প্রতীকী ছবি।
বেসরকারি ইস্পাত তৈরির কারখানায় গলিত লোহায় ঝলসে মৃত্যু হল তিন শ্রমিকের। জখম তিন। দুর্গাপুরের একটি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন তাঁরা। তাঁদের মধ্যে দুই শ্রমিকের দেহের ৯৫ শতাংশই পুড়ে গিয়েছে।
বাঁকুড়ার মেজিয়া থানার জেমুয়ায় শনিবার রাতের দুর্ঘটনা। জেলা এসপি সুখেন্দু হীরা জানান, মৃত সত্যম বাউড়ি (৪২) ও সোমনাথ হাঁসদার (৩০) বাড়ি পুরুলিয়ার কাশীপুরে। অন্য মৃত সতীশ নুনিয়া (৩০) রানিগঞ্জের জেকে নগরের বাসিন্দা। আহত আমন কুমার, সূর্যনাথ যাদব, বাবলু বর্মা। তিনি বলেন, ‘‘ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।’’
দুর্ঘটনা কী ভাবে ঘটল, তা নিয়ে ধোঁয়াশা কাটেনি। কারখানা কর্তৃপক্ষ বা পুলিশ, কেউই স্পষ্ট কিছু বলেনি। এ দিন দুর্গাপুরের হাসপাতালে মৃত ও আহতদের পরিজনদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে সংবাদমাধ্যমকেও বাধা দেন কিছু বহিরাগত। স্থানীয় সূত্রে ঘটনা সম্পর্কে দু’-তিন রকমের তত্ত্ব শোনা যাচ্ছে। কেউ জানাচ্ছেন, লোহা গলানোর সময় বয়লারের উপরের অংশ ভেঙে পড়ে শ্রমিকদের উপরে। আবার শোনা যাচ্ছে, গলিত লোহা নিয়ে যাওয়ার সময় কোনও কারণে তা শ্রমিকদের উপরে উল্টে পড়ে।
যে ঠিকা সংস্থার অধীনে শ্রমিকেরা কাজ করতেন, তার ঠিকাদার সঞ্জয় সিংহের দাবি, ‘‘আমি তখন কারখানায় ছিলাম না। কী ভাবে দুর্ঘটনা ঘটল, কে কে মারা গেলেন, কারখানা কর্তৃপক্ষ কিছুই জানাচ্ছেন না।’’ স্থানীয় বিধায়ক তথা আইএনটিটিইউসি নেতা স্বপন বাউড়িও অভিযোগ করেছেন, ‘‘পাঁচটি ইউনিটে প্রায় ১২০০ শ্রমিক কাজ করেন। অথচ মান্ধাতা আমলের যন্ত্রপাতি দিয়ে কাজ চলছে। শর্ট সার্কিট থেকে দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে শুনেছি।’’ সিটুর বাঁকুড়া জেলা সভাপতি কিঙ্কর পোশাকের অভিযোগ, ‘‘কারখানা কর্তৃপক্ষ বিষয়টি লঘু করে দেখাতে কোনও সদুত্তর দিতে চাইছেন না।’’ কারখানার অতিরিক্ত জেনারেল ম্যানেজার দীপক সাউ শুধু জানান, মৃত ও আহতদের পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।