Sundarban

চাই শক্ত বাঁধ, নজরদারিতে এগিয়ে এলেন মহিলারা

প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, প্রতিটি আবেদনপত্র খতিয়ে দেখা হবে। তাহলে ক্ষতিপূরণ নিয়ে কোনও অভিযোগ আসবে না।

Advertisement

নির্মল বসু 

সন্দেশখালি শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০২১ ০৭:০০
Share:

নারীশক্তি: রায়মঙ্গল নদী বাঁধ মেরামতের কাজে হাত লাগিয়েছেন মহিলারা। নিজস্ব চিত্র ।

শুধু ঘর-গেরস্থলি সামলানোই নয়, এ বার বাঁধেও নজর রাখবেন মহিলারা।

Advertisement

ইয়াসে বিধ্বস্ত সন্দেশখালির আতাপুর ও মণিপুরের নদী-বাঁধ। বাঁধ সারানোর কাজ শুরু করেছেন সেচ দফতরের ঠিকাদার। সেই কাজে হাত দিয়েছেন গ্রামের মহিলারাও। তাঁরা জানালেন, ভেঙে গেলে দায়সারা ভাবে বাঁধ বাঁধা হয়। কোথাও মাটি কম ফেলা হচ্ছে কিনা, সব জায়গায় খুঁটি পোঁতা হচ্ছে কিনা— সবেতেই এ বার তাই নজর রাখা হয়েছে।

বাঁধ সারানো নিয়ে অভিযোগ প্রসঙ্গে সন্দেশখালির বিডিও অর্ণব মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বাঁধ যাতে শক্তপোক্ত হয়, তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে সেচ দফতরকে।’’

Advertisement

ইয়াসে ঘরছাড়া হতে হয়েছিল মণিপুর গ্রামের সুদেষ্ণা রপ্তানকে। রাস্তায় পলিথিনের তাঁবুতে রাত কাটাতে হয়েছিল।

সুদেষ্ণার অভিযোগ, ‘‘বাঁধ ভাঙলে দায়সারা ভাবে কাজ হয়। তাই নদীর জল বাড়লে বাঁধ ভেঙে যায়। প্রত্যেক বছর সর্বস্ব হারিয়ে রাস্তায় দাঁড়াতে হয় আমাদের। একমাত্র কংক্রিটের বাঁধ হলেই সমস্যা মিটবে।’’

আয়লায় সব থেকে বেশি ক্ষতি হয়েছিল আতাপুরের। ওই গ্রামের বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছিল। সে কথা মনে করিয়ে স্বপ্না মণ্ডল বলেন, ‘‘ফি বছর বাঁধ ভাঙার ফলে ঘরবাড়ির ক্ষতি হচ্ছে। জমি নদীগর্ভে চলে যাচ্ছে। পরিস্থিতি যে রকম, তাতে এক দিন হয় তো সুন্দরবনের মানচিত্র থেকে আমাদের এলাকা হারিয়ে যাবে। তাই দিন ও রাত এক করে শক্তপোক্ত বাঁধ বাঁধার কাজ করছি। বাঁধ সারানোর কাজে নজরদারিও করছি আমরা।’’

আয়লা, বুলবুল, ফণী, আমপান এবং ইয়াস— ২০০৯ পরবর্তী সব ঘূর্ণিঝড়েই আতাপুর এবং মণিপুরে ভেঙেছে নদী-বাঁধ।

আয়লায় আতাপুর গ্রামের বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছিল। ইয়াসে প্রাণহানি না হলেও ক্ষতি হয়েছে সেখানকার বাঁধ ও ঘরবাড়ির। ভেসে গিয়েছে ভেড়ি ও পুকুরের মাছ। আতাপুর ও মণিপুরে গিয়ে দেখা গেল, মহিলারা ভেঙে পড়া বাঁধ সারানোর কাজে হাত লাগিয়েছেন। বাঁধে মাটি ফেলার পাশাপাশি পলিথিন এবং দরমার বেড়া দিয়ে চলছে মেরামতির কাজ। বাঁধ নির্মাণের কাজে যুক্ত পারুল মণ্ডল বলেন, ‘‘গত এক সপ্তাহ ঘরে আমরা রায়মঙ্গল নদীর বাঁধের বিভিন্ন দুর্বল অংশ পলিথিন ও বাঁশের বেড়া দিয়ে মেরামত করছি।’’

প্রতিমা দাস নামে আর এক জন গ্রামবাসী বলেন, ‘‘কয়েক দিন পরেই পূর্ণিমার ভরা কটাল। প্রায়ই ঝড়-বৃষ্টি হচ্ছে। জলস্তর বাড়লে আবার নদী-বাঁধ ভেঙে বা বাঁধ উপচে গ্রামের মধ্যে জল ঢুকবে। তা আটকাতে নাওয়া-খাওয়া ফেলে হাতে হাত মিলিয়ে বাঁধ বাঁচানোর চেষ্টা করে যাচ্ছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement