একশো দিনের কাজের প্রকল্পে কাজ করে টাকা না পেয়ে বৃহস্পতিবার প্রধানের বাড়িতে গিয়ে বিক্ষোভ দেখালেন শ্রমিকেরা। ভয়ে বাড়ি ছেড়ে পালান ক্যানিং পূর্ব বিধানসভা কেন্দ্রের তাম্বুলদহ ১ পঞ্চায়েতের প্রধান সুভাষ পুরকাইত ও কালীকাতলা পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান আবদুল হাই মোল্লা।
ওই প্রকল্পে কাজ করা শ্রমিকদের অভিযোগ, রমজান মাসের মধ্যে বকেয়া টাকা দিয়ে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু টাকা মেলেনি। উল্টে, টাকা চাইতে গেলে আজ-কাল করে ঘোরানো হচ্ছে। তবে ওই দুই প্রধানের বক্তব্য, সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী, ওই প্রকল্পে গ্রামে মাটি কাটা ও গাছ লাগানোর কাজ করানো হয়েছিল। বারবার ব্লক অফিসে দরবার করেও টাকা মেলেনি। দুই প্রধানের কথায়, “ক্যানিং ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিকে ব্যবস্থা করতে বলেছিলাম। টাকা দিতে না পারায় বারবার বাড়িতে এসে ঝামেলা করছে শ্রমিকেরা।” ক্যানিং ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সওকত মোল্লা জানিয়েছেন, ব্লক এলাকায় ওই প্রকল্পে প্রায় ৭ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। জেলা থেকে টাকা না আসায় টাকা দেওয়া যায়নি।
কালীকাতলার বাসিন্দা রুস্তম পেয়াদা, মনিরুল মোল্লা, তাম্বুলদহের আজিবর মোল্লা, আনার ঘরামিরা ওই প্রকল্পে কাজ করেছেন। তাঁদের অভিযোগ, “রমজান চলে গেল। ঈদও পেরিয়ে গেল। তা-ও টাকা পেলাম না আমরা। প্রধানকে বারবার বলা সত্ত্বেও পাত্তাই দেওয়া হয়নি। জানি না, কবে ওই টাকা পাব।”
শুধু ওই দুই পঞ্চায়েত এলাকা নয়, ক্যানিং ১, বাসন্তী, গোসাবা এলাকাতেও একশো দিনের প্রকল্পের টাকা নিয়ে একই অভিযোগ উঠেছে। বাসন্তী পঞ্চায়েতের প্রধান শ্রীদাম মণ্ডল জানান, শ্রমিকদের প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা বাকি। ব্লক অফিসে টাকা চেয়েও পাওয়া যাচ্ছে না। প্রায় প্রতিদিনই প্রাপ্য টাকার দাবিতে পঞ্চায়েত অফিসে এসে গণ্ডগোল করছেন শ্রমিকেরা।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সারা জেলাতেই একশো দিন প্রকল্পের কাজের প্রায় ১০০ কোটি টাকা বকেয়া পড়ে রয়েছে। কেন্দ্রের ৭৫ শতাংশ ও রাজ্যের ২৫ শতাংশ টাকা দেওয়ার কথা। রাজ্যের টাকা মিললেও কেন্দ্রের টাকা না আসায় সমস্যা তৈরি হয়েছে। মহকুমাশাসক প্রদীপ আচার্য জানান, ক্যানিংয়ে ১০০ দিনের কাজের টাকা নিয়ে সমস্যা দেখা দিয়েছে। জেলাস্তরে বিষয়টি জানানো হয়েছে। তবে জেলাশাসক ( জেলা পরিষদ) অলকেশপ্রসাদ রায় বলেন, “ওই প্রকল্পে কোনও টাকা আসছে না। তাই টাকা পাঠানোও যাচ্ছে না। টাকা এলেই সব মিটিয়ে দেওয়া হবে।”