প্রতিভা থাকা সত্ত্বেও উদ্যোক্তাদের টাকার অভাবে রাজ্যস্তরের অ্যাথলিট প্রতিযোগিতায় যোগ দিতে পারছে না দক্ষিণ ২৪ পরগনার বহু প্রতিযোগী। দু’দিন ব্যাপী কাকদ্বীপ স্পোর্টস কমপ্লেক্সে জেলার বার্ষিক স্কুল ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পরে এমনই ছবি উঠে এসেছে।
এ বার কোচবিহারে হচ্ছে রাজ্যের বার্ষিক স্কুল ক্রীড়া প্রতিযোগিতা। জেলা মিটের থেকে ১১টি পদক পেয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে রায়নগর ক্ষেত্রনাথ সুনীলবরণ পৌর বিদ্যালয়। কিন্তু রাজ্যের এ প্রান্ত থেকে অতটা দূরে সমস্ত প্রতিযোগীকে পাঠাতে টাকা লাগবে। সেই টাকা নেই বলে এ বার জেলা স্তরের খেলোয়াড়দের কড়া নিয়মের মাপকাঠিতে কাটছাঁট করে রাজ্য মিট-এ পাঠাচ্ছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা ক্রীড়া সংসদ। কাকদ্বীপ স্পোর্টস কমপ্লেক্সে ১২ থেকে ১৯ বছরের চারটি গ্রুপের অ্যাথলিট মিটে সব ক্যাটাগরির প্রথম হিসেবে প্রায় ৮৯ জন এমনিতেই যাবে। জেলা ক্রীড়া সংসদের কার্যনির্বাহী সহ-সভাপতি সন্দীপ কামার বলেন, ‘‘প্রতিবার ১০০ জনের বেশি প্রতিযোগীকে রাজ্য স্তরের খেলায় যোগদানের জন্য পাঠানো হয়। কিন্তু এ বার টাকা পয়সার সমস্যা রয়েছে বলে ঠিক করা হয়েছে, রাজ্যের বেঁধে দেওয়া নিয়ম অনুসারেই রাজ্য মিটে পাঠানো হবে জেলার খেলোয়াড়দের।” অর্থাৎ, খেলায় বরাবর ভাল ফল করে আসা কোনও প্রতিযোগী যদি ওই দিনের জন্য একটু খারাপ পারফর্ম করে, তা হলে তাকে রাজ্য স্তরের প্রতিযোগিতায় নেওয়া হবে না বলেই ঠিক হয়েছে। অথচ এক বছর ধরে রাজ্যস্তরের খেলায় যোগদানকে পাখির চোখ করে অনুশীলন করে প্রত্যেক প্রতিযোগী। এ বিষয়ে বারুইপুরের একটি স্কুলের খেলার শিক্ষক বলেন, “খেলার মাঠ অনুসারে খেলাধূলার একটু-আধটু ওঠাপড়া হয়। আবার শারীরিক অবস্থার উপরেও খেলাধূলা অনেকটা নির্ভর করে। তা বিচারের মাপকাঠি হলে অনেক প্রতিযোগীই এ বার রাজ্য মিটে যোগ দিতে পারবে না।”
কাকদ্বীপ স্পোর্টস কমপ্লেক্স বাম আমলে চালু হয়েছিল। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তার সীমানা ঘিরে দেওয়া সম্ভব হয়নি। মাঠের ভিতরে ভেড়া চড়ানো থেকে শুরু করে ঘুড়ি ওড়ানো সবই হয়। মাঠে ঘাসের চিহ্নমাত্র নেই। ধুলোয় চোখ ঝাপসা হয়ে যায়। এ রকম মাঠে খেলোয়াড়দের সমস্যা হতেই পারে বলে মনে করেন খেলাধূলার সঙ্গে যুক্ত অনেকেই। সমস্যার কথা স্বীকার করে জেলা ক্রীড়া সংসদের কর্তারা জানান, এই মাঠে এত ধুলোর মধ্যে জল দিলে কাদা হয়ে যাবে। সে কারণে ধুলোর মধ্যেই খেলা সম্পন্ন করতে হয়েছে। সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী মন্টুরাম পাখিরা বলেন, “স্পোর্টস কমপ্লেক্সের হাল খারাপ জানি। টেন্ডার হচ্ছে শীঘ্রই। স্টেডিয়াম থেকে শুরু করে কমপ্লেক্সের ঘর নতুন করে সারানো হবে।”
সারা বছরে খেলাধূলার জন্য জেলার বরাদ্দ মাত্র দেড় লক্ষ টাকা। তাও সেই টাকা নির্দিষ্ট সময় মেলে না বলে অভিযোগ। ব্লক স্তরের প্রতিযোগিতা থেকে শুরু করে মহকুমা এবং শেষে জেলার মিট সেরে প্রতিযোগীদের রাজ্য স্তরে পাঠানো এই টাকায় কুলোতে পারছে না জেলা ক্রীড়া সংসদ। এই টাকায় শুধু যে অ্যাথলেটিক চালাতে হয় তা নয়, জেলায় ২৮ রকমের খেলাধুলো চালানোর জন্য এতটুকু টাকা যথেষ্ট নয় বলে দাবি করছেন ক্রীড়া সংসদের অনেক সদস্যই।