বেআইনি অর্থ লগ্নি সংস্থা খুলে টাকা তোলার দায়ে মালিক আগেই গ্রেফতার হয়েছেন। বাজেয়াপ্ত হয়েছে সংস্থার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টও। তার জেরে বন্ধ হয়ে গেল পিনকনের পাঁচটি মদের কারখানার যাবতীয় উৎপাদনও। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে কারখানা বন্ধের কথা ঘোষণা করেনি সংস্থা। ওই পাঁচটি কারখানার মধ্যে একটি বিলিতি ও বাকি চারটি দেশি মদের।
আবগারি দফতর অবশ্য জানিয়েছে, এই পাঁচটি কারখানা বন্ধ হলেও মদের বাজারে তার কোনও প্রভাব পড়ছে না। কারণ, পিনকনের প্রতিযোগী দুটি সংস্থা বাজারে ঢালাও দেশি ও বিলিতি মদের জোগান দিচ্ছে।
সূত্রের খবর, গত কয়েক বছরে পিনকন বাজার থেকে অর্থ লগ্নি সংস্থা খুলে যে টাকা রোজগার করেছে তার একাংশ মদের ব্যবসায় ঢেলেছিল। বারাসতের কাছে গঙ্গানগরে একটি দেশি ও বিলিতি, আসানসোল, ডানকুনি এবং বরানগরে আরও তিনটি দেশি মদের কারখানা ছিল পিনকনের। ডানকুনি ও বরানগরের কারখানা দুটি অন্য একটি সংস্থার কাছ থেকে কিনেছিলেন পিনকনের মালিক মনোরঞ্জন রায়।
আবগারি দফতর জানাচ্ছে, পাঁচটি কারখানা থেকে প্রতিদিন গড়ে ৫১ লক্ষ বোতল মদ বিক্রি করত পিনকন। কিন্তু এ মাসের গোড়ায় টাকার জোগান কিছুটা কমে যায়। কেন তা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। মদের ব্যবসার টাকাও সরিয়ে নেওয়া হচ্ছিল কি না তা দেখছেন তদন্তকারীরা। আবগারি দফতরের হিসেব অবশ্য বলছে, ১ থেকে ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত প্রতিদিনের গড় বিক্রি ১৪ লক্ষ বোতলে নেমে এসেছিল। যা তার আগের মাসেই ছিল গড়ে ৫১ লক্ষ বোতল। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে গত ১০ নভেম্বর থেকে মদ তৈরি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। গত চার দিনে এক বোতল মদও পিনকনের চারটি কারখানা থেকে সরকারের ঘরে জমা পড়েনি। ফলে ওই কারখানায় আর মদ তৈরি হচ্ছে না বলেই মনে করছেন আবগারি কর্তারা।
কেন বন্ধ হয়ে গেল পাঁচটি কারখানা?
এক আবগারি কর্তা জানাচ্ছেন, মাসে প্রায় ৩০ থেকে ৫০ কোটির মদ বিক্রি করতেন পিনকনের মালিক। কিন্তু বেআইনি অর্থলগ্নির কারবার চালানোয় গ্রেফতারের পরেই তদন্তকারীরা সংস্থার মূল অ্যাকাউন্টগুলি বাজেয়াপ্ত করেন। তার জেরে মদের ব্যবসায় পুঁজিতে টান পড়ে। বাজেয়াপ্ত হয় পিনকনের নামে থাকা মদের কারখানার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টও। সেই চাপ সামলাতে না পেরেই পাঁচটি কারখানার উৎপাদন বন্ধ হয়ে গিয়েছে। সমস্যায় পড়েছেন কর্মীরা। অদূর ভবিষ্যতে তা খোলার আশা দেখছেন না আবগারি কর্তারা।