কলকাতা হাই কোর্ট। —ফাইল চিত্র।
নিয়ম বহির্ভূত ভাবে তাঁকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে, এই অভিযোগে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা করেছিলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার মহেশতলার গণিপুর অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা সুরঞ্জনা মণ্ডল। ওই মামলায় বিচারপতি অমৃতা সিংহ অ্যাপেলেট কমিটি গঠন করে শিক্ষিকার অভিযোগ খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে। চলতি মাসের প্রথমে ওই কমিটি শিক্ষিকাকে বরখাস্ত করার নির্দেশ খারিজ করেছে। চাকরিতে পুনর্বহাল করে তাঁর বকেয়া বেতনও মিটিয়ে দিতে বলেছে। তবে পর্ষদের চেয়ারম্যান অজিত নায়েকের প্রতিক্রিয়া, “এখনও কমিটির নির্দেশ হাতে পাইনি।”
তৃতীয় লিঙ্গের প্রতিনিধি সুরঞ্জনার বক্তব্য, “বকেয়া মহার্ঘ ভাতা মিটিয়ে দেওয়া ও শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির বিরুদ্ধে নাগরিক আন্দোলনকে সমর্থন করেছিলাম। সেই কারণে মিথ্যা অভিযোগে আমাকে গত বছরের জুলাইয়ে সাসপেন্ড করা হয়। ওই বছরের ডিসেম্বরে বরখাস্তও করা হয়।” গত ২৭ এবং ৩০ সেপ্টেম্বর শিক্ষিকার আবেদনের শুনানি হয়। পয়লা অক্টোবর তাঁকে পুনর্বহালের আদেশ দেয় অ্যাপেলেট কমিটি।
কমিটির নির্দেশে লেখা হয়েছে, ওই শিক্ষিকাকে কারণ দর্শানোর নোটিসের সঙ্গে তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া অভিযোগপত্র এবং ইনস্পেকশন রিপোর্ট পাঠানো হয়নি। শৃঙ্খলাভঙ্গের জন্য পদক্ষেপ করার নিয়ম এ ক্ষেত্রে মানা হয়নি। শুনানির সময়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তরফে জমা দেওয়া তদন্ত রিপোর্টে সাক্ষীদের বয়ান বা সই, কিছুই ছিল না। ওই শিক্ষিকাকে তাঁর সাক্ষীদের হাজির করানোর সুযোগও দেওয়া হয়নি। ‘চরম শাস্তি’ সংক্রান্ত যে চিঠি শিক্ষিকাকে পাঠানো হয়েছিল, তার সঙ্গেও তদন্ত রিপোর্ট দেওয়া হয়নি। ওয়েস্ট বেঙ্গল প্রাইমারি এডুকেশন (কনডাক্ট অব সার্ভিস অব টিচার্স অব প্রাইমারি স্কুলস) রুল ২০০১-এ কারও বিরুদ্ধে তদন্ত করা বা শাস্তি দেওয়ার পদ্ধতিও মানা হয়নি। বরখাস্তের নির্দেশও দেওয়া হয়েছিল উপযুক্ত তদন্ত ছাড়া। সেই কারণে ওই শিক্ষিকার সাসপেনশন ও বরখাস্তের নির্দেশ খারিজ করা হয়েছে। তবে অ্যাপেলেট কমিটি বলেছে, ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ রয়েছে তার ভিত্তিতে বিভাগীয় তদন্ত করা যেতেই পারে। তবে তা হতে হবে রুল মেনে।