কাজিপাড়ায় মোতায়েন করা রয়েছে আধাসেনা। —নিজস্ব চিত্র।
বারাসতের কাজিপাড়ার বাসিন্দা, ১১ বছরের বালক ফারদিন নবিকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে। শুক্রবার ওই বালকের দেহের ময়না তদন্তের পরে সেটির প্রাথমিক রিপোর্ট থেকে এমনটাই জানা গিয়েছে বলে দাবি করল বারাসত পুলিশ জেলা। পুলিশ সুপার প্রতীক্ষা ঝারখরিয়া জানান, কে বা কারা ওই ঘটনা ঘটিয়েছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ নতুন করে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যে পরিত্যক্ত-প্রায় বাড়ি থেকে ফারদিনের দেহ উদ্ধার করা হয়েছিল, সেখানকার ভাড়াটেদের দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। আটক করা হয়েছে দুই মহিলাকে। ওই ভাড়াটেদের বিরুদ্ধেই ফারদিনকে খুনের অভিযোগ তুলেছে তার পরিবার।
গত রবিবার দুপুরে খেলাধুলোর পরে বাড়ি ফিরে পোশাক বদলে ফারদিন বেরিয়ে গিয়েছিল। তার পরে আর সে ফেরেনি। বৃহস্পতিবার বাড়ির পাশে একটি পরিত্যক্ত-প্রায় বাড়ির শৌচাগার থেকে ফারদিনের ঝুলন্ত দেহ মেলে। মৃতের পরিজনেরা অভিযোগ করেছিলেন, তাঁদের বাড়ির ছেলেকে খুন করে দেহ ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। কেটে নেওয়া হয়েছে তার কিডনি, উপড়ে নেওয়া হয়েছে চোখ। যদিও পুলিশ সুপার সেই অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছেন, ময়না তদন্তে তেমন কিছুই পাওয়া যায়নি। আজ, শনিবার ঘটনাস্থলে যাবে ফরেন্সিক দল।
পুলিশ জানায়, বালকের দেহে পচন ধরে গিয়েছিল। যে কারণে সুরতহালেও তেমন কিছু ধরা পড়েনি। ফলে, কী ভাবে তার মৃত্যু হয়েছে, তা জানতে ময়না তদন্তের রিপোর্ট পাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে।
বারাসত পুলিশ জেলা সূত্রের খবর, বালকের খুনের রহস্যের কিনারা করতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে একটি বিশেষ দল গড়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। রুজু করা হয়েছে খুনের মামলা। তদন্তকারীরা জানান, এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গিয়েছে, বালকটি বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে। তবে, এর পরবর্তী গতিবিধি দেখা যায়নি। পুলিশ সুপার জানান, আশপাশের এলাকার আরও সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পরীক্ষা করা হচ্ছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, যাঁদের আটক করা হয়েছে, তাঁদের থেকে এখনও তেমন কোনও তথ্য মেলেনি। যে কারণে ঘটনার পিছনে অন্য কারও হাত থাকার আশঙ্কাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না তদন্তকারীরা। এক তদন্তকারীর কথায়, ‘‘বালকটির দেহ পাওয়া গিয়েছে প্রায় তার পাশের বাড়িতে। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, যা ঘটেছে, তা এলাকার মধ্যেই ঘটেছে।’’
বৃহস্পতিবার ওই বালকের দেহ উদ্ধারের পরে কাজিপাড়া অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে।পুলিশের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় লোকজন। তাদের লক্ষ্য করে ইটও ছোড়া হয়। রাস্তা অবরোধ করা হয় অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে। শুক্রবারও এলাকা থমথমে ছিল। এ দিন সেখানে পুলিশের সঙ্গে আধাসেনা মোতায়েন করা হয়েছে।