মৃত স্ত্রীর দেহ হাসপাতালের আউটডোরের সামনে ফেলে পালানোর অভিযোগে স্বামী-সহ শ্বশুরবাড়ির কয়েক জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। রবিবার গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটে বসিরহাট জেলা হাসপাতাল চত্বরে। পুলিশ জানায়, মৃতার নাম সিরিয়া বিবি (২৭)।
বছর ছ’য়েক আগে বসিরহাটের পিঁফা তেঁতুলতলার বাসিন্দা সিরিয়ার সঙ্গে বিয়ে হয় স্থানীয় মির্জাপুরের বাসিন্দা সাহজাহান মণ্ডলের। শুরুর দিকে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক ভালই ছিল। অভিযোগ, বিয়ের বছর খানেক পরে সিরিয়ার শ্বশুর হারু মণ্ডলের মৃত্যুর পরে স্বমূর্তি ধরেন স্বামী, শাশুড়ি-সহ পরিবারের অন্য লোকজন।
সিরিয়ার বাপের বাড়ির লোকজনের দাবি, বিয়েতে জামাইয়ের দাবি মতো কয়েক ভরির গয়না, নগদ টাকা, অন্যান্য জিনিসপত্র দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আরও টাকার দাবিতে সিরিয়াকে মারধর শুরু হয়।
গ্রামে এ নিয়ে সালিশিও বসেছিল। সেখানে স্ত্রীর উপরে অত্যাচার করবেন না কথা দিয়েছিলেন সাহজাহানরা। অভিযোগ, তারপর থেকে শুরু হয় মানসিক নির্যাতন।
পুলিশ জানায়, এরই মধ্যে সিরিয়ার দুই ছেলে হয়, সাহিল আর সাকিল। কিন্তু তার পরেও বন্ধ হয়নি নির্যাতন। সাহজাহান কাজ করেন একটি অর্থলগ্নি সংস্থায়। সেখানে পরিস্থিতি খারাপ হয়ে পড়ায় স্ত্রীর বাপের বাড়ি থেকে ৫০ হাজার টাকা দাবি করে বসেন ওই যুবক। এই নিয়ে শুরু হয় মারধর। অভিযোগ, মাঝে মধ্যে খেতে দেওয়া হত না ওই তরুণীকে।
পুলিশের কাছে দায়ের করা অভিযোগে সিরিয়ার মামা ফারিজুল ইসলাম জানান, টাকার জন্য প্রায়ই মদ্যপ অবস্থায় বাড়ি ফিরে সাহজাহান স্ত্রীকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করত। মারধর করত। ছেলেকে সাহায্য করত তার মা, বোন, দাদা। ফারিজুল জানান, রবিবার সন্ধে ৭টা নাগাদ সিরিয়া ফোন করে বলে, টাকা না দেওয়ায় শ্বশুরবাড়ির সকলে তাকে মারধর করছে। রাত ২টো নাগাদ ওই বধূ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। খবর পেয়ে ফারিজুলরা মির্জাপুরে যান। সেখানে কাউকে না পেয়ে তাঁরা পৌঁছন হাসপাতালে। সেখানে ওই বধূর দেহ দেখা যায়। সিরিয়ার শাশুড়ি মোমেনা বিবিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সাহজাহান, তাঁর দাদা বাদল এবং ননদ তনুজা বিবির খোঁজ চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।