সকাল ১০টায় তখন গমগম করছে বাজার। দোকানের পাশ থেকে তর্কাতর্কির শব্দ আসছিল। শুনেও গা করেননি কেউ। আচমকাই দেখা গেল, এক মহিলাকে আচমকাই ছুরি দিয়ে এলোপাথারি কোপাচ্ছে এক বৃদ্ধ।
আশপাশের লোকজন স্তম্ভিত। কেউ প্রতিবাদটুকুও করেননি। এমনকী, রক্তাক্ত অবস্থায় মহিলাকে ফেলে রেখে রক্তমাখা ছুরি হাতে বৃদ্ধ যখন হেঁটে বেরিয়ে যাচ্ছে, তখনও কেউ আটকায়নি তাঁকে। মিনিট কুড়ি ওই অবস্থায় ধুলোয় পড়ে কাতরাচ্ছিলেন মহিলা। তাঁকে তুলে নিয়ে কেউ হাসপাতালে যাবেন, সেই সাহসটুকুও দেখাননি। পরে বাজারের কুলি-মুটেরা মহিলাকে ধরাধরি করে মহিলাকে নিয়ে যান রায়দিঘি গ্রামীণ হাসপাতালে। পরে পাঠানো হয়েছে ডায়মন্ড হারবার জেলা হাসপাতালে।
শনিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে রায়দিঘি বাজারের ১ নম্বর জেটিঘাটের পাশে। অভিযুক্ত বারি মোল্লার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন জখম মহিলার আত্মীয়েরা। পুলিশ খোঁজ করছে বছর ষাটেকের বৃদ্ধ বারির।
কিন্তু কেন এমন ঘটাল ওই বৃদ্ধ?
অভিযোগ, পাঁচ সন্তান ও স্ত্রী বর্তমান থাকলেও ফের বিয়ের শখ জেগেছিল বৃদ্ধের। পাথরপ্রতিমার ওই মহিলার সঙ্গে কিছু দিন হল যোগাযোগ হয়েছিল বৃদ্ধের। স্বামীহারা মহিলার তিন ছেলেমেয়ে। মুদির দোকান চালান তিনি। রায়দিঘি পাইকারি বাজারে কেনাকাটার জন্য আসতেন তিনি। বারির ধানের দোকান। সেই সূত্রেই দু’জনের আলাপ। অভিযোগ, মাঝে মধ্যেই মহিলাকে বিয়ের প্রস্তাব দিত বারি। রাজি না হওয়ায় নানা কুপ্রস্তাবও দেয়। বিরক্ত মহিলা থানায় জানান ঘটনার কথা। পুলিশ বারিকে ডেকে ধমকধামকও দেয়। তারপরেও অবশ্য বিয়ের শখ যায়নি বারির। অভিযোগ, মহিলাকে নানা ভাবে উত্যক্ত করত সে। ওই মহিলার বোনের দাবি, ‘‘বিয়েতে রাজি না হওয়ায় ওই বুড়োটা দিদিকে খুনের চেষ্টা করেছে।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, শনিবার সকাল ১০টা নাগাদ ওই মহিলা রায়দিঘি মনিনদীর ১ নম্বর ঘাটে নেমেছিলেন। সেখান থেকেই কার্যত হাত ধরে টানাটানি করে নিজের দোকানের দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে বারি। দু’জনের কথা কাটাকাটি চলছিলই। অভিযোগ, দোকানের পাশেই ছুরি বের করে মহিলার উপরে আক্রোশ মেটাতে ঝাঁপিয়ে পড়ে বৃদ্ধ।