স্টেশনে বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র।
স্টেশনে মদ এবং জুয়ার ঠেক বন্ধ করা, যাত্রী সুরক্ষা ও নিরাপত্তার জন্য পুলিশ চৌকি বসানোর দাবিতে শুক্রবার সকাল সাড়ে আটটা থেকে প্রায় এক ঘণ্টা দেগঙ্গার বহিরা কালিবাড়ি স্টেশন অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন পাঁচ-সাতটি গ্রামের মানুষ।
তার জেরে হাসনাবাদ-বারাসাত শাখায় ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে শাসন থানার আইসি নাসিম আখতার দাবিপূরণের আশ্বাস দিলে বিক্ষোভ ওঠে। বেলা সাড়ে নটা নাগাদ ওই শাখায় ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি হাসনাবাদ-বারাসাত শাখায় ট্রেনে বা স্টেশন প্ল্যাটফর্মে দুষ্কৃতীদের হাতে আক্রান্ত হচ্ছেন যাত্রীরা। প্রায়ই এ নিয়ে গণ্ডগোল হচ্ছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে খাসবালান্দা গ্রামের একটি মেয়ে যখন বাড়ি ফিরছিলেন, দুষ্কৃতীরা তাঁর ব্যাগ ও কানের দুল ছিনতাই করে পালায়।
শুক্রবার সকালেও ওই স্টেশনে দুষ্কৃতীদের হাতে আক্রান্ত হন মহম্মদ জয়নাল বলে এক শ্রমিক। সেই ঘটনার কথা ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় পাকদহ, ভাগ্যমন্তপুর, চক আমিনপুর, বহিরা কালিবাড়ি এবং গোলাবাড়ি-সহ বেশ কয়েকটি গ্রামের কয়েকশো বাসিন্দা স্টেশনে এসে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। তাঁদের অভিযোগ, বহিরা কালিবাড়ি স্টেশন চত্বরে একদল দুষ্কৃতী হামেশাই মদ খায়, জুয়া খেলে। তাদের হাতে নানা হয়রানির স্বীকার হতে হয় যাত্রীদের। মহিলাদের সঙ্গে নানা অশালীন ব্যবহার করে তারা। রাতের স্টেশনে নামতে ভয় পায় মহিলারা। যাত্রীদের অভিযোগ, স্টেশন মাস্টারকে জানানো হলেও কোনও সুরাহা হয় না। তাঁদের দাবি, অবিলম্বে জুয়ার আসর বন্ধ করতে হবে। বেআইনি মদ বিক্রেতাদের গ্রেফতার করতে হবে। স্টেশন লাগোয়া এলাকায় পুলিশ ফাঁড়ি করতে হবে।তবে বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, ওই এলাকায় কাঠা দশেকের একটি পরিত্যক্ত জমি কার দখলে থাকবে তা নিয়ে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দের জেরেই এই ঘটনা। ওই জমিতে চোলাই সাট্টার আসর ও নানা দুষ্কর্ম হয় বলে অভিযোগ। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, শাসনের দাদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের চকআমিনপুরের ওই জমিটি নিয়ে বিবাদ চলছিল বেশ কিছুদিন ধরেই। এ দিন তাকে কেন্দ্র করেই বিবাদে জড়িয়ে পড়ে উত্তর বহিরা ও পাকদহের তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা। অভিযোগ, এ দিনের ঘটনায় মারপিটে নেতৃত্ব দিতে দেখা যায় ওই দুই এলাকার তৃণমূল নেতৃত্বকেও।
পরে বারাসত ২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তৃণমূল নেতা ইফতিকারউদ্দীন এসে পরিস্থিতি সামাল দেন। তবে এ দিন নিজেদের গোষ্ঠীদ্বন্দের কথা স্বীকার করেননি ইফতিকারউদ্দীন। তিনি বলেন, “দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে অবরোধ হয়। আমরা গিয়ে তাদের বুঝিয়ে অবরোধ তুলি। এর সঙ্গে দলের কোনও ব্যাপার নেই।”