আগুন নিভলেও ৫ কর্মী নিখোঁজই 

দমকল এবং নিখোঁজদের পরিবার অভিযোগ দায়ের করেছে কারখানা-কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। অমিতবাবুর আশ্বাস, ‘‘অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোরতম ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৪:৫০
Share:

অসহায়: কান্নায় ভেঙে পড়েছেন অগ্নিকাণ্ডে নিখোঁজ শ্রমিকদের পরিজনেরা। মঙ্গলবার। ছবি: সুদীপ ঘোষ

নিয়ন্ত্রণে এসেছে আগুন। অগ্নিকাণ্ডের পরে কেটে গিয়েছে ৩৬ ঘণ্টারও বেশি। কিন্তু নিউ ব্যারাকপুরের অগ্নিদগ্ধ চেয়ার কারখানার নিখোঁজ পাঁচ কর্মীর খোঁজ মেলেনি মঙ্গলবারেও। কারখানার মালিক এবং ম্যানেজারেরও নাগাল পায়নি পুলিশ।

Advertisement

এ দিন ভোরে আগুন আয়ত্তে আসার পরে দমকলকর্মীরা বেলার দিকে কারখানায় ঢোকেন। কিন্তু বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের পৌঁছতে দেরি হওয়ায় উদ্ধারকাজ শুরু করতে বেলা গড়িয়ে যায়। নিখোঁজদের আত্মীয়স্বজনের বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয় এলাকার বিধায়ক তথা অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র-সহ জনপ্রতিনিধি এবং প্রশাসনিক আধিকারিকদের।

দমকল এবং নিখোঁজদের পরিবার অভিযোগ দায়ের করেছে কারখানা-কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। অমিতবাবুর আশ্বাস, ‘‘অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোরতম ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

Advertisement

সোমবার দুপুরে নিউ ব্যারাকপুরের যুগবেড়িয়ায় ওই কারখানায় আগুন লাগে। ৬৫ জন কর্মীর মধ্যে সঞ্জীব পড়িয়া, নিত্যানন্দ রায়, মুন্নাপ্রসাদ রায়, সুবোধ রায় ও পল্টু দুয়ারির খোঁজ মেলেনি। রাতভর কারখানার বাইরে বসে ছিলেন তাঁদের পরিজন। এ দিন কারখানায় ঢুকে দেখা যায়, চার দিকে স্টিলের রড, চেয়ার, যন্ত্রপাতি, ছাইয়ের ধোঁয়া বেরোচ্ছে স্তূপ। এ-দিক ও-দিকে। স্তূপের নীচে কেউ চাপা পড়ে আছেন কি না, দেখতে সময় লাগবে বলে জানায় দমকল। তারই মধ্যে ঢুকে পড়েন নিখোঁজ পল্টুর আত্মীয়েরা।

১১টায় অমিতবাবু পৌঁছতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন নিখোঁজদের আত্মীয়স্বজন। তাঁদের প্রশ্ন, প্রশাসন কী করছে? অমিতবাবু জানান, সরকার তাঁদের পাশে আছে। পল্টুর বাড়ির লোকেরা অভিযোগ জানান, কর্মীদের হাজিরার বায়োমেট্রি বক্স উধাও। তাঁরা আটকে রাখেন রক্ষীদের। পুলিশ আশ্বাস দেয়, ওই বাক্স উদ্ধার করা হবে। পরিবারের অভিযোগ, সুবোধ ও মুন্নার পোশাক কারখানার গুদামে মিললেও মোবাইল, পরিচয়পত্র এবং অন্যান্য জিনিস উধাও।

১২টা নাগাদ উদ্ধারকাজ শুরু করে বেগ পেতে হয় বিপর্যয় মোকাবিলা কর্মীদের। চেয়ারের কাঠামো, অন্যান্য জিনিসপত্র সরাতেই সন্ধ্যা গড়িয়ে যায়। কারখানার বিদ্যুৎ-সংযোগ কেটে দেওয়ায় ব্যাহত হয় উদ্ধারকাজ।

নিখোঁজ পল্টুর স্বজনদের প্রশ্ন, ‘‘এত বড় একটা কারখানা ঠিক ভাবে চলছে কি না, প্রশাসন দেখবে না কেন? কারখানায় নজরদারি ছিল কি?’’ উত্তর মেলেনি। ২০০ কারখানা আছে নিউ ব্যারাকপুরে বিলকান্দার ভোদাই শিল্পতালুকে। তাদের ট্রেড লাইসেন্স দেয় বিলকান্দা এক নম্বর পঞ্চায়েত। যে-সব কারখানায় দাহ্য পদার্থ ব্যবহৃত হয়, তাদের লাইসেন্স দেয় ব্যারাকপুর-২ পঞ্চায়েত সমিতি। ‘‘সব কারখানার নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখা হবে। তা না-থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে,’’ বলেন ওই সমিতির সভানেত্রী সোমা ঘোষ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement