সিপিএম পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান দল ছেড়ে যোগ দিলেন তৃণমূলে। ফলে পঞ্চায়েতটির ক্ষমতা দখল করল তৃণমূল। ঘটনাটি বনগাঁ ব্লকের ধর্মপুকুরিয়া পঞ্চায়েতের।
ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত পঞ্চায়েত ভোটে ওই পঞ্চায়েতের ১৭টি আসনের মধ্যে বামেরা পেয়েছিল ৯টি আসন। তৃণমূল পেয়েছিল ৮টি। প্রধান হন সিপিএমের সন্তোষ রায়। কিন্তু তিনি তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় তৃণমূলের আসন সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৯টিতে।
বুধবার সন্ধ্যায় স্থানীয় চাঁদা বাজারে তৃণমূলের পক্ষ থেকে একটি সভায় আয়োজন করা হয়। ওই সভামঞ্চে বনগাঁ উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস দলীয় পতাকা তুলে দেন সন্তোষবাবুর হাতে। সোমবারই তিনি বনগাঁর বিডিও সুশান্তকুমার বসুর কাছে লিখিত ভাবে দলত্যাগের কথা জানান। তৃণমূলে যোগ দেওয়ার বিষয়টিও জানিয়েছিলেন। ব্লক প্রশাসনের তরফে সন্তোষবাবুর বক্তব্য ভিডিও রেকর্ডিং করা হয়েছিল। এ দিনের সভায় উপস্থিত ছিলেন বনগাঁ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অণিমা মণ্ডল, জেলা পরিষদের সদস্য শ্যামল রায়, দলের নীলদর্পণ ব্লকের সভাপতি নন্দদুলাল বসু।
সন্তোষবাবু বলেন, “এলাকার মানুষকে উন্নয়নের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, গত ষোলো মাসে তা রাখতে পারিনি। এলাকার উন্নয়ন সঠিক ভাবে করতেই মুখ্যমন্ত্রীর উন্নয়নের কর্মযজ্ঞে সামিল হলাম।” বিশ্বজিৎবাবু জানিয়েছেন, এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে সন্তোষবাবু তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছিলেন। দলের জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের অনুমতিতে তাঁকে দলে নেওয়া হয়েছে। সিপিএম ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিলেও সন্তোষবাবুকেই দলের পক্ষ থেকে প্রধান রাখা হয়েছে বলেও দলীয় সূত্রের খবর।
গোটা ঘটনায় সিপিএম আবার তৃণমূলের বিরুদ্ধে অনৈতিকতার অভিযোগ তুলেছে। সিপিএমের বনগাঁ-বাগদা জোনাল কমিটির সম্পাদক পঙ্কজ ঘোষ বলেন, “মানুষের ভোটে নির্বাচনে জয়ী হয়ে গঠিত পঞ্চায়েত ভেঙে দিয়ে নিজেদের দখল করাটা অনৈতিক কাজ। তৃণমূল যে সর্বত্র বিরোধীশূন্য রাজনীতি করতে চাইছে, এটা তারই নিদর্শন।” সিপিএম নেতৃত্বের অনুমান, ভয় বা প্রলোভন দিয়েই প্রধানকে দলে টেনেছে তৃণমূল। যদিও সন্তোষবাবু বলেন, “গত পনেরো দিন ধরে বিস্তর চিন্তা-ভাবনা করেই আমি স্বেচ্ছায় তৃণমূলে যোগ দিয়েছি।”
কিছু দিন আগেই স্থানীয় ঘাটবাঁওর পঞ্চায়েতের ক্ষমতাও সিপিএমের হাত থেকে তৃণমূল দখল করেছে। সিপিএমের প্রধান-সহ কয়েক জন তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। সম্প্রতি ওই ব্লকেরই বৈরামপুর পঞ্চায়েতের ক্ষমতা একই ভাবে সিপিএমের হাত থেকে তৃণমূল দখল করেছে বলে সিপিএমের দাবি। বিশ্বজিৎবাবু বলেন, “সিপিএমের যে সব প্রধান পঞ্চায়েত সদস্য তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন, তাঁরা ওই দলের দুর্নীতিকে প্রশয় দিতে না পেরেই দল ছেড়েছেন। আমরা ওঁদের দলে আনতে কোনও প্রলোভন দিতে যায়নি।”