এই জমি নিয়েই গোলমাল। সামসুল হুদার তোলা ছবি।
তৃণমূলের বড় নেতা বলেছেন, “ঘরে ছেলে ঢুকিয়ে রেপ করে দেব।” সেই দলেরই দুই ছোট নেতা বললেন, “অফিসে মেয়ে ঢুকিয়ে ফাঁসিয়ে দেব!”
দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং মহকুমার তালদি পঞ্চায়েতের উপপ্রধান কালীচরণ মাল, পঞ্চায়েত সদস্য মানবেন্দ্র সর্দার-সহ কয়েক জনের বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন তালদি মোহনচাঁদ হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সঞ্জয়কুমার নস্কর।
ঘটনার সূত্রপাত স্কুল চত্বরের চার শতক জমির মালিকানা নিয়ে। স্কুল ও স্থানীয় সূত্রের খবর, দিন কয়েক আগে ক্লাসরুম বাড়ানোর জন্য ওই জমিতে খোঁড়াখুঁড়ি শুরু হয়। অভিযোগ, মানবেন্দ্রবাবু লোকজন নিয়ে গিয়ে কাজে বাধা দেন। মিস্ত্রিদের মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ। মানবেন্দ্রবাবু দাবি করেন, ওই জমির মালিক তিনিই। বাধার মুখে থমকে যায় কাজ। স্কুলের প্রধান শিক্ষক সঞ্জয়কুমার নস্কর বিবাদ মেটাতে পঞ্চায়েতের দ্বারস্থ হন।
বৃহস্পতিবার সঞ্জয়বাবুকে ডাকা হয়েছিল পঞ্চায়েতে। সেখানে উপপ্রধান কালীচরণ মালের মধ্যস্থতায় আলোচনা শুরু হয়। অভিযোগ, সে সময়ে দলবল নিয়ে কালীচরণ-মানবেন্দ্ররা প্রধান শিক্ষকের উপরে চড়াও হন। তাঁকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। স্কুলের অফিস ঘরে ‘মেয়ে ঢুকিয়ে দিয়ে’ প্রধান শিক্ষককে ফাঁসিয়ে দেওয়া হবে বলেও ভয় দেখানো হয়।
শুক্রবার ক্যানিং থানায় মানবেন্দ্র, কালীচরণ-সহ ৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন সঞ্জয়বাবু। তিনি বলেন, “ওই জমি স্কুলেরই। আলোচনা সভায় আমি জমির দলিলও দেখিয়েছিলাম।” তাঁর অভিযোগ, “তার পরেও আমাকে অশালীন ভাষায় গালাগালি, প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। ওরা বলে, বেশি বাড়াবাড়ি করলে স্কুলের অফিস ঘরে মেয়ে ঢুকিয়ে দিয়ে ফাঁসিয়ে দেব।”
কালীচরণবাবুর দাবি, ওই শিক্ষককে কোনও কটূক্তি করা হয়নি। প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হয়নি। সঞ্জয়বাবুই বরং সভায় এসে চেঁচামেচি শুরু করেন। কালীচরণের কথায়, “ওই শিক্ষককে বলা হয়েছিল, ব্লক ভূমি সংস্কার দফতর থেকে জমি-সংক্রান্ত কাগজপত্রের প্রত্যয়িত নকল আনার জন্য। উনি যে দলিল দেখিয়েছিলেন সেটি পুরনো। ২০১৪ সালের পরচায় দেখা যায়, ওই জমির মালিক হিসেবে মানবেন্দ্রর নাম রয়েছে।” একই দাবি করেছেন মানবেন্দ্রবাবু নিজেও।