দূষণ: জলযান থেকে বেরিয়ে তেল মিশছে নদীর জলে। নিজস্ব চিত্র।
নদী-খাঁড়িতে লঞ্চ-ভুটভুটির দাপটে বাড়ছে দূষণের মাত্রা। ক্ষতি হচ্ছে সুন্দরবনের। এমনটাই দাবি পরিবেশবিদদের। এ ব্যাপারে প্রশাসনিক ভাবে পদক্ষেপ করা হচ্ছে না বলেই অভিযোগ।
গত কয়েক বছরে সুন্দরবনে বেড়েছে ম্যানগ্রোভ নিধন, আইন ভেঙে নদীর চরে গজিয়ে উঠেছে হোটেল-রিসর্ট। হু হু করে বেড়েছে জলযানের সংখ্যা। প্রচুর লঞ্চ, ভুটভুটি নেমে পড়েছে সুন্দরবনে নদী-খাঁড়িতে।
যন্ত্রচালিত এই সব জলযানের আওয়াজ এবং ধোঁয়ায় বাড়ছে দূষণ। পরিবেশবিদদের দাবি, প্রভাব সরাসরি পড়ছে সুন্দরবনের জীবজগতের উপরে।
স্থানীয় সূত্রের খবর, সুন্দরবন জুড়ে শুধু পর্যটনে ব্যবহার হচ্ছে চারশোরও বেশি ভুটভুটি। লঞ্চ বা অন্য জলযানও রয়েছে কয়েকশো। এই ভুটভুটি বা লঞ্চগুলিই পর্যটকদের নিয়ে বিভিন্ন নদী, খাঁড়ির ভিতরে যায়। অভিযোগ, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দূষণ নিয়ন্ত্রণের শংসাপত্র ছাড়াই চলছে জলযানগুলি।
পেট্রল, ডিজেলের পরিবর্তে অনেক ক্ষেত্রে ব্যবহার হচ্ছে কাটাতেল। যার ফলে দূষণের মাত্রা আরও বাড়ছে। অভিযোগ, এই সব জলযান থেকে জ্বালানি নির্গত হয়ে মিশছে জলে।
পরিবেশবিদ সুভাষ দত্ত বলেন, “দিনের পর দিন জলযানের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। পর্যটনের নামে সুন্দরবনের নদী-খাঁড়িতে এগুলি ঢুকে পড়ছে। প্রবল শব্দে জঙ্গলের স্বাভাবিক পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। ইঞ্জিনের কালো ধোঁয়া ও জ্বালানি তেল মিশছে পরিবেশে। এগুলিকে অবিলম্বে নিয়ন্ত্রণ করা উচিত।”
সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের এক আধিকারিক বলেন, “সরকারি নির্দেশ মেনেই পর্যটনের জন্য ভুটভুটি ও লঞ্চের অনুমতি দেওয়া হয়। সুন্দরবনের শুধুমাত্র বাফার জ়োনেই পর্যটনের অনুমতি দেওয়া হয়। কোর এলাকায় পর্যটকদের প্রবেশের অনুমতি নেই।”
সুন্দরবন ট্যুরিস্ট বোট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সিরাজউদ্দিন মোল্লা বলেন, “পর্যটকদের আমরা শুধুমাত্র সেই এলাকাতেই নিয়ে যাই, যেখানে সরকারি অনুমতি রয়েছে। সমস্ত নিয়ম মেনেই চলি। এটাই আমাদের জীবিকা।”
সুন্দরবন পিউপল ওয়াটার সোসাইটির সম্পাদক উপানন্দ বৈদ্য বলেন, “সারা বছরের মধ্যে মাত্র চার মাস পর্যটনের মরসুম চলে। এই সামান্য সময়ে সমস্ত সরকারি নির্দেশ মেনেই আমরা লঞ্চ চালাই। প্রতি বছরই লঞ্চের ইঞ্জিন পরীক্ষা করা হয়।” (শেষ)