সাঁকোর এই অবস্থায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল। নিজস্ব চিত্র।
জনা পঞ্চাশ ছেলেমেয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে এলাকা থেকে। পরীক্ষা কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য তাদের অন্যতম ভরসা, খালের উপরে ভাঙাচোরা সাঁকো। পরীক্ষার মরসুমে হঠাৎই সেই সাঁকো ভেঙে পড়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। গ্রামবাসীরাই স্বেচ্ছাশ্রমে সাঁকো মেরামত করে পরীক্ষার্থীদের জন্য পথ তৈরি করে দিলেন।
উস্তির মগরাহাট ১ ব্লকের লক্ষ্মীকান্তপুর পঞ্চায়েতে উত্তর ও দক্ষিণ বামনা সংযোগকারী বড়খালের উপরে একটি কাঠের সাঁকো রয়েছে। বহু বছর আগে কংক্রিটের সেতু ভেঙে পড়ার পরে সেচ দফতর থেকে এই সাঁকোটি করে দেওয়া হয়েছিল। প্রায় ৬০ ফুট চওড়া খালের উপরে ওই সাঁকোর দীর্ঘ দিন কোনও পাকাপাকি সংস্কার হয়নি বলে অভিযোগ। এত দিন নড়বড়ে সাঁকো দিয়েই পারাপার চলছিল। সাঁকোটি ব্যবহার করে ডায়মন্ড হারবার-শিয়ালদহ শাখার বাহিরপুয়া স্টেশনে আসেন বহু মানুষ। সাঁকোর উপরে আলোর ব্যবস্থা নেই। ফলে সন্ধের পরে পারাপার বিপজ্জনক হয়ে যায়। সাঁকোটি সংস্কারের জন্য পঞ্চায়েত-প্রশাসনকে বহু বার জানিয়েও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
শনিবার ভোরবেলা মাছ বোঝাই একটি মোটর ভ্যান সাঁকোটি দিয়ে পারাপারের সময়ে মাঝামাঝি অংশে এসে সাঁকো ভেঙে ভ্যানটি খালে পড়ে যায়। জখম হন ভ্যান চালক।
এই ঘটনার পরে এলাকার মড়াপাই, সপ্তগ্রাম ও মগরাহাট হাইস্কুলের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা বিপাকে পড়ে। দুশ্চিন্তা শুরু হয়, কী করে পরীক্ষা দিতে যাবে তারা। ঘুরপথে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছতে এক-দেড় ঘণ্টা বেশি সময় হাতে নিয়ে বাড়ি থেকে রওনা হতে হত।
পরিস্থিতি সামাল দিতে এগিয়ে আসেন কিছু গ্রামবাসী। তাঁরা চাঁদা তুলে পেরেক-দড়ি কিনে সাঁকো মেরামতিতে হাত লাগান। কয়েক ঘণ্টার চেষ্টায় সাঁকো সারানো হয়।
সাঁকো সংস্কারের কাজে হাত লাগিয়েছিলেন আনোয়ার হোসেন মোল্লা, মোস্তাকিন মোল্লা, রাজু শেখেরা। তাঁরা জানান, পরীক্ষার্থীদের কথা ভেবেই তড়িঘড়ি বাঁশ কেটে তালিতাপ্পি দিয়ে সাঁকো সারানো হয়েছে। পঞ্চায়েত, ব্লক প্রশাসন ও বিধায়ককেও বিষয়টি জানানো হয়েছে।
মগরাহাট ১ বিডিও ফতেমা কাওসার বলেন, “বাস্তুকারকে পাঠানো হয়েছে। সেচ দফতরকেও জানানো হয়েছে। তাঁদের আধিকারিকেরা পরিদর্শন করেছেন। দ্রুত সেতু তৈরির কাজ শুরু হবে।”