Halisahar

পুরসভায় হাতাহাতি বাধল কাউন্সিলরদের, জখম হলেন তিন জন

কল্পনা বিশ্বাস নামে এক কাউন্সিলরকে ভর্তি করা হয়েছে কল্যাণী জেএনএম হাসপাতালে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হালিশহর শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০১৮ ০২:১৭
Share:

হালিশহর পৌরভবন। —ফাইল চিত্র।

কাউন্সিলরদের হাতাহাতিতে সোমবার ধুন্ধুমার বাধল হালিশহর পুরসভায়। তিন জন কাউন্সিলর জখম হন বলে অভিযোগ। কল্পনা বিশ্বাস নামে এক কাউন্সিলরকে ভর্তি করা হয়েছে কল্যাণী জেএনএম হাসপাতালে।

Advertisement

তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে গত কয়েক মাস ধরেই গোলমাল চলছে এই পুরসভায়। এ দিন দু’পক্ষই বীজপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূল সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘‘ঘটনার কথা শুনেছি। দু’পক্ষকেই সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। দু’এক দিনের মধ্যে সকলকে নিয়ে বসব। শেষবারের মতো সাবধান করে দেওয়া হবে। তারপরেও একই ঘটনা ঘটলে, দলের সঙ্গে কথা বলে চূড়ান্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

এই ঘটনায় ভাটপাড়ার বিধায়ক অর্জুন সিংহ পুরপ্রধান অংশুমান রায়ের বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগের আঙুল তুলেছেন। সে কথা অবশ্য মানতে চাননি পুরপ্রধান।

Advertisement

মাস দু’য়েক আগে হালিশহর পুরসভার ১১ জন তৃণমূল কাউন্সিলর দলেরই পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনেন। দলের নেতৃত্বের হস্তক্ষেপে সমস্যা কোনও রকমে তখনকার মতো ধামাচাপা দেওয়া গেলেও, সমস্যা যে পুরোপুরি মেটানো যায়নি, এ দিনের ঘটনা তারই প্রমাণ।

কী ঘটেছে সোমবার?

পুরসভার দুই চেয়ারম্যান পারিষদ মৃত্যুঞ্জয় দাস, জিয়ারুল হক-সহ ৬ জন কাউন্সিলর এ দিন বেলা দেড়টা নাগাদ পুরসভায় যান। তার মধ্যে দু’জন মহিলা কাউন্সিলরও ছিলেন। এঁরা সকলেই অনাস্থা প্রস্তাবে সই করেছিলেন। কাউন্সিলর কল্পনা বিশ্বাস পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন, তাঁরা পুরসভার এগজিকিউটিভ অফিসারের ঘরে গিয়েছিলেন ডেঙ্গি-সংক্রান্ত আলোচনার জন্য। সে সময়ে পুরপ্রধান অংশুমান সেখানে এসে গালাগালি শুরু করেন। প্রতিবাদ করলে কয়েক জন বহিরাগতকে দিয়ে তাঁদের মারধর করা হয়।

অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে অংশুমান বলেন, ‘‘দুপুরে আমি খবর পাই, কয়েক জন কাউন্সিলর বিভিন্ন ঘরে গিয়ে কর্মী ও আধিকারিকদের হুমকি দিচ্ছেন। নানা রকম কাজের জবাবদিহি চাওয়া হচ্ছে। আমি সেখানে গেলে আমাকে এবং কর্মীদেরও গালিগালাজ করা হয়।’’ তাঁর দাবি, তিনি এবং পুরকর্মীরা প্রতিবাদ করায় তাঁদের মারধর করা হয়েছে।

মুকুল রায় তৃণমূলে থাকার সময়ে হালিশহর পুরসভা তিনি এবং তাঁর পুত্র, বীজপুরের বিধায়ক শুভ্রাংশু রায়ের নিয়ন্ত্রণে ছিল। সে সময়ে মুকুল-শুভ্রাংশু ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত উপ পুরপ্রধান রাজা দত্তের হাতেই মূলত পুরসভার রাশ ছিল। পরে জনরোষে এলাকা ছাড়েন রাজা। এক সময়ে দল ছাড়েন মুকুল।

তারপর থেকেই হালিশহরের দখল নিয়ে শুরু হয় নেতাদের লড়াই। শিল্পাঞ্চলের দুই বিধায়ক পার্থ ভৌমিক এবং অর্জুন সিংহের অনুগামীদের মধ্যেই এলাকার দখল নিয়ে আকআকচি চলে বলে জানাচ্ছে তৃণমূলেরই একটি অংশ।

২৪ আসনের পুরসভায় সব ক’টি আসনই তৃণমূলের দখলে। যে কাউন্সিলরেরা এ দিন পুরসভায় এসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে অভিযোগ, তাঁরা ভাটপাড়ার বিধায়ক অর্জুনের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। অন্য দিকে, অংশুমানেরা পার্থ-ঘনিষ্ঠ।

এ দিনের গোলমালের ঘটনা নিয়ে অর্জুন বলেন, ‘‘পুরপ্রধান দুষ্কৃতীদের ডেকে কাউন্সিলরদের মারধর করিয়েছেন। দলের উপর মহলে বিষয়টি জানানো হয়েছে।’’ অন্য দিকে পার্থর বক্তব্য, ‘‘বিষয়টি দল দেখছে। নিশ্চয়ই কোনও সমাধান সূত্র বেরোবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement