প্রতীকী ছবি।
বছরের প্রথম দিনেই শোকের ছায়া নেমে এল সুন্দরবনের মৎস্যজীবী মহল্লায়। মাছ ও কাঁকড়া ধরতে গিয়ে বাঘের হানায় প্রাণ হারালেন গোসাবার এক মৎস্যজীবী
স্থানীয় সূত্রের খবর, বিনা অনুমতিতে গোরাবান্দার জঙ্গলে গিয়েছিলেন তিন মৎস্যজীবী। সেখানেই বাঘের হামলার মুখে পড়েন তাঁরা। দুই সঙ্গীর চোখের সামনে থেকেই তাঁদের সঙ্গী প্রশান্ত মণ্ডলকে (৪০) বাঘ টেনে নিয়ে যায়। সুন্দরবন ব্যাঘ্রপ্রকল্প কর্তৃপক্ষ সূত্রের খবর, গোসাবার লাহিড়িপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের দশ নম্বর চরঘেরির বাসিন্দা প্রশান্তের দেহের সন্ধানে জঙ্গলে তল্লাশি চালানো হয়েছে। কিন্তু এখনও সন্ধান মেলেনি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েকদিন আগে এলাকার মৎস্যজীবী হরেকৃষ্ণ মণ্ডল এবং গৌতম বিশ্বাসকে সঙ্গে নিয়ে একটি নৌকাতে নদী-খাঁড়িতে মাছ-কাঁকড়া ধরতে রওনা দিয়েছিলেন প্রশান্ত। বৃহস্পতিবার বাগমারা রেঞ্জের গোরাবান্দা জঙ্গল লাগোয়া খাঁড়িতে মাছ ধরছিলেন তিন জন। তবে মাছ ধরতে ধরতে দুই সঙ্গীর থেকে কিছুটা দূরে চলে যান প্রশান্ত। আচমকা পাশের জঙ্গল থেকে একটি বাঘ বেরিয়ে এসে তাঁর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। সঙ্গীরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই তাঁকে ধরে জঙ্গলের দিকে এগিয়ে যায় বাঘ। বিষয়টি বুঝতে পেরেই দুই সঙ্গী লাঠি নিয়ে এগিয়ে যান। কিন্তু ততক্ষণে মৎস্যজীবীকে নিয়ে বাদাবনের গভীরে চলে গিয়েছে বাঘ।
প্রশান্তের দুই সঙ্গী প্রায় সাত ঘণ্টা নৌকা চালিয়ে শুক্রবার সকালে গ্রামে ফেরেন। বাঘে তুলে নিয়ে যাওয়ার খবর জানানো হয়, নিখোঁজ মৎস্যজীবীর বাড়িতে। খবর চাউর হতেই এলাকার বাসিন্দারা ভিড় জমান। ঘটনার কথা জানানো হয় বন দফতেও। সুন্দরবন ব্যাঘ্রপ্রকল্প কর্তৃপক্ষ নিখোঁজ মৎস্যজীবীর খোঁজে জঙ্গলে তল্লাশি চালানোর কথা জানান। তবে গভীর জঙ্গলে মাছ ধরার অনুমতিপত্র না থাকার সত্ত্বেও তিন মৎস্যজীবী কী ভাবে জঙ্গলে গিয়েছিলেন তা খতিয়ে দেখছে বনদফতর। প্রশান্তের উপার্জনের উপরেই নির্ভরশীল ছিলেন তাঁর স্ত্রী ও দুই মেয়ে। এই পরিস্থিতিতে পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর কথা জানিয়েছে, স্থানীয় লাহিড়িপুর পঞ্চায়েত।