—প্রতীকী চিত্র।
স্নায়ুর একটি দুরারোগ্য অসুখ। আর সেটি চিহ্নিত হওয়ার অর্থ, যেন মৃত্যু পরোয়ানা বহন করে দিন গোনা। সেই ‘মোটর নিউরন ডিজ়িজ়’ (এমএনডি) নিয়েই এ বার গবেষণা শুরু করতে চলেছেন বঙ্গের কয়েক জন চিকিৎসক ও গবেষক। তাতে আর্থিক অনুদান দিচ্ছে রাজ্যের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি দফতর।
এই গবেষণা শুরুর নেপথ্যে রয়েছেন ওই চিকিৎসকদের অত্যন্ত প্রিয়জন তথা পেন ম্যানেজমেন্টের চিকিৎসক, প্রয়াত সুব্রত গোস্বামী। আড়াই বছরের কিছু বেশি সময় যিনি ভুগেছেন মোটর নিউরন ডিজ়িজ়ে। সুব্রতের অতি ঘনিষ্ঠ অস্থি চিকিৎসক তথা এই গবেষণার মুখ্য উদ্যোক্তা শান্তিরঞ্জন দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘এমএনডি এমন একটি রোগ, যা ধরা পড়া মানেই কার্যত মৃত্যুর দিন গোনা। চোখের সামনে সুব্রতকে এ ভাবে ভুগতে দেখে চিন্তা করি, এই রোগ নিয়ে ব্যাপক ভাবে গবেষণা হওয়া প্রয়োজন।’’ এর পরেই বিভিন্ন চিকিৎসক ও গবেষকের কাছে আবেদন করেন শান্তিরঞ্জন। ‘ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব কেমিক্যাল বায়োলজি’ (আইআইসিবি)-র কাছেও আবেদন জানান তাদের পরিকাঠামো ব্যবহার করার জন্য।
শান্তিরঞ্জন জানাচ্ছেন, বিরল এই রোগের মূল কারণ জিনের মিউটেশন। ১০ শতাংশ ক্ষেত্রে রোগটি বংশগত হলেও ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রে যে কারও হতে পারে। বিদেশে এমএনডি-র ওষুধ থাকলেও তার কার্যকারিতা আজও প্রমাণিত নয়। রোগ চিহ্নিত করে নিশ্চিত হতে জিনের সিকোয়েন্স করতে হয়। যা ভারতে শুধু বেঙ্গালুরু ও হায়দরাবাদে হয়।
আইআইসিবি-র তরফে গবেষণার প্রিন্সিপাল ইনভেস্টিগেটর হলেন কৃষ্ণানন্দ চট্টোপাধ্যায়। এ ছাড়া আছেন ওই প্রতিষ্ঠানের পার্থ চক্রবর্তী ও সিদ্দিক সরকার। অন্য দিকে, শান্তিরঞ্জনের পাশাপাশি গবেষণা চালাবেন স্নায়ুরোগ চিকিৎসক বিমানকান্তি রায়, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যানোটেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক রাজীব দে ও মহুয়া ঘোষচৌধুরী। রাজ্যের তরফে এই গবেষণার জন্য প্রায় ৭৬ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।