ভোগান্তি এই রাস্তা নিয়েই। নিজস্ব চিত্র।
রাস্তা বেহাল। তাই বন্ধ হয়ে গিয়েছে যান চলাচল। প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা প্রকল্পে তৈরি হওয়া দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুরের জামতলা বাজার ও ক্যানিংয়ের হবির মোড়ের সংযোগকারী চোদ্দো কিলোমিটার দীর্ঘ ওই রাস্তাটি সংস্কারের অভাবে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। পিচ উঠে তৈরি হয়েছে বড় গর্ত, বর্ষায় যা ডোবার আকার নেয়। নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ, প্রশাসনের নানা মহলে আবেদন নিবেদন করেও কোনও কাজ হয়নি।
অথচ ওই রাস্তার উপর নির্ভরশীল হবিরমোড়, হোড়খালি, কোচিয়ামারা, পুকুরখালি, ফেরিগঞ্জ, হেরোভাঙা, গোলাবাড়ি-সহ বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ। এই সব এলাকার মানুষ বাসে বা অটো, ট্রেকারে ওই রাস্তা দিয়ে ক্যানিং স্টেশনে এসে সহজেই কলকাতা পর্যন্ত যেতে পারতেন। কিন্তু দু’মাস ধরে ওই রাস্তায় বাস, অটো, ট্রেকার চলাচল করছে না। ফলে বেশি ভাড়া দিয়ে মোটরভ্যান ও রিকশাতে যাতায়াত করতে বাধ্য হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। কিন্তু তাতেও সমস্যা মিটছে না। রাতের অন্ধকারে গর্তে উল্টে যাচ্ছে মোটরভ্যান। প্রায়ই ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটছে। সাইকেল চালানোও দুষ্কর হয়ে পড়ছে। এলাকার বাসিন্দা লিয়াকৎ আলি, হারাধন গায়েনরা বলেন, “ওই রাস্তা তৈরি হওয়ার পর থেকে আর সংস্কার হয়েছে বলে মনে পড়ে না।” এক বাসচালক বলেন, “এই রাস্তায় বাস চালিয়ে যন্ত্রাংশ এত খারাপ হচ্ছে, যে বাস চালিয়ে কোনও লাভ থাকছে না।”
কুলতলি থানার এক পুলিশ অফিসার বললেন, “কয়েক দিন আগে গণ্ডগোলের খবর পেয়ে ওই রাস্তা দিয়ে গাড়ি নিয়ে যাচ্ছিলাম। এমন সব বড় বড় গর্ত যে মাঝরাস্তায় গাড়ি খারাপ হয়ে গেল।”
দুঃসহ অভিজ্ঞতা কোচিয়ামারার প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক আসরাফ আলিরও। বাড়ি হেরোভাঙায়। জানালেন, আগে ন’টায় বাড়ি থেকে বেরোলে ১০টা থেকে সাড়ে ১০টার মধ্যে স্কুলে পৌঁছে যাওয়া যেত। এখন সাতটায় বাড়ি থেকে বেরিয়েও ঠিক সময়ে স্কুল পৌঁছনো যাচ্ছে না। ওই রুটে আগে জামতলা-বাসন্তী বাস চলত। কিন্তু বেহাল রাস্তার কারণে এখন তা বন্ধ।
স্থানীয় বাসিন্দা সিরাজুল মোল্লা, আনা ঘরামিরা জানান, সংস্কারের দাবিতে বহুবার ওই রাস্তা অবরোধও করা হয়েছে। তবুও তাতে কোনও লাভ হয়নি। প্রতিশ্রুতিই সার হয়েছে।” বারুইপুরের মহকুমাশাসক পার্থ আচার্য বলেন, “ওই রাস্তা যে খারাপ, তা আমাদের নজরে আছে। পূর্ত দফতরকে রাস্তার সংস্কারের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বর্ষার পরেই রাস্তার কাজ শুরু হবে।”