এ ভাবেই তীব্র বিস্ফোরণ ঘটে নৈহাটিতে। —ফাইল চিত্র।
পেরিয়ে গিয়েছে ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময়। সোমবার বিকেল পর্যন্ত নৈহাটির বিস্ফোরণ-কাণ্ডের জেরে গঙ্গার দু’পাড়ের বাসিন্দাদের আতঙ্ক কাটেনি।
বৃহস্পতিবার নৈহাটির গৌরীপুরে গঙ্গার পাড়ে পুলিশের বাজেয়াপ্ত করা বাজির মশলা এবং রাসায়নিক নিষ্ক্রিয় করতে ঘটানো ওই বিস্ফোরণে সেখানকার বহু বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অভিঘাত পৌঁছয় গঙ্গার অপর পাড়ে, চুঁচুড়াতেও। চুঁচুড়ার গঙ্গার ধার বরাবর তিনটি ওয়ার্ডের বহু বাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বাদ যায়নি জোড়াঘাটের কাছে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের স্মৃতি বিজড়িত ‘বন্দে মাতরম ভবন’ও। ওই হেরিটেজ ভবনের একাধিক জানলার কাচ ভেঙে পড়ে। সব মিলিয়ে দু’পাড়ে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির সংখ্যা অন্তত ৪৮৪টি বলে প্রশাসন সূত্রের খবর।
উত্তর ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন জানায়, সেখানে ক্ষতি হয়েছে ১৫৬টি বাড়ির। এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, অল্প ফাটল ধরেছে আরও দেড়শো বাড়িতে। হুগলির জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও বলেন, ‘‘যা রিপোর্ট এসেছে, তাতে এখানে ৩২৭টি বাড়ি কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই রিপোর্ট রাজ্য প্রশাসনের কাছে পাঠিয়ে দিচ্ছি। রাজ্যের নির্দেশ অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।’’ ‘বন্দে মাতরম ভবন’টি রক্ষণাবেক্ষণ করে হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভা। পুরপ্রধান গৌরীকান্ত মুখোপাধ্যায় ওই ভবনের জানলার কাচ সারানোর জন্য পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: মোদী-মমতা আজ এক মঞ্চে, হতে পারে বৈঠক
শুক্রবার বিস্ফোরণ-স্থল পরীক্ষা করেন সিআইডি-র বম্ব স্কোয়াডের বিশেষজ্ঞেরা। আসেন রাজ্য পুলিশের আইজি অজয় নন্দও। ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা বলেন, “তদন্ত চলছে। ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা শনিবার ঘটনাস্থল পরীক্ষা করবেন।” ঘটনাস্থল থেকে ২০০ মিটার দূরে থাকা গঙ্গার রেলসেতুতে বিস্ফোরণের প্রভাব পড়েছে কিনা সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে জানানো হবে বলেও পুলিশ কমিশনার জানিয়েছেন। ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের একটি সূত্রের মতে, বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয় করার ক্ষেত্রে গা ছাড়া ভাব ছিল। সে জন্যই ৩০০ কেজিরও বেশি বিস্ফোরকে একবারে আগুন দেওয়া হয়। আর তাতেই বিপত্তি।