পরিবহণমন্ত্রী বলেন, ‘‘দুর্নীতিতে অভিযুক্ত সংস্থাকে টিকিট বিক্রি প্রক্রিয়ার বাইরে রেখেই সত্যাসত্য যাচাই হওয়া জরুরি। তাই তাদের বরখাস্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। যে টিকিট বিক্রি নিয়ে অভিযোগ, সেই কাজে ওই সংস্থার এক দিনের মধ্যে ফের বহাল হওয়া দুর্ভাগ্যজনক। এমন পরিস্থিতি স্বচ্ছ তদন্তকে ব্যাহত করে।’’ এসবিএসটিসি-র চেয়ারম্যান সুভাষ মণ্ডল বলেন, ‘‘ওই স্থগিতাদেশ খুবই আশ্চর্যের। বিষয়টি নিয়ে আমরা বিড়ম্বনায় আছি। নিগমের আইনজীবী জানিয়েছেন যে, আগামী ১৫ ডিসেম্বর ওই মামলার ফের শুনানি আছে।’’

নিগমের খবর, টিকিট বিক্রির বরাত পাওয়া সংস্থার বিরুদ্ধে ৭ কোটি টাকার বেশি দুর্নীতির ‘প্রমাণ’ পেয়ে দুর্গাপুরের কোকওভেন থানায় ২৩ নভেম্বর অভিযোগ দায়ের করে এসবিএসটিসি। ৬ ডিসেম্বর পরিবহণ দফতরের নির্দেশে ওই সংস্থাকে টিকিট বিক্রির দায়িত্ব থেকে বরখাস্ত করা হয়। ৭ ডিসেম্বর তারা বরখাস্তের নির্দেশের বিরুদ্ধে কোর্টে যায় ও বরখাস্তের নির্দেশে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দেয় কোর্ট। এর পরেই ফের টিকিট বিক্রিতে বহাল হয়েছে। নিগমের একাংশের অভিযোগ, সফটওয়্যারে কারসাজি করে এই দুর্নীতি হয়। তাতে নিগমের তিন অফিসারও যুক্ত। যদিও অন্য একটি সূত্রের দাবি, দুর্নীতির জোরালো প্রমাণ থাকলে কোর্ট ওই সংস্থাকে বরখাস্তের নির্দেশের উপরে স্থগিতাদেশ দিত কি না, তা-ও ভেবে দেখা প্রয়োজন।

Advertisement

এসবিএসটিসি সূত্রের খবর, ২০০৭ সালে দরপত্রের মাধ্যমে ওই সংস্থা অনলাইন টিকিটের প্রধান এজেন্টের দায়িত্ব পায়। ২০২০ সাল থেকে সংস্থাটি বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, মুর্শিদাবাদ, কলকাতা-সহ নানা জেলায় টিকিট বিক্রির দায়িত্ব পায়। নিয়ম অনুযায়ী, ওই সংস্থা যত টাকা অগ্রিম হিসেবে নিগমকে জমা দেবে তার সমমূল্যের টিকিট তারা কম্পিউটার সফটওয়্যারের মাধ্যমে বিভিন্ন কাউন্টার থেকে বিক্রির অনুমতি পাবে। কিন্তু ২০২১-এ নিগম হিসাব পরীক্ষা করতে গিয়ে দেখে, অনলাইন টিকিট বুকিংয়ের ক্ষেত্রে ৭ কোটি ৫৬ লক্ষ টাকার গরমিল। ওই সূত্রের দাবি, অগ্রিম টাকা জমা না দিয়েই সফটওয়্যার ব্যবহার করে টিকিট বিক্রি করেছে সংস্থাটি। কার নির্দেশে ওই সফটওয়্যার থেকে টিকিট বেরিয়েছিল সেই প্রশ্ন ওঠে। দেখা যায়, সফটওয়্যারে কিছু ত্রুটির ফলেই এই ঘটনা ঘটেছে। সন্দেহ করা
হচ্ছে, ইচ্ছাকৃত ভাবেই ওই ত্রুটি তৈরি করা হয়েছিল এবং সেই সূত্রেই নিগমের তিন অফিসারের নাম এই কাণ্ডে জড়িয়েছে বলেও এসবিএসটিসি-র খবর।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement