দুর্ঘটনা এড়াতে এ বার ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে বসছে স্পিড ব্রেকার।
সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ব্যস্ত শিল্পাঞ্চলের চৌমাথাগুলি। রয়েছে স্বয়ংক্রিয় সিগন্যাল, ট্রাফিক পুলিশের নজরদারি। কিন্তু তারপরেও দুর্ঘটনা অব্যাহত। সিগন্যাল সবুজ হতেই হুড়মুড়িয়ে চলছে গাড়ি। কে কার আগে যাবে তার প্রতিযোগিতা ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের চৌমাথাগুলিতে। সে কারণেই দুর্ঘটনা বাড়ছে বলে অভিযোগ।
ব্যারাকপুর-বারাসত রোড ও কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ের সংযোগকারী চৌমাথা, সোদপুর মুড়াগাছায় সোদপুর মধ্যমগ্রাম রোড ও কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ের সংযোগকারী চৌমাথার মতো ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে ১০টি ব্যস্ততম চৌমাথাকে চিহ্নিত করেছে পুলিশ। এগুলিতে স্পিড ব্রেকার লাগানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। মাত্রাতিরিক্ত দুর্ঘটনার কারণেই এক্সপ্রেসওয়ে বা রাজ্য সড়কে স্পিড ব্রেকার বসানোর কথা ভাবতে হচ্ছে বলে ব্যারাকপুর কমিশনারেটের পুলিশ কর্তারা জানিয়েছেন।
কিন্তু স্পিড ব্রেকার বসালে কি সেটাও মানবেন দুরন্ত গতিতে চলা গাড়ির চালকেরা?
ব্যারাকপুরের ডিসি ট্রাফিক কোটেশ্বর রাও বলেন, ‘‘সম দূরত্বে রিফ্লেক্টর লাগানো কিছু স্পিড ব্রেকার এই চৌমাথাগুলিতে থাকলে কুয়াশা বা ভারী বৃষ্টিতেও দূর থেকে বুঝতে পারবেন গাড়ির চালকেরা। তাতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা কমবে।’’
কোনও সিগন্যাল না মানায় এবং গতি না কমিয়ে গাড়ি চালানোর জন্য গত মঙ্গলবারই ব্যারাকপুরের ওয়্যারলেস মোড়ে রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ ট্রাক ও বাসের মধ্যে ধাক্কা লাগে। বাসের যাত্রীরা সামান্য আহত হন। তবে ট্রাকের চালক-খালাসিকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ব্যারাকপুর বিএন বসু মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তারও দিন কয়েক আগে কাঁচরাপাড়ার কাঁপা মোড়ে দু’টি ট্রাকের ধাক্কায় মৃত্যু হয় দু’জনের। একটি ট্রাক জাগুলির দিক থেকে ব্যারাকপুরের দিকে আসছিল। অন্যটি কল্যাণীর দিকে যাচ্ছিল। এ ক্ষেত্রে দু’টি ট্রাকের চালকের কেউই গতি কমাননি বলে অভিযোগ।
এ ধরনের দুর্ঘটনাগুলির বেশিরভাগই বেশি রাতে ঘটে। এমনিতে সকাল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ট্রাফিক পুলিশ থাকে গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলিতে। অনেক সময়ে যান্ত্রিক ত্রুটির জন্য সিগন্যালে সমস্যা হলেও ব্যাটারি চালিত এলইডি লাইটের সিগন্যাল ব্যবস্থা দিয়ে যানজট সামলান পুলিশ কর্মীরা। কিন্তু রাত ১০টার পরেই কার্যত নিয়ম কানুনের তোয়াক্কা না করে গাড়ি চলাচল শুরু হয় শহরের মধ্যে ও এক্সপ্রেসওয়েতে।
পুলিশের এক কর্তা জানান, রাতের দুর্ঘটনাগুলির একটা বড় কারণ হল, সারা রাত যান নিয়ন্ত্রণে ডিউটি করার জন্য পর্যাপ্ত ট্রাফিক পুলিশ থাকে না।
পানশালা ও ধাবাগুলিতে নেশা করে লোকজন গাড়ির স্টিয়ারিং ধরার পরে আর মিটারের কাঁটার দিকে কারও চোখ থাকে না। এ ভাবেই বাড়ে দুর্ঘটনার আশঙ্কা।