শীতের মরসুম পড়তে না পড়তেই সুন্দরবনে শুরু হয়ে গিয়েছে পর্যটকদের ভিড়। আর এখানে ঘুরতে এসেই বার বার চোর-ছিনতাইবাজদের কবলে পড়তে হচ্ছে তাদের। এ বিষয়ে প্রশাসনকে জানিয়েও কোনও সুরাহা হয়নি বলে অভিযোগ ক্যানিংয়ের পর্যটন ব্যবসায়ীদের।
এই ঘটনা ঘটার ফলে পর্যটকদের মধ্যে আতঙ্ক বেড়েছে। পর্যটকদের যদি এই বিপদের মুখোমুখি বার বার হতে হয়। তাহলে সুন্দরবনে পর্যটক আসা কমে যাবে। এই আশঙ্কায় আতঙ্কিত পর্যটক ব্যবসায়ীরাও। এ বিষয়ে ক্যানিংয়ের পর্যটনের সঙ্গে যুক্ত এক ব্যবসায়ী দীপু দাস বলেন, “এখানে ঘুরতে আসা পর্যটকেরা যদি নিরাপত্তার অভাব বোধ করেন তাহলে পর্যটকদের আনাগোনা কমবে। কমবে বিদেশি পর্যটকদের আসা। এর ফলে পর্যটন ব্যবসার ঘাটতির সঙ্গে সঙ্গে সরকারের রাজস্ব কমে যাবে।”
ছিনতাইয়ের সবচেয়ে বেশি ঘটনা ঘটছে ক্যানিংয়ের ট্রেনে এবং প্ল্যাটফর্মে। ক্যানিংয়ের রেলপথ দিয়েই সুন্দরবন বা সুন্দরবনের আশেপাশের ট্যুরিস্ট স্পটে আসতে হয়। আর এই ট্রেনেই ভিড়ের মধ্যে চুরি হচ্ছে মানিব্যাগ, মোবাইল ফোন, সোনার হার, আংটি ইত্যাদি। জিআরপিকে জানিয়েও কোনও লাভ হচ্ছে না বলে অভিযোগ। সম্প্রতি এ রকম ভাবে চুরি করতে গিয়ে হাতে নাতে ধরা পড়ে এক দুষ্কৃতী।
জিআরপি সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কয়েক দিন ধরেই ক্যানিং ট্রেন ও প্ল্যাটফর্মে এই রকম চুরির ঘটনা ঘটছে। যেমন, বারাসত থেকে ঘুরতে এসেছিলেন রাজেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু দু’দিন আনন্দ করতে এসে তাঁকে হারাতে হয়েছিল তাঁর সর্বস্ব। বাড়ি ফেরার দিন ট্রেনের অপেক্ষায় এই প্ল্যাটফর্মেই বসেছিলেন রাজেন্দ্রবাবু। সেদিনই এখান থেকে তাঁর সর্বস্ব খোওয়া গিয়েছিল। জিআরপি-র কাছে অভিযোগ জানাতে গেলে তাঁকে সেদিন সোনারপুর জিআরপিতে পাঠানো হয়েছিল। সেখানে দীর্ঘ ক্ষণ বসে থাকার পর একটি ডায়েরি নেওয়া হয়েছিল মাত্র। তাঁর কথায়, “জিনিস চুরি হয়ে যাওয়ার পর মন মেজাজ এমনিতেই ঠিক ছিল না। তার মধ্যে এই থানা ওই থানা করে নাজেহাল হতে হয়েছে। কিন্তু জিনিসপত্র ফেরত পাইনি।”
দিন কয়েক আগেই কুলতলি থানার কেল্লাতে ঘুরতে আসা পর্যটকদের মারধর করে মোবাইল, টাকা কেড়ে নেয় দুষ্কৃতীরা বলে অভিযোগ। গত বছর কুলতুলি থানার কৈখালিতে লঞ্চে ডাকাতির ঘটনাও ঘটেছিল। দিনের পর দিন এই ঘটনা ঘটার ফলে ক্ষোভ বাড়ছে মানুষের। যাত্রীদের অভিযোগ, সন্ধ্যার সময়ে এই চুরির ঘটনা বেশি ঘটছে। এত ঘটনা ঘটে যাওয়া সত্ত্বেও ক্যানিং স্টেশনে জিআরপি-র একটি ক্যাম্প থাকলেও প্ল্যাটফর্মে একটিও জিআরপি দেখা যায় না বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের।
এ প্রসঙ্গে সোনারপুর জিআরপি থানা সূত্রে জানানো হয়েছে, এই সময়ে একটু-আধটু চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে ঠিকই। সে কারণে আমাদের জিআরপি-র কর্মীরা সাদা পোশাকে ট্রেন ও প্ল্যাটফর্ম নজরদারি চালান। অভিযোগের ভিত্তিতে বেশ কয়েক জনকে ধরাও হয়েছে বলে দাবি জিআরপির।