Panihati Municipality

অচলাবস্থা নিয়ে তদন্ত চাইছেন খোদ পানিহাটির পুরপ্রধানই!

শতাব্দী-প্রাচীন পানিহাটি পুরসভায় তৃণমূলের পুরপ্রধান মলয় রায় শনিবার বলেন, ‘‘পানিহাটি জুড়ে যা চলছে, তা প্রকাশ্যে আসা প্রয়োজন। সরকার তদন্ত করুক। তাতেই বোঝা যাবে, আসলে কে দায়ী। আমি কেন দায় নেব?”

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পানিহাটি শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০২৪ ০৬:৩৪
Share:

পানিহাটি পুরসভা। —ফাইল চিত্র।

বিরোধীরা নয়, পানিহাটি পুরসভার অচলাবস্থা নিয়ে এ বার তদন্তের দাবি তুললেন খোদ পুরপ্রধানই।

Advertisement

শতাব্দী-প্রাচীন পানিহাটি পুরসভায় তৃণমূলের পুরপ্রধান মলয় রায় শনিবার বলেন, ‘‘পানিহাটি জুড়ে যা চলছে, তা প্রকাশ্যে আসা প্রয়োজন। সরকার তদন্ত করুক। তাতেই বোঝা যাবে, আসলে কে দায়ী। আমি কেন দায় নেব?’’ ২০২২-এ তিনি পুরপ্রধান হওয়ার পরে কেউ বা কয়েক জন সমান্তরাল প্রশাসন চালিয়ে তাঁকে সমস্যায় ফেলেছেন বলে অভিযোগ মলয়ের। তাঁদের পরিচয় খোলসা না করলেও ভোটের প্রাক্কালে পুরপ্রধানের এ হেন মন্তব্য শাসকদলকে অস্বস্তিতে ফেলবে বলেই মত রাজনৈতিক শিবিরের। বিরোধী দলের নেতারা বলছেন, ‘‘এত দিন আমরা বলছিলাম। এ বার পুরপ্রধানই অভিযোগ করছেন।’’

প্রায় চার মাস পানিহাটি পুরসভায় বোর্ড মিটিং হয়নি। পানীয় জল, রাস্তা, জঞ্জাল অপসারণ, আলো-সহ সব রকমের নাগরিক পরিষেবা নিয়ে তিতিবিরক্ত বাসিন্দারা। পুরসভার বিদ্যুৎ ও টেলিফোনের বিল এখনও বকেয়া, অস্থায়ী কর্মীদের বেতন দিতে ব্যাঙ্কের তহবিলে হাত পড়েছে, পুর হাসপাতালগুলি বন্ধ হওয়ার মুখে। বকেয়া প্রায় ১৫ কোটি টাকা না পাওয়ায় কাজ করতে নারাজ ঠিকাদারেরা। এই অচলাবস্থার জন্য শাসকদলের পুরপ্রতিনিধিদের প্রায় সকলেই পুরপ্রধান বদলের দাবি জানিয়ে দলকে চিঠি দেন। কিন্তু মলয়ের দাবি, বোর্ড মিটিং না হওয়ার নির্দিষ্ট কারণ নেই। ৩৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৩৩টি শাসকদলের দখলে। সেখানে অন্তত ১৫ জন মহিলা, যাঁরা আগে রাজনীতি করেননি। তিনি বলেন, ‘‘দলের সিদ্ধান্ত মতো পুর নির্বাচনের টিকিট দিয়েছেন বিধায়ক। সেই মতো ওঁরা টিকিট পেয়ে জিতে এসে বিধায়কের লোক হয়েছেন।’’ তা হলে কি অচলাবস্থার জন্য পরোক্ষ ভাবে পানিহাটির বিধায়ক নির্মল ঘোষকে দুষছেন? মলয় বলেন, ‘‘কারও নামে বলছি না। তদন্ত হলেই সব স্পষ্ট হবে।’’

Advertisement

ঠিকাদারদের বকেয়ার বিষয়েও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে মলয়ের দাবি, ২০১৮ সালে পানিহাটি পুরসভায় প্রশাসক বসানো হয়। ২০১৯-এ লোকসভা ও ২০২১-এ বিধানসভা ভোটের আগে পুরসভার বিভিন্ন কাজ বাবদ বকেয়া রয়েছে ১৫ কোটি টাকা। মলয়ের অভিযোগ, ‘‘ওই সমস্ত কাজের কাগজপত্রের ঠিক নেই, টেন্ডার ডাকা হয়নি। কে কাজ করিয়েছেন, স্পষ্ট নয়। ওই টাকার দায় আমি নেব না।’’ তবে তিনি পুরপ্রধান হওয়ার পরে যে ক’টি কাজ হয়েছে, তার বিল দেওয়া হয়েছে বলে দাবি তাঁর।

রামচন্দ্রপুর ভাগাড়ে আবর্জনা ফেলতে খোদ সাংসদ সৌগত রায় বারণ করায় ভাগাড়-বিরোধী আন্দোলন তীব্রতর হয়েছে বলে দাবি মলয়ের। গরমে পানিহাটিতে জলসঙ্কটের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘‘গোটা বিষয়টি অন্ধকারে রয়েছে। ওই বিভাগে থাকা এক জন ইঞ্জিনিয়ারই রাস্তা, আলো সব বিষয় দেখেন। কেউ নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে দলকে ব্যবহার করে বিভিন্ন অপচেষ্টা চালাচ্ছেন।’’

অচলাবস্থার কথা মেনে নিয়ে তৃণমূল বিধায়ক নির্মল বলেন, ‘‘পুরসভা পরিচালনার দায়িত্ব পুরপ্রধানের। উনি নিজের ব্যর্থতা ঢাকতে তদন্ত করাতেই পারেন। অসুস্থতার কারণে পুরপ্রধানকে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব পদত্যাগ করতে বললেও তিনি করেননি।’’ তবে মলয় বলছেন, ‘‘দল বিকল্প পুরপ্রধানের নাম চাইলেও কেউ দিতে পারেননি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement