কর্মিসভায় ভিড় দেখে উত্‌সাহিত গৌতম দেব

এখনও আনুষ্ঠানিক ঘোষণা হয়নি। কিন্তু কর্মিসভায় এসে বনগাঁ লোকসভা উপনির্বাচনে বাম প্রার্থীর নাম জানিয়ে গেলেন দলের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদক গৌতম দেব। জানালেন এমনই এক কর্মিসভায়, যেখানে কয়েক হাজার ভিড় দেখে বুকে বল পেতে শুরু করেছে বনগাঁর বাম শিবির। বুধবার গাইঘাটার চাঁদপাড়ায় মিলন সঙ্ঘের মাঠে কমির্সভায় যোগ দেন গৌতমবাবু। ভিড় দেখে দৃশ্যতই খুশি গৌতমবাবু বলেন, “এত লোক এসেছেন। সকলে তো আসেন না। আপনারা হাটে-বাজারে গিয়ে যদি মানুষকে বোঝান, তা হলে আমাদের কেউ হারাতে পারবে না।”

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গাইঘাটা শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০১৫ ০০:২৫
Share:

তখন মেজাজে নেতা।—নিজস্ব চিত্র।

এখনও আনুষ্ঠানিক ঘোষণা হয়নি। কিন্তু কর্মিসভায় এসে বনগাঁ লোকসভা উপনির্বাচনে বাম প্রার্থীর নাম জানিয়ে গেলেন দলের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদক গৌতম দেব। জানালেন এমনই এক কর্মিসভায়, যেখানে কয়েক হাজার ভিড় দেখে বুকে বল পেতে শুরু করেছে বনগাঁর বাম শিবির।

Advertisement

বুধবার গাইঘাটার চাঁদপাড়ায় মিলন সঙ্ঘের মাঠে কমির্সভায় যোগ দেন গৌতমবাবু। ভিড় দেখে দৃশ্যতই খুশি গৌতমবাবু বলেন, “এত লোক এসেছেন। সকলে তো আসেন না। আপনারা হাটে-বাজারে গিয়ে যদি মানুষকে বোঝান, তা হলে আমাদের কেউ হারাতে পারবে না।”

এ দিন সভায় কত কর্মী উপস্থিত থাকবেন, তা নিয়ে সিপিএম নেতাদের মধ্যেও প্রাথমিক সংশয় ছিল। কিন্তু সভার পরে বেশ আত্মবিশ্বাসী দেখাল তাঁদের। বনগাঁ-বাগদা জোনাল কমিটির সম্পাদক পঙ্কজ ঘোষ তো বলেই ফেললেন, “সাম্প্রতিক সময়ে এখানে আমাদের কোনও কর্মিসভায় এত ভিড় দেখিনি। সব থেকে বড় কথা, কর্মীদের মধ্যে সেই পুরনো আবেগ ও স্বতঃস্ফূর্ততা দেখা গিয়েছে।” মাত্র দু’তিন দিনের মধ্যে সভার আয়োজন হয়েছে বলেও এ প্রসঙ্গে মনে করিয়ে দেন তিনি। সিপিএমের গাইঘাটা-বনগাঁ জোনাল কমিটির সম্পাদক রমেন আঢ্যর দাবি, এ দিনের কর্মিসভায় ৬-৭ হাজার কর্মী উপস্থিত ছিলেন। পুরনো কর্মীরাও নতুন করে আসতে শুরু করেছেন। পুলিশের হিসেবেও সংখ্যাটা ওই রকমই।

Advertisement

গত বিধানসভা ভোটের পর থেকেই বনগাঁ মহকুমায় সিপিএম কার্যত নিজেদের ‘ঘরবন্দি’ করে রেখেছে। তার কারণও রয়েছে। বিধানসভা নির্বাচনে মহকুমার চারটি আসনেই তাদের ভরাডুবি হয়েছিল। বহু নেতা-কর্মী দল ছেড়ে তৃণমূলে নাম লিখিয়েছেন। অনেকেই অন্য দলে না গেলেও বসে গিয়েছিলেন। লোকসভার পর অনেক কর্মী-সমর্থক নাম লিখিয়েছেন গেরুয়া শিবিরেও। ফলে বড় সভা বা আন্দোলন করলে মাঠ ভরবে কিনা, তা নিয়ে দলের মধ্যেই প্রশ্ন ছিল। তাই ছোট মাঠে কর্মিসভা ও সভা করা হয়েছে। গত লোকসভা ভোটের পর থেকে বনগাঁ মহকুমার মানুষ সিপিএমের মিটিং-মিছিলও তেমন দেখেননি।

