তৃণমূলের প্রধানের বিরুদ্ধে দলেরই পঞ্চায়েত সদস্যদের আনা অনাস্থা প্রস্তাবের ফল প্রকাশ বন্ধ হয়ে গেল হাইকোর্টের নির্দেশে।
বুধবার ক্যানিং ১ ব্লকের গোপালপুর পঞ্চায়েতের তৃণমূলের প্রধান রেবা মিত্রের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাবের উপরে ভোটাভুটি ছিল। তাঁর বিরুদ্ধে অনুন্নয়ন, স্বজনপোষণ, দুর্ব্যবহার-সহ একাধিক অভিযোগ তুলে অনাস্থা প্রস্তাব আনেন তৃণমূলেরই ৬ জন পঞ্চায়েত সদস্য। গত ২২ অগস্ট প্রশাসনের কাছে তা জমাও দেন তাঁরা। সেই মতো, এ দিন প্রস্তাবের উপরে ভোটগ্রহণের কথা ছিল। কিন্তু অনাস্থা প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন রেবাদেবী। এ দিনই হাইকোর্টের নির্দেশ এসে পৌঁছয়। মহকুমাশাসক বিডিওকে দেওয়া নির্দেশে জানান, অনাস্থা প্রস্তাবের উপরে ভোট নেওয়া বা অন্য আইনানুগ কাজ করা গেলেও ফল প্রকাশ করা যাবে না।
গত পঞ্চায়েত ভোটে গোপালপুরে ১৮টি আসনের মধ্যে তৃণমূল পেয়েছিল ৯টি আসন। সিপিএম ও এসইউসি পেয়েছিল ৪টি করে আসন। ফরওয়ার্ড ব্লক পায় একটি আসন। সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসাবে তৃণমূলই বোর্ড গড়ে। প্রধান হন রেবাদেবী। কিন্তু দলেরই ৬ জন তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা আনেন। এ দিন ভোটাভুটির সময়ে রেবাদেবী ছাড়াও এক সদস্য অনুপস্থিত ছিলেন।
বিডিও বুদ্ধদেব দাস বলেন, “সরকারি আইন মেনেই অনাস্থার উপরে ভোটাভুটির ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু ফল ঘোষণার আগেই হাইকোর্টের একটি নির্দেশ চলে আসে। সেখানে বলা হয়েছে, ফল এখনই ঘোষণা করা যাবে না। পরবর্তী শুনানিতে সব কিছু ঠিক হবে।”
সিপিএমের পঞ্চায়েত সদস্য মহাদেব পয়রা, এমদাত লস্কর, তৃণমূলের পাপিয়া মণ্ডল, আদিত্য বৈদ্যরা বলেন, “প্রধান এলাকায় একনায়কতন্ত্র চালাচ্ছেন। উন্নয়নের কোনও কাজ হচ্ছে না। উনি পঞ্চায়েত সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করে কোনও সিদ্ধান্ত নেন না। যারা মানুষের উন্নয়ন করবে, আমরা তাদের সমর্থন করব।”
রেবীদেবীর অবশ্য বক্তব্য, “আমার বিরুদ্ধে কী অভিযোগ আনা হয়েছে, তা আমি নিজেই জানি না। সেই কারণে মহামান্য আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি।”
অন্য দিকে, বিজেপি পরিচালিত জয়নগর ২ ব্লকের মায়াহাউরি পঞ্চায়েতের প্রধানের বিরুদ্ধে দলেরই কিছু সদস্য অনাস্থা প্রস্তাব এনেছেন। ১৪ আসনের এই পঞ্চায়েতে গত ভোটে বিজেপি পেয়েছিল ৮টি আসন। তৃণমূল পেয়েছিল ১টি আসন। নির্দল পেয়েছিল ২টি, এসইউসি ১ এবং সিপিএম পেয়েছিল ২টি আসন। প্রধান হন বিজেপির মিনতি গায়েন। গত ২৮ অগস্ট বিজেপির চার জন সদস্য সনৎ মণ্ডলের নেতৃত্বে প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনেন। প্রধান উন্নয়নের কাজ করছেন না, কারও সঙ্গে আলোচনা না করে একক ভাবে সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন বলে অভিযোগ ওই পঞ্চায়েত সদস্যদের। বিজেপির দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সভাপতি দেবতোষ আচার্য বলেন, “বিষয়টি কানে এসেছে। তবে দলগত ভাবে এমন ঘটনা বরদাস্ত করা হবে না। প্রয়োজনে ব্যবস্থা নেব।”