পরীক্ষার উত্তরপত্রে গরমিল থাকার অভিযোগ। — ফাইল চিত্র।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে গত বুধবার বিভিন্ন স্কুলে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে শিক্ষক-শিক্ষিকা হিসেবে কর্মরত ৯০৭ জনের নামের তালিকা প্রকাশ করেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন। এঁদের পরীক্ষার উত্তরপত্রে গরমিল রয়েছে বলে অভিযোগ। এই তালিকায় একাধিক তৃণমূল নেত্রীর নাম রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে ইতিমধ্যেই। এ বার বাগদার এক তৃণমূল নেত্রীর মেয়ের নামও তালিকায় রয়েছে বলে অভিযোগ উঠল। ওই নেত্রী প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান এবং পঞ্চায়েত সমিতির বিদায়ী কর্মাধ্যক্ষ। এ বারও পঞ্চায়েত সমিতিতে দাঁড়িয়ে জিতেছেন তিনি। তালিকায় নাম থাকা ওই তরুণীর স্বামী নিয়োগ দুর্নীতিতে সিবিআইয়ের হাতে ধৃত বাগদার চন্দন মণ্ডলের ঘনিষ্ঠ বলে অভিযোগ।
এই ঘটনায় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। বাগদার প্রাক্তন বিধায়ক তথা বিজেপি নেতা দুলাল বরের অভিযোগ, “ওই তরুণীর স্বামী চন্দন মণ্ডলের খুবই ঘনিষ্ঠ ছিলেন। চন্দনের কারসাজিতেই এঁদের চাকরি হয়েছিল। ওই তরুণী-সহ চন্দনের এলাকার বাসিন্দা তিন জনের নিয়োগে গরমিল ধরা পড়েছে। প্রাক্তন প্রধানের মেয়ের স্বামী চন্দনের হয়ে চাকরি প্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা তুলতেন। এটা সকলেই জানেন। চন্দন জেলে থাকলেও, তাঁর হয়ে যাঁরা এলাকায় টাকা তুলেছেন, তাঁরা বহাল তবিয়তে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। নিয়োগ দুর্নীতির টাকায় তাঁরা ফুলেফেঁপে উঠেছেন। সকলকে গ্রেফতার করে জেলে ঢোকানো হোক।”
ওই তৃণমূল নেত্রী অবশ্য বলেন, “তালিকায় আমার মেয়ের নাম থাকা নিয়ে আমি কিছু জানি না। তালিকায় বাবার নাম, ঠিকানা কিছু লেখা নেই। ওটা আমার মেয়ে নয়। অন্য কেউ হবে।” তিনি জানান, তাঁর মেয়ে বনগাঁ ব্লকের একটি স্কুলের শিক্ষিকা। নিজের শিক্ষাগত যোগ্যতায় মেয়ে চাকরি পেয়েছিল বলেও দাবি করেন তিনি।
বনগাঁ ব্লকের গাঁড়াপোতা পঞ্চায়েত এলাকার ওই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বলেন, “ওই শিক্ষিকা ২০২১ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি আমাদের স্কুলে যোগদান করেন। তার আগে অন্য স্কুলে ছিলেন। যখন আমাদের স্কুলে যোগদান করেছিলেন, তখন তাঁর রেকমেন্ডেশন লেটারে যে রোল নম্বর ছিল, আর এসএসসি যে তালিকা প্রকাশ করেছে তাতে থাকা রোল নম্বর একই। সেই সূত্রে বলা যেতে পারে, তালিকায় থাকা নাম ওই শিক্ষিকারই।” যেমন নির্দেশ আসবে, সেই মতো পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে বলে জানান তিনি।
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৮ জুন ওই শিক্ষিকা শেষ বার স্কুলে এসেছিলেন। পরে পঞ্চায়েত ভোটের কারণে স্কুল বন্ধ হয়ে যায়। স্কুলে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকায় এখনও পঠনপাঠন শুরু করা যায়নি। ফলে ওই শিক্ষিকার এখন স্কুলে আসার প্রশ্ন নেই।
নিয়োগ গরমিল তালিকায় দলের নেত্রীর মেয়ের নাম থাকা নিয়ে তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস বলেন, “আইন আইনের পথে চলবে। কেউ বেআইনি কিছু করে থাকলে, দল তাঁর পাশে থাকবে না।”