বিভ্রান্তি কাটাতে সক্রিয় হয়েছেন রাজ্য পুলিশের কর্তারা। ফাইল চিত্র।
স্কুলশিক্ষকদের বদলি নিয়ে দীর্ঘ কালের সমস্যার সুরাহা করতে ‘উৎসশ্রী’ পোর্টাল চালু করেও শিক্ষক-ঘাটতির জেরে সাময়িক ভাবে তা বন্ধ রাখতে হয়েছে। এ বার রাজ্য পুলিশের কর্মীদের বদলি নিয়ে সমস্যা ও বিভ্রান্তির মোকাবিলায় সম্প্রতি বদলি নীতি চালু করে তা রূপায়ণে একটি ‘গাইডলাইন’ বা নির্দেশিকা জারি করা হল। বিভিন্ন জেলায় পুলিশকর্মীদের বদলির বহু আবেদন পড়ে আছে এবং কাকে আগে বদলি করা হবে, কাকে পরে— বিভ্রান্তি সেখানেই। সেই বিভ্রান্তি কাটাতে সক্রিয় হয়েছেন রাজ্য পুলিশের কর্তারা। নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, বদলি হবে ‘আগে এলে আগে পাবে’র ভিত্তিতে।
রাজ্য পুলিশ সূত্রের খবর, বদলির জট কাটাতে বদলি নীতি চালু করেছে নবান্ন। তারই অঙ্গ হিসেবে এই নির্দেশিকা। সেটি বিভিন্ন জেলা, পুলিশ কমিশনারেট-সহ পুলিশের সব ইউনিটে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। ওই বদলি নীতি অনুযায়ী পুলিশকর্মীদের নিজেদের ইউনিটের রিজ়ার্ভ অফিসের কাছে আগে আবেদন করতে হবে। তার আগে অনুমতি নিতে হবে জেলার এসপি বা এএসপি-র। ১৫ দিনের মধ্যে রেঞ্জ ডিআইজি, আইজি অথবা এডিজি-র কাছে পাঠাতে হবে সেই অনুমতিপত্র। রিজ়ার্ভ অফিস উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের কাছে সেই আবেদন নির্দিষ্ট সময়ে না-পাঠালে সংশ্লিষ্ট অফিসারের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বদলি নীতির নির্দেশিকায় আরও বলা হয়েছে, বিভিন্ন রেঞ্জ বা জ়োনের মধ্যে বদলির আবদেন থাকলে সেই সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন ডিআইজি বা আইজি। জ়োনের বাইরে বদলির আবেদন অর্থাৎ ইন্টার-জ়োনাল বদলির ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ ডিরেক্টরেট সিদ্ধান্ত নেবে। একই সঙ্গে নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, আবেদনের তারিখ থেকে পাঁচ সপ্তাহের মধ্যে বদলির নিষ্পত্তি করতে হবে। রাজ্য পুলিশের এক কর্তা জানান, আবেদনের ‘ডেটাবেস’ বা তথ্যভান্ডার তৈরি করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই ডেটাবেস মেনেই ‘আগে এলে আগে পাবে’র ভিত্তিতে বদলির সুযোগ মিলবে আবেদনকারী পুলিশকর্মীদের।
রাজ্য পুলিশ সূত্রের খবর, ঠিক হয়েছে, বদলির আবেদনের ভিত্তিতে প্রতি বছর মার্চ-এপ্রিলে বদলি করা হবে। সেই বদলি নিয়ে যদি কোনও জটিলতা দেখা যায়, কোনও কারণে কেউ যদি নতুন জায়গায় যোগ দিতে না-পারেন, সে-ক্ষেত্রে প্রতি বছর দু’বার সেই সব সমস্যার নিষ্পত্তির ব্যবস্থা হবে। এক বার জুলাই-অগস্টে, দ্বিতীয় বার নভেম্বর-ডিসেম্বরে।
বদলি নীতিতে বলা হয়েছে, রাজ্য পুলিশের কোনও সাব-ইনস্পেক্টরকে তাঁর বাড়ি যে-মহকুমায়, সেখানে বদলি করা যাবে না। তবে ১৫ বছর চাকরি হয়ে গিয়েছে, এমন কর্মীকে তাঁর জেলায় পাঠানো যাবে বলে নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে।