এ ছবি প্রতি দিনের। ছবি: অরুণ লোধ।
বজবজ স্টেশনে ট্রেন ঢুকেছে। কিছু ক্ষণের মধ্যেই ছাড়বে। টিকিট কাউন্টারের সামনে হট্টগোল শুরু হয়ে গেল। সবাই দ্রুত টিকিট কাটতে চাইছেন। কিন্তু সবার টিকিট পাওয়ার উপায় নেই। কারণ, এই ব্যস্ত সময়েও ছ’টি কাউন্টারের মধ্যে কয়েকটি খোলা থাকে। এর জন্য ওই সময়ে অনেকেই ট্রেন পান না। কেউ কেউ টিকিট না কেটেই ট্রেনে উঠে পড়েন।
বজবজ স্টেশনে ছ’টি টিকিট কাউন্টার রয়েছে। কিন্তু নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ, ব্যস্ত সময়েও কয়েকটি মাত্র কাউন্টার খোলা থাকে। সেগুলির সামনে লম্বা লাইন পড়ে যায়। ফলে টিকিট না পেয়ে অনেকের ট্রেন হাতছাড়া হয়ে যায়। প্রতি দিন এই ভোগান্তির শিকার হন পূর্ব রেলের শিয়ালদহ-বজবজ শাখার যাত্রীরা। এই কারণেই বজবজ স্টেশনে ২০০৯-এ ব্যাপক ভাঙচুর হয়েছিল বলে রেল সূত্রের খবর। কিন্তু তার পরেও ছবি পাল্টায়নি।
যাত্রীদের অভিযোগ, যাঁরা নিত্য যাতায়াত করেন তাঁদের ক্ষেত্রে সমস্যাটা কম থাকে। কারণ, তাঁরা টিকিট কেটে নেন। ফলে লাইনে দাঁড়ানোর দরকার হয় না। কিন্তু যাঁরা মাঝেমধ্যে যাতায়াত করেন তাঁদের ক্ষেত্রে সমস্যা হয়। এক তরুণী জানান, “ছ’টি টিকিট কাউন্টার থাকলেও বেশির ভাগ সময়ে একটি কাউন্টার খোলা থাকে। ব্যস্ত সময়েও সবগুলি খোলে না। ফলে একটুর জন্য ট্রেন হাতছাড়া হয়ে যায়।” অন্য এক যাত্রীর দাবি, সব কাউন্টার খোলা থাকলে সময়ের মধ্যেই সকলে টিকিট পেতেন।
পুজালি এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, “বাইরে থেকে দেখতে পাই ভিতরে কয়েক জন চুপচাপ বসে রয়েছেন। কেউ বা কম্পিউটার নিয়ে কাজ করছেন। ট্রেন দাঁড়িয়ে রয়েছে। বলা সত্ত্বেও কাউন্টার খোলা দূরে থাক, ফিরেও দেখে না।”
যাত্রীদের একাংশ জানান, এই শাখায় ট্রেন আসে বেশ কিছু ক্ষণ পর পর। কখনও তিরিশ মিনিট, কখনও প্রায় এক ঘণ্টা। ফলে এক বার ট্রেন চলে গেলে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়। তাই অনেক সময়েই কিছু যাত্রী বিনা টিকিটে ট্রেনে উঠে পড়েন। এর ফলে রেলেরও লোকসান হচ্ছে। তা ছাড়া তাড়াহুড়ো করে ট্রেন উঠতে গিয়ে দুর্ঘটনার আশঙ্কাও থেকে যায়। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক রবি মহাপাত্র বলেন, “যাত্রীদের অসুবিধা হোক রেল চায় না। কেন সব কাউন্টার খোলা হয় না খোঁজ নিয়ে দেখব। পাশাপাশি ওই স্টেশনে কর্মী কম আছে কি না তাও খোঁজ নিচ্ছি।”