বৈধ ভারতীয় পাসপোর্ট-ভিসা নিয়ে বাংলাদেশ থেকে পেট্রাপোল বন্দর হয়ে এ দেশে ঢোকার সময় কয়েক কোটি টাকার মাদক-সহ আন্তর্জাতিক মাদক পাচার চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করলেন শুল্ক দফতরের কর্তারা।
শুক্রবার বিকেলে সেলিম মল্লিক এবং শেখ সামি মইন নামে ওই দু’জনকে ধরা হয়। দু’জনেরই বাড়ি খিদিরপুরে। পেট্রাপোল শুল্ক দফতরের সহকারী কমিশনার শশীকান্ত কুমার জানিয়েছেন, ধৃতদের কাছ থেকে ৭ কেজি ৮০০ গ্রাম মাদক আটক করা হয়েছে। উদ্ধার হওয়া মাদক হেরোইন না কোকেন তা জানতে নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো’র (এনসিবি) কর্তারা নমুনা সংগ্রহ করেছেন। এনসিবি সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতি কেজি হেরোইনের বাজারদর এক কোটি টাকা এবং প্রতি কেজি কোকেনের দাম চার কোটি টাকা। তদন্তকারীদের দাবি, ধৃতেরা আন্তর্জাতিক মাদক পাচার চক্রের পাণ্ডা। তাদের সঙ্গে হংকংয়ের একটি পাচার চক্রের যোগাযোগ রয়েছে। ধৃতরা ঢাকার একটি হোটেলে ছিল। সেখান থেকে বেনাপোল হয়ে ভারতে ঢোকে। কলকাতার নিউ মার্কেট এলাকায় ওই মাদক পাচার করার কথা ছিল। ধৃতদের শনিবার বারাসত জেলা আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক দু’জনকেই ১৪ দিন জেল-হাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
শুল্ক দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার তাদের কাছে খবর আসে পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে মাদক পাচার হতে চলেছে। সেই মতো পেট্রাপোলের শুল্ক দফতরের সুপারিটেন্ডেন্ট বিধানচন্দ্র ঘোষের নেতৃত্বে একটি দল বন্দরে ওৎ পাতে। বিকেল চারটে নাগাদ প্রথমে বছর চৌত্রিশের সেলিমকে ধরা হয়। তার ট্রলি ব্যাগে জামাকাপড়ের নীচে কালো প্লাস্টিকে মোড়া মাদক ছিল। তার আধ ঘণ্টা পরে ধরা হয় বছর চব্বিশের সামিকে। সাম্প্রতিক সময়ে পেট্রাপোল বন্দরে সোনার বিস্কুট এবং সোনার বাট পাচার চক্রের সন্ধান মিলেছে। গ্রেফতারও হয় কিছু পাচারকারী। কয়েক বছর আগেও বনগাঁতে হেরোইন পাচারের রমরমা ছিল। পুলিশ, শুল্ক দফতর এবং এনসিবি-র লাগাতার তল্লাশি ও ধরপাকড়ের জেরে পরে তা অনেকটাই বন্ধ হয়। কিন্তু বন্দর দিয়ে মাদক পাচার যে পুরোপুরি নির্মূল করা যায়নি, এ দিনের ঘটনায় তার প্রমাণ মিলল।