এখনও এই অবস্থায় পড়ে আছে মাঠ। ছবি: সামসুল হুদা।
মাঠ ছিল না এলাকায়। তাই এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি একটি স্টেডিয়ামের। দীর্ঘ রাজনৈতিক টানাপোড়েনের পর বর্তমান সরকারের আমলে ক্যানিংয়ে সেই স্টেডিয়ামের কাজ শুরু হলেও কাজ এগোচ্ছে খুবই ধীর গতিতে। কারণ, প্রথম দফায় যে টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল, তা প্রায় শেষ। এখন নতুন করে টাকা বরাদ্দ না হওয়ায় স্টেডিয়ামের কাজ থমকে গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে টাকা এসেছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী। কিন্তু কাজে গতি এসেছে কতটা, সে প্রশ্ন তুলেছেন সাধারণ মানুষ।
২০১২ সালে ১৩ সেপ্টেম্বর ক্যানিং স্পোর্টস কমপ্লেক্সের শিলান্যাস করেন ক্রীড়ামন্ত্রী মদন মিত্র। এই স্টেডিয়াম তৈরির জন্য ব্যয় ধরা হয়েছিল মোট ১২ কোটি টাকা। প্রথম দফায় ওই কাজের জন্য তৎকালীন সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী শ্যামল মণ্ডল ৪ কোটি ৮২ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছিলেন। সেই মতো কাজও শুরু হয়েছিল। তখন বলা হয়েছিল কাজ শেষ করে ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে স্টেডিয়ামটি সুন্দরবন উন্নয়ন দফতরের হাতে তুলে দেওয়া হবে। কিন্তু কাজের গতি এতই কম, তা সময়ে শেষ হওয়া কার্যত অসম্ভব বলে মনে করেন সব পক্ষই। যা নিয়ে ক্রীড়ামোদী মানুষের মনে ক্ষোভও জমছে।
এ দিকে, পূর্ত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথম পর্যায়ে যে টাকা পাওয়া গিয়েছে সেই টাকায় মাঠের দু’দিকের গ্যালারি ও ক্লাবহাউস তৈরির কাজ অনেকটাই শেষ হয়েছে। কিন্তু দ্বিতীয় পর্যায়ের টাকা না পেলে স্টেডিয়ামের অন্যান্য কাজ শুরু করা সম্ভব নয়। তা ছাড়া, মাঠ তৈরির এখনও কোনও টেন্ডার জমা পড়েনি বলে জানায় এই দফতর। সুন্দরবন উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী মন্টুরাম পাখিরা অবশ্য দাবি করেন, “টাকার একটা সমস্যা ছিল। তবে আমরা ওই প্রকল্পের জন্য দ্বিতীয় পর্যায়ের টাকা দিয়ে দিয়েছি। আশা করি আর কোনও সমস্যা হবে না।”
২০০৯ সালে তৎকালীন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওই কমপ্লেক্স মাঠে একটি নতুন রেলপথের শিলান্যাস করেন। সেই অনুষ্ঠানে ঘোষণা করেছিলেন রেলের পক্ষ থেকে এখানে একটি স্টেডিয়াম তৈরি করা হবে।
সেই মতো তৎকালীন বাম সরকারের ক্রীড়ামন্ত্রী কান্তি গঙ্গোপাধ্যায় এবং ভূমি ও ভূমিসংস্কার মন্ত্রী রেজ্জাক মোল্লা মাতলা নদীর চরে এই স্পোর্টস কমপ্লেক্স তৈরির জন্য রেল দফতরকে চিঠি দেন। কিন্তু রেল এই কাজে উদ্যোগী না হওয়ায় বাম সরকার নিজেরাই এই প্রকল্পটি তৈরির সিদ্ধান্ত নেয়। ওই প্রকল্পের জন্য সাড়ে ৩ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছিল। প্রথম পর্যায়ে কাজের জন্য ৫০ লক্ষ টাকা অনুমোদন হয়। কিন্তু সরকার পরিবর্তন হয়ে নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার ফলে সুন্দরবন উন্নয়ন দফতর ওই প্রকল্পের কাজের দায়িত্ব দেয় পূর্ত দফতরকে। সেই মতোই কাজ শুরু হয়।
পূর্ত দফতরের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার ফাইয়াজ আহমেদ বলেন, “মাঝে টাকার সমস্যা হয়েছিল ঠিকই। তবে দ্বিতীয় পর্যায়ের টাকা পেয়েছি। কাজও চলছে। আশা করছি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে পারব।”
ভ্রম সংশোধন
গত শুক্রবার অসমাপ্ত স্পোর্টস কমপ্লেক্সের ছবির বদলে ভুলবশত ক্যানিং মার্কেট কমপ্লেক্সের ছবি
প্রকাশিত হওয়ায় আমরা দুঃখিত। সেখানে অবশ্য ব্যবসা-বাণিজ্য চালু না হয়ে প্রশাসনিক কাজকর্ম হয়।