ঠাসাঠাসি: শীতবস্ত্র নিতে এ ভাবেই রওনা দিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। মঙ্গলবার সামসেরনগরে। —নিজস্ব চিত্র
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সামসেরনগর থেকে বারাসত রুটে বাসের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিয়েছেন। এলাকার বিধায়কের অনুরোধেই তিনি এ কথা বলেন।২০২০ সাল নাগাদ সরকারি ভাবে সামসেরনগর থেকে বারাসত এবং সন্দেশখালি থানার শিথলিয়া থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত একটি বাস রুট চালু করা হয়।
যদিও স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, সামসেরনগর থেকে যে বাস পরিষেবা চালু হয়েছিল, তা গত কয়েক মাস ধরে চলছিল না। মুখ্যমন্ত্রীর সফরের আগে কয়েকদিন ধরে ফের বাস চলতে শুরু করেছে। তবে বাসের সংখ্যা মাত্র একটি।অন্য দিকে, শিথলিয়া-ধর্মতলা রুটের বাস চলাচলও বেশ কয়েক মাস ধরে বন্ধ।
এ বিষয়ে হিঙ্গলগঞ্জের বিধায়ক দেবেশ মণ্ডল জানান, সভায় মুখ্যমন্ত্রী চিঠি লিখে বিষয়টি বিস্তারিত ভাবে জানাতে বলেছেন। সামসেরনগর-বারাসত রুটে আরও দু’টি বাস চালু করার জন্য তিনি চিঠিতে জানাবেন বলে আশ্বাস দেন। এ ছাড়া, হেমনগর থেকে বারাসত পর্যন্ত একটি বাস রুট চালু করার কথাও তিনি বলবেন বলে জানান। বিধায়ক জানান, শিথলিয়া থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত যে বাস রুট রয়েছে, সেখানে ফের বাস চালানো দরকার, বাসের সংখ্যা বাড়িয়ে দু’টি করারও প্রস্তাব দেওয়া হবে। শিথলিয়া থেকে হাসনাবাদের রাস্তার সংস্কারের বিষয়েও জানাবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন বিধায়ক।প্রতি বছর শীতকালে বহু পর্যটক সামসেরনগরে আসেন। স্থানীয় পর্যটন ব্যবসায়ীদের দাবি, সামসেরনগর থেকে দুলদুলি পর্যন্ত প্রায় ২৬ কিলোমিটার পিচের রাস্তাটি সরু, অবস্থাও খারাপ। গাড়ি চলাচলে বেশ সমস্যা হয়। বিকেল হয়ে গেলে সামসেরনগর থেকে দুলদুলি যাতায়াত খুবই কঠিন হয়ে পড়ে। এই রুটে কোনও অটো বা যাত্রিবাহী গাড়ি পাওয়া যায় না। পরিবহণ ব্যবস্থা ও রাস্তার উন্নতি হয়নি বলে পর্যটন ব্যবসার ক্ষতি হচ্ছে বলে মত ব্যবসায়ীদের।
মঙ্গলবারের সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী এলাকার বাসিন্দাদের পরামর্শ দেন, বাড়িতে একটি ঘরে হোম স্টে চালু করতে। এলাকার একটি হোম স্টে-র তরফে সুভাষ মণ্ডল বলেন, “সামসেরনগরে রাস্তার উন্নতি ও বেশি সংখ্যক বাস চালানো খুবই দরকার। তা হলে আরও বেশি সংখ্যক পর্যটক আসবেন। এলাকায় মোবাইলের নেটওয়ার্কও দুর্বল। গ্রামে পানীয় জলেরও সমস্যা রয়েছে। সে কারণে শহরের মানুষ গ্রামে এসে সমস্যায় পড়েন।”
কালীতলার একটি হোম স্টে-র মালিক মিনতি মণ্ডল বলেন, “বাস পরিষেবা বাড়লে যাঁদের গাড়ি নেই তাঁরাও খুব সহজে অল্প খরচে শহর থেকে সুন্দরবনের এই গ্রামে আসতে পারবেন। এলাকায় যদি ইকো পার্ক গড়ে তোলা যায়, তা হলে পর্যটকেরা এখানে আসতে আরও বেশি আগ্রহী হবেন।”
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, এখন এলাকায় পর্যটকদের জন্য জঙ্গল ছাড়া আকর্ষক কিছু নেই। সামসেরনগর থেকে কালীতলা পর্যন্ত যে রাস্তা সুন্দরবনের জঙ্গলের পাশ দিয়ে গিয়েছে, সেখানে আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা হলে গ্রামের রাস্তা আর অন্ধকারে ঢেকে থাকবে না।সামসেরনগরের ব্যবসায়ী পবিত্র মণ্ডল ও কালীতলা বাজারের এক হোম স্টে-র মালিক আব্দুল গাজির মতে, এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হলে বেশি পর্যটক আসবেন। তাতে ব্যবসা বাড়বে।