এক কলেজেই ৩০ ‘প্রেমিকা’! জালে যুবক

প্রেমিক-প্রবরের কীর্তিতে তাঁর বাবার মাথা হেঁট। ‘প্রেমিকা’দের কেউ ক্ষুব্ধ, কারও চোখে জল, কারও মুখ থমথমে! আর চন্দননগর কমিশনারেটের পুলিশকর্মীরা বলছেন, ‘ধন্যি ছেলে’! কেউ মজা করে বলছেন, ‘‘ঘোর কলি। নইলে এমন কেষ্ট ঠাকুরকে পুলিশ ধরে!’’

Advertisement

তাপস ঘোষ

চন্দননগর শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০১৮ ০৪:০২
Share:

দিব্যি চলছিল এক মাস। সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘প্রেম’! একই কলেজের ৩০ জন ছাত্রীর সঙ্গে!

Advertisement

তাল কাটল মঙ্গলবার। এক ‘প্রেমিকা’র সঙ্গে দেখা করতে এসে চন্দননগর স্ট্র্যান্ডে মোমো খেতে গিয়েই বিপত্তি। জুটে গেলেন অন্য ‘প্রেমিকা’রা। সবাই মিলে তাঁকে তুলে দিলেন পুলিশের হাতে। এফআইআর না-হওয়ায় পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করেনি। মুচলেকা নিয়ে পরিবারের হাতে তুলে দিয়েছে।

প্রেমিক-প্রবরের কীর্তিতে তাঁর বাবার মাথা হেঁট। ‘প্রেমিকা’দের কেউ ক্ষুব্ধ, কারও চোখে জল, কারও মুখ থমথমে! আর চন্দননগর কমিশনারেটের পুলিশকর্মীরা বলছেন, ‘ধন্যি ছেলে’! কেউ মজা করে বলছেন, ‘‘ঘোর কলি। নইলে এমন কেষ্ট ঠাকুরকে পুলিশ ধরে!’’

Advertisement

বছর বাইশের যুবকটি পুরশুড়ার বাসিন্দা। কয়েক মাস ধরে রয়েছেন মুম্বইয়ে। সেখানে একটি বেসরকারি মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে পড়ছেন। সম্প্রতি বাড়ি ফেরেন। ‘প্রেমিকা’রা চন্দননগরের একটি কলেজের ছাত্রী। কেউ প্রথম বর্ষ, কেউ তৃতীয়। যুবকের প্রেম-পর্বের শুরু মুম্বই থেকেই।

ফেসবুকে এক মহিলার নামে ভুয়ো অ্যাকাউন্ট খুলেছিলেন যুবক। চন্দননগরের ওই কলেজের এক ছাত্রীর সঙ্গে সেখানেই আলাপ। সেই সূত্রে আসেন ছাত্রীর ‘মিউচুয়াল ফ্রেন্ড’রা। দ্রুত আলাপ জমে ওঠে তাঁদের সঙ্গেও। একে একে যুবকের ‘প্রেমিকা’র সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৩০-এ। যুবকের শেষ ‘প্রেমিকা’ ওই কলেজের তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্রী। তাঁকে যুবকটি বিয়েরও প্রতিশ্রুতি দেন বলে অভিযোগ। দেখা করার ইচ্ছাও প্রকাশ করেন। সেই মতো মঙ্গলবার বিকেলে সাক্ষাৎস্থল ঠিক হয় চন্দননগর স্টেশন। যুবকটি ‘প্রেমিকা’কে অন্য কাউকে সঙ্গে আনতে নিষেধ করেছিলেন। কিন্তু ‘প্রেমিকা’ সেই বারণ শোনেননি। আনেন কলেজের জনাপাঁচেক বান্ধবীকে। যাঁরা যুবকের ‘প্রেমিকা’ও। হোয়াটসঅ্যাপে তাঁদের দেখা ছবির সঙ্গে যুবকের মুখ মিলে যায়। খুলে যায় প্রেমিক-প্রবরের মুখোশ। তবে, স্টেশনে যুবককে কেউ কিছু বলেননি। সকলে মোমো খাওয়ানোর আব্দার করে যুবককে নিয়ে স্ট্র্যান্ডে যান। মোমো খেয়ে সোজা থানায়। যুবকের শেষ ‘প্রেমিকা’র ক্ষোভ, ‘‘ও আমায় ঠকাল। আমি স্বপ্ন দেখছিলাম। ও বিয়ে করবে বলেছিল। তাই দেখা করতে রাজি হই। বাবা-মায়ের সঙ্গেও ওকে কথা বলতে বলেছিলাম।’’ আর এক ‘প্রেমিকা’ বলেন, ‘‘ও ফেসবুকে ভুয়ো অ্যাকাউন্ট নিয়ে কথা বলতে চাইত না। দু’এক দিন ফেসবুকে কথা বলেই হোয়াটসঅ্যাপে চলে যায়।’’ এত কাণ্ডের পরেও যুবক নির্লিপ্ত। তাঁর একটাই আফসোস, ‘‘দেখা করতে এসেই ফেঁসে গেলাম।’’ আর তাঁর বাবা বলছেন, ‘‘জমি বিক্রি করে ছেলেটাকে পড়তে পাঠিয়েছিলাম। মোবাইলে কী করেছে, কী করে বুঝব!’’

আরও পড়ুন: সত্যজিতের প্রথম পাঠ চন্দননগরে

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement