(বাঁ দিকে) ধৃত দুই মহিলা। ট্রলির খোঁজে পুকুরে তল্লাশি (ডান দিকে) — নিজস্ব চিত্র।
ট্রলি-কাণ্ডে পুকুর থেকে উদ্ধার হল খুনে ব্যবহৃত অস্ত্র। মঙ্গলবার সকালে মধ্যমগ্রামে সুমিতা ঘোষের খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত ফাল্গুনী ঘোষদের বাড়ির কাছে এক পুকুর থেকে ওই অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। একই সঙ্গে পাওয়া গিয়েছে একটি হাতুড়ি এবং দা, যা খুনে ব্যবহার করা হয়ে থাকতে পারে বলে অনুমান তদন্তকারীদের। তবে যে ছুরি দিয়ে মৃতদেহ কাটা হয়েছিল, সেটির খোঁজ চলছে। খোঁজ চলছে দ্বিতীয় ট্রলিটিরও।
মঙ্গলবার সকাল থেকে ধৃতদের বাড়ির কাছে একটি পুকুরে তল্লাশি চালিয়ে খুনে ব্যবহৃত বঁটিটি উদ্ধার করা হয়। সঙ্গে পাওয়া যায় একটি রক্তমাখা বিছানার চাদরও। পাশাপাশি, তল্লাশি করে ওই পুকুর থেকে উদ্ধার হয়েছে হাতুড়ি আর দা-ও। তবে ধৃতদের বক্তব্য, তাঁরা দা আর হাতুড়ি ফেলেননি। সে সব তদন্ত করে দেখছে পুলিশ।
সোমবারই ট্রলি-কাণ্ডে উঠে এসেছিল নতুন তথ্য। মধ্যমগ্রামে এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে তদন্তকারীরা লাল রঙের আরও একটি ট্রলি দেখতে পান অভিযুক্তদের হাতে। অথচ নীল রঙের বড় একটি ট্রলিতে পিসিশাশুড়ির দেহ কেটে ঢুকিয়েছিলেন ফাল্গুনীরা। তখনই প্রথম জানা যায়, একটি নয়, দু’টি ট্রলি ছিল। তদন্তকারীদের অনুমান, ওই ট্রলি ব্যাগে সুমিতার জামাকাপড় এবং অন্যান্য ব্যবহার্য সামগ্রী থাকতে পারে। ধৃতদের জেরা করে জানা গিয়েছে, বড় ট্রলিতে সুমিতার দেহ ভরে গঙ্গায় ফেলতে যাওয়ার আগে দ্বিতীয় ট্রলিটি নিয়ে বেরিয়েছিলেন তাঁরা। তার পর ট্রলিটি পুকুরে ফেলে দিয়েছিলেন। ফেলেছিলেন খুনে ব্যবহৃত বঁটি আর ছুরিটিও। তবে বঁটিটি পাওয়া গেলেও ছুরি এখনও উদ্ধার হয়নি। পুলিশের সন্দেহ, ওই বঁটি আর ছুরি দিয়েই সুমিতার দেহ কেটেছিলেন তাঁরা। পুকুরে ডুবুরি নামিয়ে ছুরির খোঁজ চলছে। খোঁজ চলছে ট্রলিরও।
মধ্যমগ্রামে সুমিতাকে খুন করে তাঁর দেহ খণ্ড খণ্ড করে কেটে ট্রলি ব্যাগে ভরা হয়েছিল। গত সপ্তাহের মঙ্গলবার সেই ট্রলিটি গঙ্গায় ভাসাতে গিয়েছিলেন ফাল্গুনী এবং আরতি। কিন্তু কুমোরটুলির অদূরে গঙ্গার ঘাটে তাঁদের ধরে ফেলেন স্থানীয়েরা। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্তদের বয়ানে নানা অসঙ্গতি রয়েছে। ফাল্গুনী ও তাঁর মা আরতি— দু’জন দু’রকম কথা বলছেন। আদালতের নির্দেশে ধৃতদের হেফাজতে নেওয়ার পর থেকেই দু’জনকে টানা জেরা করতে শুরু করেন তদন্তকারীরা। পুরো ঘটনা পুনর্নির্মাণের জন্য দুই অভিযুক্তকে ঘটনাস্থলে নিয়ে যাওয়া হয়। তার পর ফাল্গুনী ও আরতির বয়ান অনুযায়ী ঘটনাস্থল থেকে কিছুটা দূরে একটি পুকুরে ডুবুরি নামিয়ে শুরু হয় তল্লাশি। ঘণ্টাখানেকের তল্লাশির শেষে সেখান থেকেই বঁটির খোঁজ মেলে।