(বাঁ দিকে) বিকাশ ভট্টাচার্য এবং দেবাঞ্জন দে। —ফাইল ছবি।
সম্প্রতি কংগ্রেস সম্পর্কে তাঁর কিছু মন্তব্যে অনুমোদন দেয়নি রাজ্য সিপিএম। এ বার আইনজীবী হিসাবে ২৬ হাজার চাকরি বাতিল মামলায় সুপ্রিম কোর্টে যে সওয়াল করেছেন রাজ্যসভার সিপিএম সাংসদ বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য, তাকে খণ্ডন করল দলেরই ছাত্র সংগঠন এসএফআই।
সোমবার সুপ্রিম কোর্টে ২৬ হাজার চাকরি বাতিল মামলার শুনানি ছিল। তাতে সওয়াল করতে গিয়ে বিকাশ বলেছিলেন, “পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়েই প্রশ্ন রয়েছে। গোটা প্রক্রিয়া বিতর্কিত। তাই গোটা প্যানেল বাতিল করা উচিত। রাজ্যের উচিত ছিল স্বচ্ছ ভাবে কাজ করা। কিন্তু রাজ্য, স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি) এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদ প্রত্যেকে আলাদা আলাদা কথা বলেছে। কারও কথার মিল পাওয়া যাচ্ছে না।”
কিন্তু এসএফআইয়ের অবস্থান কী? মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠকে এই প্রশ্ন উঠলে এসএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক দেবাঞ্জন দে স্পষ্ট জানিয়ে দেন, তাঁরা মনে করেন যোগ্যদের চাকরি থাকা উচিত। সবাইকে একসঙ্গে বরখাস্ত করা যুক্তিসঙ্গত নয় বলেও মনে করে এসএফআই। দেবাঞ্জনের কথায়, ‘‘আমরা মনে করি যোগ্য-অযোগ্য আলাদা করা উচিত। বাগ কমিটির রিপোর্ট, সিবিআইয়ের তদন্ত— সব মিলিয়েই তা সম্ভব। এর দায়িত্ব রাজ্য সরকারকে নিতে হবে।’’
বিকাশ এবং দেবাঞ্জনের বক্তব্যে বৈপরীত্য স্পষ্ট। এসএফআইয়ের বক্তব্য নিয়ে বিকাশ পাল্টা বলেছেন, ‘‘কেউ কারও মতামত বলতেই পারেন। আমি যা বলেছি, তা আইনের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘এটা প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি। তাই গোটা প্যানেলই বাতিল করা দরকার।’’ বিকাশের এ-ও প্রশ্ন, গোটা প্রক্রিয়াটাতেই দুর্নীতি হয়েছে। তা হলে যোগ্য-অযোগ্য বাছাই করার সূচকটি কী হবে?
যদিও সোমবার মূল মামলাকারীদের হয়ে আইনজীবী ফিরদৌস শামিম জানিয়েছিলেন, প্রাথমিক ভাবে তাঁর মনে হয়েছে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির জন্য নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রথম দু’টি কাউন্সেলিং সঠিক পদ্ধতিতে হয়েছে। এর পরের কাউন্সেলিংগুলি হয়েছে মেয়াদ উত্তীর্ণ প্যানেল থেকে। একই ভাবে নবম-দশম শ্রেণির জন্য নিয়োগের ক্ষেত্রে তৃতীয় কাউন্সেলিং পর্যন্ত পদ্ধতি মানা হয়েছে। তার পরের কাউন্সেলিংগুলি মেয়াদ উত্তীর্ণ প্যানেল থেকে করা হয়েছে বলে আদালতে জানিয়েছিলেন ফিরদৌস। ফলে, বিকাশ যেমন গোড়া থেকে শেষ পর্যন্তকে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়মের কথা বলেছিলেন, শামিম তেমনটা বলেননি। তবে বিকাশ এবং এসএফআইয়ের ‘মতানৈক্য’ নিয়ে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘আমরা তো প্রথম থেকেই বলছি, বিকাশবাবু চাকরি খাওয়ার মনোভাব নিয়ে মামলা করছেন। নিয়োগ সম্পন্ন হতে দিচ্ছেন না। এ বার সেই কথা সিপিএমের ছাত্ররাই বলে দিল।’’