তেমনই একটি রেল আবাসন। ছবি: অরুণ লোধ।
রেল আবাসনে থাকার কথা রেলকর্মীদের। কিন্তু আছেন অন্য কেউ। কারণ, ওই ব্যক্তিকে সেটি ভাড়া দিয়েছেন আবাসনটি যাঁর নামে নথিভুক্ত আছে সেই রেলকর্মী। এমনকী রেলের জমি ব্যবসার জন্য ভাড়াও দেওয়া হয়। শিয়ালদহের দক্ষিণ শাখার নুঙ্গি এবং বজবজের কয়েকটি রেল আবাসন ও সংলগ্ন জমি নিয়ে এমনই নানা অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগ, এখানে বেশ কিছু কোয়ার্টার্সে রেলকর্মীরা থাকেন না। আবার রেল আবাসন সংলগ্ন জমিতে বাঁশের খুঁটি পুতে, প্লাস্টিকের ছাউনি খাটিয়ে ভাড়ায় সাইকেল, মোটরসাইকেল রাখা হয়। সেখানে সাইকেল, মোটরসাইকেল সারানোও হয়। স্টেশনের একে বারে কাছে হওয়ায় বেশির ভাগ যাত্রী এখানেই গাড়ি রাখেন।
নুঙ্গি, বজবজ রেলস্টেশন সংলগ্ন রেলের জমির উপরেই রয়েছে চতুর্থ শ্রেণির কর্মীদের এক তলা আবাসন। তাঁদের একাংশের অভিযোগ, আগাছা, জঙ্গলে ভরে গিয়েছে আবাসনগুলি। বেশ কিছু আবাসনে কেউ থাকেন না। আবার কিছু ঘর ভাড়া দেওয়া হয়েছে। যে সব রেলকর্মীর নামে ঘর নথিভুক্ত তাঁরাই ভাড়া দিয়েছেন বলে অভিযোগ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রেল আবাসনের এক বাসিন্দার দাবি, এই সমস্যা বহু বছরের। তা ছাড়া রাতে এখানে অসামাজিক কাজকর্মও হয়। বাসিন্দাদের দাবি, বিষয়টা সকলেই জানেন। কিন্তু রেল আজ পর্যন্ত কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। স্থানীয় এক দোকানদার জানান, দীর্ঘ দিন ধরেই এই অবস্থা। রেলের জমিতে অবাধে চলা এই ব্যবসায় কেউ বাধা দিতে আসেন না।
স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, রেলের জমিতে অবৈধ ব্যবসার দখল এবং বেনামে আবাসন ভাড়া দেওয়া নিয়ে দলাদলিতে মাঝেমধ্যেই এলাকা উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। গত কয়েক বছরে সমস্যা বেড়েছে। পাশাপাশি বেড়েছে দুষ্কৃতী দৌরাত্ম্য।
পূর্ব রেলের এক আধিকারিক জানান, এ বিষয়ে প্রাথমিক রিপোর্ট দেওয়ার কাজ সংশ্লিষ্ট স্টেশন মাস্টারের। ওই দুই স্টেশনের ক্ষেত্রে কোনও রিপোর্ট কি স্টেশন মাস্টার জমা দিয়েছেন? এ বিষয়ে বার বার চেষ্টা করেও স্টেশন মাস্টার (বজবজ)-এর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। সমস্যার কথা শুনে পূর্ব রেলের ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার (শিয়ালদহ) জয়া বর্মা সিংহ বলছেন, “এখনও পর্যন্ত রেল আবাসন বেনামে দখল বা রেলের জমিতে দুষ্কৃতি দৌরাত্ম্য বিষয়ে অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখে নিশ্চয়ই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”