গুলি লেগে মহিলার মৃত্যুর ঘটনায় তাঁরই দেওর ও জাকে গ্রেফতার করল পুলিশ।
মঙ্গলবার রাতে ক্যানিং ১ ব্লকের ইটখোলা পঞ্চায়েতের বক্রাবনি গ্রামে নিজের বাড়ি থেকে বেরোতেই মাথায় গুলি লাগে হাসনাবানু বিবির। ক্যানিং হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরে মারা যান তিনি। ওই ঘটনায় স্থানীয় তৃণমূল নেতা পিয়ার সর্দার ও তাঁর অনুগামীদের বিরুদ্ধে এফআইআর করেন হাসনাবানুর স্বামী আব্দুল ওয়াহাব। পিয়ার পলাতক বলে জানায় পুলিশ।
পুলিশকে সে সময়ে ওয়াহাব জানিয়েছিলেন, তাঁর ভাই আব্দুর রহমানের গ্রামে একটি মেছো ভেড়ি আছে। ভেড়ির জন্য একাধিক বার বাঁধ ভেঙে নদীর জল ঢুকে এলাকা প্লাবিত হয়েছে বলে স্থানীয় মানুষের অভিযোগ। পিয়ার-সহ স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশের সঙ্গে এ সব নিয়ে ভাইয়ের মনোমালিন্য ছিল। ওয়াহাবদের পরিবারও তৃণমূল সমর্থক। তাঁর দাবি, কিছু লোক ভেড়ি বন্ধ করে দেওয়ার ছক কষছিল। সে জন্যই আক্রমণ করা হয়। রাতের অন্ধকারে গুলি চালিয়ে পালায় দুষ্কৃতীরা।
কিন্তু পুলিশের তদন্তে উঠে আসে অন্য ঘটনা। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানায়, হাসনাবানুকে খুনের ঘটনায় জড়িত রহমান ও তাঁর স্ত্রী ইসমিনা বিবি। খুনের দায় পিয়ারদের ঘাড়ে চাপিয়ে মেছো ভেড়ির অবৈধ কারবার চালিয়ে যাওয়াই ছিল তাঁদের উদ্দেশ্য। সে জন্য নিজেরাই বৌদিকে খুনের ছক কষেন। পিয়ারদের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ এনে তাঁদের এলাকা ছাড়া করার ফন্দি এঁটেছিলেন রহমান ও তাঁর স্ত্রী। দু’জনকেই বুধবার রাতে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
ওয়াহাব এখন কী বলছেন?
তাঁর কথায়, “আমি কর্মসূত্রে কলকাতায় থাকি। স্ত্রীর খুনের খবর শুনে এসেছিলাম। ঘটনার রাতে ভাই বাড়ি ছিল না। সে আমাকে জানিয়েছিল, ওর স্ত্রী রাতে শব্দ শুনে বেরিয়ে এসে দেখে, হাসনাবানু রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। কয়েক জন পালিয়ে যাচ্ছে। তাদের মধ্যে পিয়ারকে ও চিনতে পারে বলে আমাকে জানিয়েছিল। সেই মতো অভিযোগ দায়ের করি পুলিশের কাছে।” ওয়াহাবের বক্তব্য, “ঘটনা যে এ দিকে গড়াবে, তা বুঝতে পারিনি। এখন পুলিশ নিজের মতো তদন্ত করবে।” ক্যানিং ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তথা তৃণমূল নেতা পরেশরাম দাস বলেন, “পুলিশের প্রতি আমাদের আস্থা ছিল। পুলিশ তদন্তে যা পেয়েছে, সেই মতো ব্যবস্থা নিয়েছে। এ ব্যাপারে আমাদের কোনও বক্তব্য নেই।”