খাইখরচ বাড়ানোর দাবিতে অনশন বন্দিদের

আদালতে হাজিরার জন্য যে-সব বন্দিকে দূরে যেতে হয়, তাঁদের ক্ষেত্রে বরাদ্দ ২৬.৫৩ টাকা। পরে দমদম জেলে তা বাড়িয়ে ৫০ টাকা করা হয়।

Advertisement

প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০১৯ ০৩:২৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

যাতায়াত-হাজিরা মিলিয়ে সময় লাগে ১৫-২০ ঘণ্টা। অথচ তার জন্য বরাদ্দ মাত্র ৫০ টাকা। তা বাড়ানোর দাবিতে আন্দোলন দানা বাঁধছে দমদম সেন্ট্রাল জেলে। সেখানে সোমবার থেকে অনশন করেছেন রঞ্জন মুন্ডা এবং গোর্খা সিংহ সর্দার। বৃহস্পতিবার সেই আন্দোলনে যোগ দেন বিমল মান্ডি।

Advertisement

আদালতে হাজিরার জন্য যে-সব বন্দিকে দূরে যেতে হয়, তাঁদের ক্ষেত্রে বরাদ্দ ২৬.৫৩ টাকা। পরে দমদম জেলে তা বাড়িয়ে ৫০ টাকা করা হয়। তাতে দু’বার চা-বিস্কুট, ছোট একটি টিফিন ও মধ্যাহ্নভোজ সারেন বন্দিরা। আদালত থেকে স্বীকৃত ‘ডিভিশন-ওয়ান’ বন্দিরা (রাজনৈতিক বন্দি) দ্বিগুণ অর্থ পান। অর্থাৎ ১০০ টাকা। ভোরে বেরিয়ে যে-সব বন্দির জেলে ফিরতে বেশি রাত হয়ে যায়, শুধু তাঁদের জন্য ১০০ টাকা বরাদ্দ হয়। আদালতে হাজিরা দিতে যাওয়ার সময় খাওয়ার খরচ বাবদ কোন বন্দি কত টাকা পাবেন, তা স্থির করে কারা দফতরের স্থানীয় প্রশাসন। সেই ভাবেই দমদম সেন্ট্রাল জেলে থাকা বন্দিদের বরাদ্দ স্থির হয়। যে-সব পুলিশকর্মী জেল থেকে বন্দিদের আদালতে নিয়ে যান, তাঁদের হাতেই খাওয়ার খরচের টাকা দিয়ে থাকেন জেল-কর্তৃপক্ষ। ওই পুলিশকর্মীরাই বন্দিদের জন্য প্রয়োজন অনুযায়ী খাওয়ার ব্যবস্থা করেন।

অভিযোগ, কয়েক বছর ধরে আদালতে হাজিরার সময় যে-অর্থ বরাদ্দ ছিল, তা আচমকাই কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। পুরনো হারেই টাকা দেওয়ার দাবিতে অনশন করছেন রঞ্জন ও গোর্খা। তাঁরা শিলদা-কাণ্ডে অভিযুক্ত। তাঁদের দাবি, ৫০ টাকায় সারা দিনের খাওয়ার খরচ মেটানো যায় না। তাই ১০০ টাকাই দিতে হবে। অন্য বন্দি বিমলের অভিযোগ, আদালতে হাজিরার দিন তাঁকে ৩০ টাকা দেওয়া হয়। তাতে কিছুই হয় না।

Advertisement

কয়েক দিন আগে একই দাবিতে অনশন করেছিলেন মাওবাদী নেত্রী ঠাকুরমণি মুর্মু ওরফে তারা। বরাদ্দের পরিমাণ বাড়ানোর আশ্বাস পেয়ে অনশন প্রত্যাহার করেন তিনি।

কারা দফতরের বক্তব্য, বন্দিরা দূরে হাজিরা দিতে গেলে সকালেই তাঁদের বিশেষ ভাবে খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। কারণ, খুব সকালে জেলে রান্না হয় না। পাশাপাশি, কারা দফতরের নিয়ম অনুসারে দূরে গেলে বন্দিদের জন্য কিছু টাকা বরাদ্দ করা হয়। তবে প্রশাসনের একাংশের মতে, কোনও বন্দি দূরে গেলে শুধু জেল থেকে তাঁকে খাইয়ে পাঠালে সকলের পক্ষে সারা দিন সেই অবস্থায় থাকা সম্ভব হয় না। ফলে কখনও কখনও এটা সমস্যা তৈরি করে। কারা দফতরের এক কর্তার কথায়, ‘‘আদালতে হাজিরা দেওয়ার সময় খাওয়ার জন্য কোন বন্দি কত পাবেন, সেটা দফতরের স্থানীয় প্রশাসনই স্থির করে।’’ অনশনকারী এবং তাঁদের ঘনিষ্ঠদের দাবি, ‘‘এখন বাজার দর যা, তাতে ৫০ টাকায় খাওয়া হয় না।’’

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement