সাগরের বিভিন্ন ত্রাণশিবিরে বন্যাপীড়িত মানুষদের দেখতে গেলেন সুন্দরবন উন্নয়ন পর্ষদের প্রতিমন্ত্রী মন্টুরাম পাখিরা। সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় সাংসদ চৌধুরী মোহন জাটুয়া ও সাগরের বিধায়ক বঙ্কিমচন্দ্র হাজরা। শাসক দলের নেতা-নেত্রীদের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় দেখা যাচ্ছে না বলে গত সাত দিনে একাধিক বার অভিযোগ উঠেছে।
শনিবার বিকেলে সাগরের মহেন্দ্রগঞ্জ, সুমতিনগর ও কচুবেড়িয়া গ্রামের ত্রাণশিবিরগুলি ঘুরে দেখেন মন্ত্রী-বিধায়কেরা। তাঁদের সামনে পেয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা দ্রুত নদীবাঁধ সারানোর জন্য সরব হন। গ্রামবাসীদের দাবি, দ্রুত বাঁধ সংস্কারের কাজ শুরু হোক। তা না হলে ফের তাঁদের বন্যায় ভাসতে হবে।
ব্লক প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রের খবর, গত রবিবার ভরা কোটালে জোয়ারের তোড়ে মুড়িগঙ্গা, হাতানিয়া-দোহানিয়া, বটতলা ও চিনাই নদীর বাঁধ ভেঙে সাগর ও নামখানা ব্লকের বহু এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। এর ফলে বহু মাটির বাড়ি, পানের বরজ, মাছের পুকুর, চাষের জমি নোনাজলে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। ঘরছাড়া হয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ আশ্রয় নিয়েছেন ত্রাণ শিবিরে। কেউ বা নদীবাঁধে বা উঁচু কোনও স্থানে।
সাগর ব্লক প্রশাসনিক সূত্রে জানানো হয়েছে, সাগরে মোট ১১টি ত্রাণশিবির খোলা হয়েছে। তাতে আশ্রয় নিয়েছেন ৪৭২৫ জন। অন্য দিকে, নামখানায় বন্যাপীড়িত মানুষদের জন্য খোলা ২৪টি ত্রাণশিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন প্রায় সাড়ে চার হাজারেরও বেশি মানুষ। মন্ত্রী মন্টুরাম পাখিরা বলেন, “রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এখন প্রশাসনিক কাজে উত্তরবঙ্গে রয়েছেন। তা সত্ত্বেও তিনি ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায় দ্রুত ত্রাণ পাঠানোর জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। সেই মতো ওই এলাকায় খাবার, ত্রাণ, ওষুধ প্রভৃতি পাঠানো হয়েছে।”
তিনি আরও জানান, “শনিবার থেকে সাগরের ১৭টি এবং নামখানার ২৪টি জায়গায় নদীবাঁধ সারানোর কাজ শুরু হয়েছে।” প্রসঙ্গত, বন্যায় সাগরের ২৮টি জায়গায় ও নামখানার ৩৪টি জায়গায় নদীবাঁধ ভেঙে গিয়েছে বলে দুই ব্লক প্রশানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। দ্রুত যাতে নদীবাঁধের ভাঙাগুলি সারানো যায় তার জন্য তিনি সেচ দফতরের সাথে কথা বলবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।
শনিবার প্লাবিত এলাকাগুলি পরিদর্শনে যায় বিজেপির এক প্রতিনিধি দল। দলে ছিলেন বিজেপির রাজ্য কমিটির সাধারণ সম্পাদক রবীন চট্টোপাধ্যায়, জেলা কমিটির সভাপতি বিকাশ ঘোষ প্রমুখ। তাঁরা নামখানার দ্বারিকানগর গ্রামের কাছে হাতানিয়া-দোহানিয়া নদীর ভাঙন ও কয়েকটি ত্রাণশিবির ঘুরে দেখেন। জেলার সহ-সভাপতি সুফল ঘাটু বলেন, “ত্রাণশিবিরগুলিতে এখনও পর্যন্ত পর্যাপ্ত ত্রাণ পৌঁছয়নি।”
তিনি আরও বলেন, “সময় মতো বাঁধ সংস্কার হলে মানুষকে এই দুর্ভোগ পোহাতে হত না।”