প্রতীকী ছবি।
নেশা আফিমে তো হয়ই। আফিমের খোলা বা পোস্তদানার খোলা ভেজানো জলেও নাকি হয়!
দুবরাজপুর, খয়রাশোল এলাকায় এবং ইলামবাজারের কাছে অজয় নদের চরে লুকিয়ে আফিমের চাষ হচ্ছে বলে খবর এসেছে কলকাতার শুল্ক অফিসারদের কাছে। সেখানে আফিম যত না তৈরি হচ্ছে, তার থেকে বেশি পাওয়া যাচ্ছে আফিমের খোলা বা পোস্তদানার খোলা। গরম জলে সেই খোলা ফেলে চিরতার মতো কিছু ক্ষণ ভিজিয়ে রেখে সেই জল খেলে তুরীয় নেশা হয়। মূলত লরিচালকদের মধ্যে এই নেশা খুব জনপ্রিয়। শুল্ক দফতরের খবর, এক রাজ্য থেকে মাইলের পর মাইল লরি চালিয়ে অন্য রাজ্যে মালপত্র নিয়ে যাওয়ার সময় তাঁরা পোস্তদানার খোলা ভেজানো জল খেয়ে নেশা করেন। সকালেই নেশা করে যাত্রা শুরু হয় বলে জানান অফিসারেরা।
শুক্রবার সকালে পানাগড়ের কাছে দার্জিলিং মোড়ে এ ভাবে নেশা করতে গিয়েই ধরা পড়েছেন এক লরিচালক। তবে নেশা করার থেকেও তাঁর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ, তিনি লরিতে প্রায় ৩০ লক্ষ টাকার পোস্ত খোলা নিয়ে যাচ্ছিলেন। তা আসছিল ওই দুবরাজপুর এলাকা থেকে। তাঁর লরির ভিতরে ৩০০ ব্যাগ চালের বস্তার ফাঁকে লুকোনো অবস্থায় ৩০টি বস্তায় ৭৫০ কিলোগ্রাম পোস্ত খোলার গুঁড়ো পাওয়া গিয়েছে।
শুল্ক দফতরের প্রিভেনটিভ শাখার কমিশনার পার্থ রায়চৌধুরী জানান, এই পোস্ত খোলা পশ্চিমবঙ্গ থেকে মূলত পঞ্জাব-হরিয়ানায় পাচার হচ্ছে। একসঙ্গে বেশি পাচারের জন্য তা গুঁড়ো করা হচ্ছে ইসলামপুরে। পার্থবাবুর কথায়, ‘‘ইসলামপুরে পোস্ত খোলা গুঁড়ো করার জন্য অনেক গুলো ইউনিট তৈরি হয়েছে। পোস্ত খোলা গুঁড়ো করে তা ড্রামের মধ্যে মজুত করা হচ্ছে। তার পরে অন্য সামগ্রীতে লুকিয়ে পাচার করা হচ্ছে।’’ পানাগড়ে ধৃত লরিচালকের পোস্ত খোলা নিয়ে সোজা পঞ্জাবে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু খবর আসে, লরি ঘুরিয়ে তিনি দার্জিলিং মোড়ে আসছেন। ওখানে এক মহিলা পোস্ত খোলা বিক্রি করেন। নিজের লরিতে যে-পোস্ত খোলা রয়েছে, তা ছোঁয়ার অধিকার তাঁর নেই। বাইরে থেকে কিনে খেয়ে নেশা করতে হবে। খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার রাত ৯টা থেকে দার্জিলিং মোড়ে ওত পেতে ছিলেন শুল্ক অফিসারেরা। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টায় সেই লরিচালক পোস্ত খোলা কিনতে আসতেই গ্রেফতার করা হয় তাঁকে।