একটি রাস্তা তৈরির দাবিতে গত মাসে ডায়মন্ড হারবারের আমিড়া গ্রামের কিছু মহিলা বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক দীপক হালদারের অফিসে। সেই বিক্ষোভে সামিল হয়ে ‘আক্রান্ত আমরা’-র অন্যতম কর্তা, স্কুলশিক্ষক মইদুল ইসলাম আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে তাঁর অফিসে ঢুকে ঝামেলা এবং তাঁকে প্রাণনাশের হুমকি দেন বলে অভিযোগ তুলেছিলেন বিধায়ক। সেই মামলায় সোমবার মইদুলের আগাম জামিন মঞ্জুর করল কলকাতা হাইকোর্ট।
এ দিন মইদুলের আইনজীবী জয়ন্তনারায়ণ চট্টোপাধ্যায় কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অসীমকুমার রায় এবং ঈশানচন্দ্র দাসের ডিভিশন বেঞ্চের কাছে তাঁর মক্কেলের জন্য আগাম জামিনের আবেদন জানান। সেই আবেদন মঞ্জুর হয়। তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া অভিযোগ প্রথম থেকেই মিথ্যা বলে দাবি করে আসছেন মইদুল। গ্রেফতারির ভয়ে কিছু দিন তিনি ষাটমনীষা গ্রামে নিজের বাড়িতেও ফেরেননি। তিনি একটি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকও। ক’দিন স্কুলেও যেতে পারেননি। মইদুল বলেন, “হাইকোর্ট আমার আবদেন মঞ্জুর করায় খানিকটা স্বস্তি পাচ্ছি। এ ভাবেই সাজানো মামলা দিয়ে বিরোধীদের বিড়ম্বনায় ফেলছে শাসক দল। প্রতিবাদ করার মাসুল দিতে হচ্ছে আমাকেও। শীঘ্রই ডায়মন্ড হারবার এসিজেএম আদালতে গিয়ে আত্মসমর্পণ করব।” মইদুলের আগাম জামিন নিয়ে এ দিন সরাসরি কোনও মন্তব্য করতে চাননি বিধায়ক। তবে, মইদুলের বিরুদ্ধে ওই অভিযোগ তিনি এ দিনও ফের তুলেছেন। তিনি বলেন, “আদালতের রায়ের উপর আমার মন্তব্য করা উচিত নয়। তবে, সে দিন মইদুল অস্ত্র নিয়েই আমার দফতরে এসে হুমকি দিয়েছিল। আইনের উপর আস্থা রেখে আইনি পথেই এর মোকাবিলা করব।”
বিধায়ক দীপকবাবুর একটি জনসংযোগ অফিস রয়েছে ডায়মন্ড হারবার শহরে। গত ১২ ফেব্রুয়ারি ডায়মন্ড হারবার-২ ব্লকের আমিড়া গ্রামের কিছু মহিলা ওই অফিসে ঢুকে তাঁদের গ্রামের রাস্তা কবে হবে, তা নিয়ে বিধায়কের জবাবদিহি চান। উভয় পক্ষের মধ্যে বাদানুবাদ এবং ঝামেলা হয়। ধস্তাধস্তিতে কাগজপত্র ছড়িয়ে-ছিটিয়ে যায়। বিধায়কের উপস্থিতিতেই মহিলাদের ঘাড়ধাক্কা দিয়ে অফিস থেকে বের করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ দায়ের হয় থানায়। পরে বিধায়ক পাল্টা মইদুল এবং কিছু মহিলার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ জানান। মহিলারা এর পরে ঝিঙেরপোলে ১১৭ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন। সেখানেও মইদুলের বিরুদ্ধে পথ অবরোধের একটি কড়া জামিনঅযোগ্য ধারা দেয় পুলিশ। বিধায়কের দায়ের করা মামলার শুনানি হওয়ার কথা ডায়মন্ড হারবার এসিজেএম আদালতে। তার আগেই কলকাতা হাইকোর্টে আগাম জামিনের আবেদন জানিয়েছিলেন মইদুল। এ দিন সেই মামলারই শুনানি হল। মইদুল এ দিনও বলেন, “ঘটনার দিন স্কুলে যাওয়ার পথে মহিলাদের মুখে অভিযোগ শুনে স্টেশনের সামনে থেকে তাঁদের নিয়ে থানায় যাই। বিধায়কের দফতরে যাইনি। কিন্তু তার পরেও গত মাসে বাড়িতে দু’বার থানায় হাজিরার নোটিস পড়ে অস্ত্র মামলার প্রেক্ষিতে।”