চেষ্টা: বালতিতে করে জল এনে আগুন নেভাচ্ছেন মহিলা। —নিজস্ব চিত্র।
তৃণমূল গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে সংঘর্ষ, বোমাবাজি, বাড়ি-ঘর পোড়ানোর মতো ঘটনা ঘটেই চলেছে বাসন্তীতে। রক্তও কম ঝরেনি গত কয়েক মাসে। এ বার গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটল।
শুক্রবার বিকেলে একটি ক্লাব দখলকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষ বাধে উত্তর চুনাখালিতে। গুলি চলে। পুলিশ জানিয়েছে, নিহতের নাম মিঠুন দাস (৪০)। ঘটনার তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছেন বারুইপুর পুলিশ জেলার সুপার অরিজিৎ সিংহ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই ক্লাব যুব তৃণমূলের দখলে ছিল। সেটি দখলকে কেন্দ্র করে বাসন্তী ব্লক তৃণমূলের সভাপতি মন্টু গাজির অনুগামীদের সঙ্গে গণ্ডগোল বাধে বাসন্তী ব্লক যুব তৃণমূলের সভাপতি আমান লস্করের অনুগামীদের। বোমা-গুলি চলে। তৃণমূল কর্মী মিঠুন দাসের বুকে গুলি লাগে। দলের লোকজন তাঁকে বাসন্তী ব্লক হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। এরপরেই ক্ষিপ্ত তৃণমূল কর্মীরা স্থানীয় এক যুব তৃণমূল কর্মী লওকাত মোল্লার বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। বাসন্তী থানার ওসি অর্ধেন্দুশেখর দে সরকার, সিআই ক্যানিং রতন চক্রবর্তীর নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। ঘটনাস্থল থেকে প্রচুর গুলির খোল ও একটি একনলা বন্দুক উদ্ধার করেছে পুলিশ।
সম্প্রতি বাসন্তীতে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব থামাতে উদ্যোগী হন দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি। যুযুধান দুই গোষ্ঠীর নেতাদের ডেকে হুঁশিয়ার করা হয়। কিন্তু তারপরেও অবশ্য পরিস্থিতি বদলানোর লক্ষণ নেই।
দু’পক্ষই একে অন্যের উপরে দায় চাপিয়েছে। মন্টু বলেন, ‘‘সিপিএম-আরএসপি থেকে দলে আসা লোকজনের হাতে আক্রান্ত হচ্ছেন দলীয় কর্মীরা।’’ আমানের বক্তব্য, ‘‘ওই এলাকায় যুবর তেমন কোনও সংগঠন নেই। যুব কর্মীদের ভয় দেখিয়ে এলাকা দখল করতে ওরা সন্ত্রাস সৃষ্টি করতে চাইছে।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এ ধরনের ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না। বাসন্তীতে যারা সাংগঠনিক দায়িত্ব আছে তাদের পরিবর্তন করা হবে। এই কথা ইতিমধ্যে তাদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। পুলিশকে বলব নিরপেক্ষ তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে।’’