পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢোকার আগে লাইনে দাড়িয়ে পরীক্ষার্থীরা।—ছবি পিটিআই।
জেইই-মেন এবং নিট-ইউজি পরীক্ষা নিয়ে কেন্দ্রবিরোধী সুর আরও চড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মমতার অভিযোগ, এ রাজ্যে ৭৫ শতাংশ এবং অন্য রাজ্যগুলি মিলিয়ে ৫০ শতাংশ ছাত্রছাত্রী পরীক্ষাই দিতে পারেননি। তাঁর আর্জি, বঞ্চিত ছাত্রছাত্রীদের বিষয়টি এ বার বিবেচনা করুক কেন্দ্র।
বুধবার মমতা বলেন, “আমাদের রাজ্যে গতকাল ৪৬৫২ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১১৬৭ পড়ুয়া পরীক্ষা দিতে পেরেছে। তার মানে মাত্র ২৫ শতাংশ পরীক্ষা দিয়েছে। যে ভাবে কেন্দ্র বলেছিল, সে ভাবে ব্যবস্থা করে রেখেছিলাম। রাজ্যে ৭৫ শতাংশ পরীক্ষার্থী তো বঞ্চিত হল। অতিমারির পরিস্থিতিতে বাইরের রাজ্যে ৫০ শতাংশ ছাত্রছাত্রী পরীক্ষায় বসতেই পারেনি। আবার কেন্দ্রকে অনুরোধ করব, পর্যালোচনা করে দেখা উচিত, ক’জন পরীক্ষা দিতে পেরেছে। যারা পারেনি, তাদের কথা ভাবা উচিত।”
করোনা আবহে এমন পরীক্ষার সূচি নিয়ে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছিল আগেই। পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়ার দাবিতে বিরোধী দলগুলি এবং বিরোধী রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা নিজেদের মধ্যে ভিডিয়ো বৈঠক করেছিলেন। সম্মিলিত ভাবে সুপ্রিম কোর্টে পরীক্ষা পিছনোর আর্জিও জানান বিরোধীরা। কিন্তু নির্ধারিত সূচি মেনেই পরীক্ষা শুরু হয়েছে। মমতাও বলেন, “পরীক্ষা কয়েকটা দিন পিছিয়ে দিলে কী মহাভারত অশুদ্ধ হত ? এত জেদ, অহং ভাব, এত ইগো কেন? ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ নষ্ট করার অধিকারটা কে দিল?”
ঘটনাচক্রে, টুইট করে আগেই মমতা-সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন বিজেপি’র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করতে গিয়ে রাজ্যের লক্ষাধিক ছাত্রছাত্রীর ভবিষ্যৎ অন্ধকারে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন তিনি। পরীক্ষা দেওয়া থেকে কোনও ছাত্রছাত্রী যাতে বঞ্চিত না-হন, তার জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা করার দাবিও তুলেছিলেন তিনি। বস্তুত, এই ধরনের পরীক্ষা কেন্দ্র নিলেও রাজ্যে তা আয়োজনের দায়িত্ব থাকে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের উপরই। ফলে পরীক্ষা দিতে না-পারা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দাবির পরে পর্যবেক্ষক মহলের একাংশের প্রশ্ন, পরীক্ষার্থীদের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা প্রশাসন কি রেখেছিল?
যদিও মমতার দাবি, রাজ্য সব প্রস্তুতি সেরে রেখেছিল। এ দিন তিনি বলেন, “আমাদের রাজ্য ছাড়াও আরও পাঁচটা রাজ্য পার্টি ছিল। ছাত্রছাত্রীরা খুব অসুবিধার মধ্যে রয়েছে বলেই সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিলাম। কেন্দ্রকে বহুবার অনুরোধ করেছিলাম পরীক্ষার বিষয়টা পুনর্বিবেচনার জন্য আপিল করতে। কোভিড পরিস্থিতিতে যেখানে শরীর স্বাস্থ্য নিয়ে প্রশ্ন, কেরিয়ার তৈরি করতে গিয়ে জীবনটাই যদি চলে যায়, তাই ছাত্রছাত্রীরা সময় চেয়েছিল। তারা তো বলেনি পরীক্ষা দেব না! এটা তো কেন্দ্র ব্যবস্থা করে। ৭৫% বঞ্চিত পড়ুয়ার জন্য আমার কষ্ট হচ্ছে।”