দু’ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন করল ৩৩টি সরকারি কর্মচারী ও শিক্ষক সংগঠন। প্রতীকী ছবি।
ট্রাইবুনাল, হাই কোর্ট থেকে সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত দীর্ঘ আইনি লড়াই সত্ত্বেও ডিএ বা মহার্ঘ ভাতা সংক্রান্ত সমস্যার সুরাহা হয়নি। তাই অবিলম্বে ডিএ মেটানোর দাবিতে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের অধীনে ৩৩টি সরকারি কর্মচারী ও শিক্ষক সংগঠন সোমবার দু’ঘণ্টার কর্মবিরতি আন্দোলনের ডাক দিয়েছিল। সরকারি কার্যালয়গুলিতে সেই কর্মসূচির মিশ্র প্রভাব পড়েছে।
আইন শিবির সূত্রের খবর, বিভিন্ন জেলা আদালতে কর্মবিরতির কিছুটা প্রভাব পড়েছে। জেলা স্তরের সরকারি দফতরগুলিতেও ছিল মিশ্র প্রভাব। খাদ্য দফতরের কর্মীদের একাংশ এই কর্মসূচি পালন করেন। তবে ডিএ নিয়ে মামলাকারী সংগঠনগুলির মধ্যে কনফেডারেশন অব স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ় এবং কর্মচারী পরিষদ এ দিনের কর্মসূচির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত হয়নি। কর্মচারী পরিষদের সদস্যেরা ছুটি নিয়ে এই কর্মসূচির পাশে ছিলেন। এই কর্মসূচির সঙ্গে ছিল না রাজ্য কো-অর্ডিনেশন কমিটিও। তারা অবশ্য এই বিষয়ে শ্রমিক, কর্মচারী, শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী সংগঠনগুলির যৌথ মঞ্চের পক্ষ থেকে ১৭ ফেব্রুয়ারি বিধানসভা অভিযান এবং রাজ্যপালের কাছে স্মারকলিপি পেশের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এ দিন মালদহ, উত্তর দিনাজপুরের কয়েকটি স্কুলে, মালদহ, দক্ষিণ দিনাজপুর ও রায়গঞ্জের জেলা আদালতে কর্মবিরতি পালন করা হয়। মুর্শিদাবাদ, বীরভূম, আরামবাগ, আমতা, উলুবেড়িয়া আদালতের কাজকর্ম কমবেশি ব্যাহত হয়েছে। কলকাতায় নগর দায়রা আদালতের সামনে অবস্থান-বিক্ষোভ করেন ব্যাঙ্কশাল আদালতের কর্মীরা। কাকদ্বীপ আদালতে ধর্না-বিক্ষোভ হয়। সরকারি কৌঁসুলি শুভাশিস মণ্ডল বলেন, ‘‘মানুষের সমস্যা হয়েছে। কিন্তু দীর্ঘদিনের যন্ত্রণা থেকেই আমরা বাধ্য হয়ে আন্দোলনে নেমেছি।’’
কোচবিহার, আলিপুরদুয়ারে সরকারি কর্মীদের একাংশ কর্মবিরতি পালন করেন। শিলিগুড়িতে এ দিন কর্মবিরতি আন্দোলনের প্রভাব বিশেষ পড়েনি। নদিয়া জেলা প্রশাসনিক ভবনে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে, তবে তেমন প্রভাব পড়েনি কাজকর্মে।
মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির হুগলি জেলার সদর মহকুমার সম্পাদক কুমুদ মণ্ডলের হুঁশিয়ারি, সমস্যার সমাধান না-হলে পঞ্চায়েত ভোটের ডিউটি বয়কট করবেন তাঁরা। পশ্চিমবঙ্গ কর্মচারী সমিতির আরামবাগ শাখার সম্পাদক সুশোভন মুখোপাধ্যায় বলেন, “মানুষের ভোগান্তির জন্য আমরা ক্ষমাপ্রার্থী। কিন্তু আমাদের উপায় ছিল না।’’
বাঁকুড়া গার্লস হাইস্কুলে এ দিন কর্মবিরতিতে যোগদানকারী শিক্ষিকাদের হাজিরা খাতায় সই করতে না-দেওয়ার অভিযোগ ওঠে প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে। পরে, স্কুলশিক্ষা দফতরের নির্দেশে তাঁরা সই করেন। পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরে কোথাও কোথাও স্কুলে, কোনও কোনও আদালতে কাজকর্মে সমস্যা হয়েছে। পশ্চিম বর্ধমানে ঘণ্টা দুয়েক কর্মবিরতি ছিল কিছু কার্যালয়ে। পূর্ব বর্ধমানের অনেক জায়গায় কর্মীরা ওই আন্দোলনে নৈতিক সমর্থন জানালেও সরাসরি কর্মবিরতি পালন করেননি।
সরব সৌমিত্র। লোকসভায় বিজেপি ডিএ প্রসঙ্গ তুলল। সোমবার বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ প্রশ্নোত্তর পর্বে অসংগঠিত শ্রমিকদের নিয়ে প্রশ্ন করার ফাঁকে বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মীরা রাস্তায় বসে আছেন। তাঁরা ডিএ-র দাবিতে আন্দোলন-অনশন করছেন। তাঁদের জন্য কি কেন্দ্রীয় সরকার সরাসরি কিছু করতে পারে?’