(বাঁদিক থেকে) সৌভিক দাসবক্সী, প্রণয় কার্য্যী, দেবাঞ্জন দে। —ছবি: সংগৃহীত।
বুধবার ভোররাতে শেষ হয়েছে সিপিএমের ছাত্র সংগঠন এসএফআইয়ের রাজ্য সম্মেলন। মালদহে অনুষ্ঠিত সেই রাজ্য সম্মেলনের শেষে ছাত্র সংগঠনের দায়িত্বে তিন নতুন মুখকে সামনে আনল সিপিএম। গত বছর জুলাই মাসেই আনন্দবাজার অনলাইনে লেখা হয়েছিল, ছাত্র সংগঠনে নতুন মুখ আনার কথা ভাবছে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট। এ বছর জানুয়ারির শেষে তার অন্যথা হয়নি।
নতুন রাজ্য সম্পাদকের দায়িত্ব পেয়েছেন কলকাতার নেতা দেবাঞ্জন দে। সভাপতি হয়েছেন কোচবিহারের নেতা প্রণয় কার্য্যী। সাম্প্রতিক সময়ে উত্তরবঙ্গের জেলা থেকে কেউ রাজ্য সম্পাদক বা সভাপতি হননি। মনে করা হচ্ছে, উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের ‘সেতুবন্ধন’ করতেই দেবাঞ্জন ও প্রণয়কে দায়িত্ব দিলেন সুজন চক্রবর্তীরা। উত্তরবঙ্গের ভূমিপুত্র এর আগেও সভাপতি হয়েছেন। তবে তিনি কলকাতায় ছাত্র রাজনীতি করেই সেই দায়িত্ব পেয়েছিলেন। এসএফআইয়ের রাজ্য কমিটির মুখপত্রের সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বীরভূমের নেতা সৌভিক দাসবক্সীকে।
নতুন রাজ্য নেতৃত্ব নির্বাচন নিয়ে সিপিএমের ছাত্র সংগঠনে ‘বিতর্ক’ আছে বলেও খবর। জানা গিয়েছে, একটি অংশ চেয়েছিল পূর্ব বর্ধমানের ছাত্রনেতা অনির্বাণ রায়চৌধুরীকে সম্পাদক বা সভাপতি করা হোক। অনির্বাণ আন্দোলন করতে গিয়ে বেশ কিছু দিন জেল খেটেছিলেন। জেলে থেকেই জেলা সম্পাদকের দায়িত্ব পেয়েছিলেন তিনি। দলের একটি অংশ চেয়েছিল ‘আন্দোলনের মুখ’ অনির্বাণকে সামনে আনা হোক। তবে একাধিক সূত্রের বক্তব্য, বিদায়ী নেতৃত্বের বড় অংশ অনির্বাণকে চাননি। তাই তাঁকে বাদ পড়তে হয়েছে।
বিদায়ী রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য এবং সভাপতি প্রতীক উর রহমান দলের রাজ্য কমিটির সদস্য। তাঁদের এ বার পৃথক কাজে ব্যবহার করবে সিপিএম। দলের একাংশের অনুমান, লোকসভা ভোটে তাঁদের প্রার্থীও করা হতে পারে। আবার এ-ও গুঞ্জন রয়েছে যে, এর পরে এসএফআইয়ের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পেতে পারেন সৃজন। প্রতীক উরকে মূলত দক্ষিণ ২৪ পরগনার সংগঠনে ব্যবহার করার পরিকল্পনা রয়েছে সিপিএমের।
প্রাথমিক পরিকল্পনা ছিল বুধবার সকালে কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া হবে। কিন্তু গভীর রাত থেকে ভোরের মধ্যেই তা সম্পন্ন হয়ে যায়। বুধবার দুপুরে মালদহ শহরে প্রকাশ্য সমাবেশ। সেখানে ভাষণ দেবেন সুজন চক্রবর্তী, মহম্মদ সেলিমরা। সুজন দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর তরফে ছাত্রফ্রন্টের দায়িত্বে। গত কয়েক দিন তিনি মালদহেই রয়েছেন। মঙ্গলবার ইংরেজ বাজারে নেতাজির মূর্তিতে মালা দেওয়ার একটি ‘অরাজনৈতিক’ অনুষ্ঠানে তৃণমূলের কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরীর সঙ্গে সুজনের এক মঞ্চে উপস্থিতি নিয়ে দলের মধ্যে চাপা বিতর্কও রয়েছে। বুধবার সকালে বন্দে ভারত এক্সপ্রেসে মালদহের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন রাজ্য সম্পাদক সেলিম।