হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কৃষ্ণা সাউ। —নিজস্ব চিত্র।
তোলা চাওয়া হয়েছিল। জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল পরিমাণটাও। কিন্তু, তোলাবাজদের দাবি মতো ১০ হাজার টাকা না দেওয়ায় পুলিশ বুথের প্রায় সামনেই এক হকারকে রাস্তায় ফেলে বেধড়ক পেটানোর অভিযোগ উঠল ৬ যুবকের বিরুদ্ধে। আর গোটা ঘটনা নাকি নীরব দর্শক হয়ে দেখল পুলিশ!
ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার দুপুরে হাওড়া স্টেশনের কাছে গোলাবাড়ি পুলিশ বুথের সামনে। হকারদের একাংশের দাবি, অভিযুক্তেরা হাওড়া স্টেশন চত্বরে শাসকদলের তোলাবাজ বলেই পরিচিত। এই ঘটনায় গুরুতর জখম হয়েছেন কৃষ্ণ সাউ নামে ওই হকার। তিনি আপাতত হাওড়া জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। কৃষ্ণকে বাঁচাতে গিয়ে জখম হয়েছেন আরও ৫ হকার।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, এ দিন দুপুরে কৃষ্ণের কাছে এসে হাজির হয় অভিযুক্ত ওই ৬ যুবক। তাঁর কাছে ১০ হাজার টাকা চাওয়া হয়। কৃষ্ণ তা দিতে রাজি হননি। এ নিয়ে তোলাবাজদের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন। বচসা চলাকালীনই আচমকা কৃষ্ণতে পেটাতে শুরু করে ওরা। টানতে টানতে তাঁকে হাওড়া স্টেশনের কাছে গোলাবাড়ি পুলিশ বুথের সামনে নিয়ে গিয়ে রাস্তায় ফেলে লাঠিপেটা করে অভিযুক্তেরা। সেখান থেকে হাওড়া ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে শাসকদলের পার্টিঅফিসের ভিতরে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। কৃষ্ণের অভিযোগ, তাঁর গলায় একটি সোনার হার ছিল। মারধর চলাকালীন পার্টি অফিসের ভিতরে সেটিও ছিনিয়ে নেয় অভিযুক্তেরা।
এই ঘটনা পুলিশের চোখের সামনে ঘটলেও তোলাবাজরা শাসকদলের সঙ্গে যুক্ত হওয়ায় পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ করেছেন কৃষ্ণের বাবা বিকাশ সাউ।
হাওড়া স্টেশন এবং সংলগ্ন বাসস্ট্যান্ড ও সাবওয়ে চত্বরে হকারদের রমরমা। টাকার বিনিময়ে শাসকদলের কর্মীদের একাংশ নিয়ম বহির্ভূত ভাবে সেখানে হকারদের বসতে দেন। এ অভিযোগ দীর্ঘ দিনের। শুধু টাকা নিয়ে হকার বসানোই নয়, নিয়ম করে হকারদের কাছ থেকে তাঁরা তোলা আদায়ও করে থাকেন। প্রচুর টাকা তোলা আদায় নিয়ে সম্প্রতি তোলাবাজদের সঙ্গে হকারদের ঝামেলাও চলছিল। তার মধ্যেই এ দিনের ঘটনা ঘটেছে। যদিও শাসক দলের তরফে সব অভিযোগই উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
উত্তর হাওড়ার সভাপতি গৌতম চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘‘ঘটনাটি শুনেছি। দলীয় স্তরে তদন্ত করা হবে। দলের কেউ যুক্ত থাকলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
আরও পড়ুন: নদীতে বাস, রাজস্থানে মৃত অন্তত ৩২, চালকের বয়স ১৬ বছর