দলের কর্মীদের চাঙ্গা করতে গৌতমবাবু বলেন, “গত লোকসভায় যে ভোট আপনারা পেয়েছিলেন, তার থেকে খানিকটা ভোট বাড়াতে পারলেই আপনাদের কেউ হারাতে পারবেন না।” প্রসঙ্গত, গত লোকসভা ভোটে বনগাঁ কেন্দ্রে সিপিএম প্রার্থী দেবেশবাবু পেয়েছিলেন ৪,০৪,৬১২টি ভোট। শতাংশের হিসাবে যা ৩১.৫২ শতাংশ। তৃণমূল প্রার্থী কপিলকৃষ্ণ ঠাকুর পেয়েছিলেন ৫,৫১,২১৩টি ভোট। দেবেশবাবু পরাজিত হয়েছিলেন ১ লক্ষ ৪৬ হাজার ৬০১টি ভোটের ব্যবধানে।

সিপিএম কর্মিসভায় ভিড় নিয়ে জেলা তৃণমূল সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক অবশ্য বলেছেন, “বনগাঁয় উপনির্বাচনে আমাদের সঙ্গে সিপিএমের লড়াই হবে। সিপিএমের সভায় ভিড় সে কথাই প্রমাণ করছে। এটা তো অস্বীকার করা যায় না, সিপিএমের বুথ স্তরে কর্মীরা রয়েছেন।” পাশাপাশি তাঁর কটাক্ষ, “বিজেপিকে দূরবীণ দিয়ে খুঁজতে হবে।”

কিন্তু আনুষ্ঠানিক ভাবে এখনও প্রার্থী ঘোষণা করেনি বাম শিবির। গৌতমবাবু অবশ্য বলেন, “বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রার্থীর নাম ঘোষিত হবে। তবে দেবেশকেই আমরা প্রার্থী করেছি।” সভায় গৌতমবাবু ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জেলা সিপিএম নেতা রণজিত্‌ মিত্র, বাবুল কর। দেবেশবাবুর সভায় আসার কথা থাকলেও তিনি অবশ্য আসতে পারেননি।

প্রত্যাশিত ভাবেই বিজেপি-তৃণমূলের কড়া সমালোচনা করেছেন গৌতমবাবু। তৃণমূলের ভবিষ্যত্‌ খুব খারাপ বলে মন্তব্যও করেন তিনি। সারদা প্রসঙ্গ টেনে নানা কটাক্ষ করেন। মতুয়াদের সঙ্গে বামেদের ঘনিষ্ঠতার উদাহরণ দিতে গিয়ে গৌতমবাবু জানান, প্রয়াত তৃণমূল সাংসদ কপিলকৃষ্ণ ঠাকুরের সঙ্গে তাঁদের যোগাযোগ ছিল। নিউটাউনে মতুয়া রিচার্স ফাউন্ডেশনকে জমি দেওয়া হয়। বাম সরকারের আমলে মতুয়াদের জন্য উন্নয়নের আরও নানা ফিরিস্তি দেন তিনি।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে খোঁচা দিয়ে গৌতমবাবু বলেন, “দু’তিন বছর আগেও চাঁদপাড়া, ঠাকুরনগরে ট্রেনে মমতার সমালোচনা করলে চড় খাওয়ার সম্ভাবনা ছিল। এখন প্রশংসা করলে উল্টে চড় খেতে হতে পারে। আমরা ৩৪ বছর সরকার চালিয়েছি। মমতার সাড়ে তিন বছর সরকার চালাতে গিয়েই জিভ বেরিয়ে গিয়েছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement